অ্যানিমেলের মতো ‘অসুস্থ সিনেমা’ সেন্সর পেলেও আটকে আছে কাঠগোলাপ?
বিশেষ ধরনের অসুস্থতা নিয়ে নির্মিত সাজ্জাদ খানের ‘কাঠগোলাপ’ কয়েক মাস ধরে আটকে আছে সেন্সর বোর্ডে। অন্যদিকে ৭ দিনের নোটিসে বলিউডের ‘পুরুষতান্ত্রিক’ সিনেমা ‘অ্যানিমেল’ সেন্সর পেয়ে দেশের অর্ধশত হলে প্রদর্শিত হচ্ছে।
‘কাঠগোলাপ’-এর আটকে থাকা নিয়ে এর আগেও খবর প্রকাশ হয়েছে। এবার ভারতীয় সিনেমার প্রেক্ষাপটে প্রতিবাদে মুখ খুললেন প্রশংসিত চিত্রনাট্যকার আসাদ জামান।
ফেসবুকে তিনি লেখেন, “কাঠগোলাপ সিনেমাটি যাতে সেন্সর না পায় তার জন্য সেন্সরবোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান যা যা করার দরকার তার সব ই করছেন, স্বউদ্যোগে তিনি এমন সব পন্থা অবলম্বন করছেন যা এক কথায় অবিশ্বাস্য। সিনেমাটির প্রযোজক ব্যক্তিগতভাবে এই সিনেমার স্বপক্ষে থিসিস পেপার, পৃথিবীর নানান ভাষায় শত শত সিনেমা, সাহিত্যের উদাহরণ এমনকি বঙ্গবন্ধু হাসপাতালের একজন ডার্মাটোলিজস্টের অফিসিয়াল বক্তব্য উপস্থাপন করলেও তিনি সেন্সর না দেয়ার অবস্থানে অটল, কারণ উনি এই সিনেমাটি বুঝতেছেন না, দেশের সমাজের ক্ষতি হবে কিনা তাই নিয়ে ওনার গভীর উদ্বেগ, যদিও সারাবিশ্বে ৪০ বছর ধরে অ্যাসেক্সুয়ালিটি একটি মানসিক শারিরিক অসুস্থতা হিসাবে স্বীকৃত, ইন্টারনেটে সার্চ করলেই এই টপিক্সে হাজারো প্রমাণ পাওয়া যায়, কিন্তু উনি তা দেখবেন না, প্রায় তিন মাস আগে সেন্সরবোর্ডের প্রতিটি সদস্য সিনেমাটি সেন্সর প্রদানে সদয় সন্মতি দিলেও এই মহান এনিমেলের মত জঘন্য মানসিক অসুস্থ সিনেমাকে ৭ দিনের নোটিশে সেন্সর দিলেও কাঠগোলাপকে দিবেন না।”
সম্প্রতি ‘কাঠগোলাপ’ প্রযোজক ফরমান আলী বলেন, আমরা ছবিটি সেন্সর বোর্ডে জমা দিই ২১ সেপ্টেম্বর। ২৪ সেপ্টেম্বর বোর্ড ছবিটি দেখে। বোর্ড সদস্য খোরশেদ আলম খসরু আমাকে ফোন করে জানান, আপনাদের ছবি তো অনেক সুন্দর হয়েছে, ছবি আনকাট পাশ। দুই একদিনের মধ্যে সার্টিফিকেট পেয়ে যাবেন। এরপর যখন সার্টিফিকেট পেতে দেরি হচ্ছিল তখন ভাইস চেয়ারম্যানের সঙ্গে আমরা দুইবার সরাসরি দেখা করি। ছবির বিষয়বস্তু ব্যাখা করি। উনি মনযোগ সহকারে আমাদের কথা শোনেন। উনি বলেন, আপনারা মানুষের জীবনের যে সংকট বা রোগের বিষয়টা ছবিতে এনেছেন তা আদৌ পৃথিবীতে আছে কিনা তা কোনো বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের অভিমত জমা দেন। তার কথা অনুযায়ী আমরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের চর্ম ও যৌনরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. আলাউদ্দিন খানের বক্তব্য পেশ করি। তাও প্রায় মাস খানেক হয়ে গেছে। আমাদের কিছুই জানাচ্ছেন না।
কাঠগোলাপের কাহিনী, সংলাপ ও চিত্রনাট্য লিখেছেন অপূর্ণ রুবেল। এর বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন কেয়া, সুজন হাবিব, মেঘলা মুক্তা, দিলরুবা দোয়েল, জামশেদ শামীম।
এদিকে ‘অ্যানিমেল’-এর নতুন একটি দেশী ছবি কোনঠাসা হয়ে পড়েছে বলে খবর এসেছে একাধিক গণমাধ্যমে। সেখান থেকে জানা যায়, হিন্দি ছবিটির দাফটে ঢাকায় কোনো হলই পায়নি দেশি ‘মৃত্যুঞ্জয়ী’।
মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর প্রেক্ষাপট নিয়ে তৈরি সিনেমা ‘মৃত্যুঞ্জয়ী’। ছবিটি পরিচালনা করেছেন উজ্জ্বল কুমার। যদিও এর কাহিনি, সংলাপ ও চিত্রনাট্য লিখেছেন প্রয়াত ড. সাজেদুল আউয়াল। এ ছবিটি মুক্তি পেয়েছে ঢাকার বাইরে ১৫ হলে।