আরশাদ আদনানের প্রশ্নের মাঝেই ছাড়পত্র পেল ‘তুফান’
রায়হান রাফী পরিচালিত ও শাকিব খান অভিনীত ‘তুফান’-এর অর্থায়ন নিয়ে বেশকিছু প্রশ্ন তুলেছিলেন প্রযোজক আরশাদ আদনান। এর মাঝে গুজবও ছড়িয়ে পড়ে অতিচর্চিত সিনেমাটি জটিলতায় পড়তে যাচ্ছে কিনা! তার মাঝেই মিলে গেল সেন্সর সনদ। অবাক করা বিষয় হলো, সেই সনদও মিলেছে বাংলাদেশি প্রযোজনার সিনেমা হিসেবে!
‘তুফান’-এ আরো আছেন চঞ্চল চৌধুরী, মিমি চক্রবর্তী, নাবিলাসহ আরও অনেকে। সার্টিফিকেট অনুযায়ী ছবিটির অনুমোদিত দৈর্ঘ্য ২ ঘণ্টা ২৫ মিনিট ২৫ সেকেন্ড।
আজ বুধবার সেন্সর বোর্ড কর্তৃপক্ষ থেকে সেটি পেয়েছে ছবির প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান। এর মধ্য দিয়ে ‘তুফান’ ছবিটির মুক্তিতে আর কোনো বাধা রইল না।
প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান থেকে জানানো হয়েছে, বহুল প্রতীক্ষিত ও দর্শক চাহিদার তুঙ্গে থাকা ‘তুফান’ চলচ্চিত্রটি সেন্সর বোর্ডের প্রদর্শনীর জন্য সম্প্রতি সম্পাদনার টেবিল পেরিয়ে জমা হয়। পূর্বনির্ধারিত সময় অনুযায়ী গতকাল মঙ্গলবার সেন্সর বোর্ডের সদস্যরা ছবিটি দেখে বিনা কর্তনে ছাড়পত্র প্রদানে সম্মত হন। এরপর আজ দুপুর সাড়ে ১২টায় পাওয়া গেছে সেন্সর সনদ।
‘তুফান’ চলচ্চিত্রের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান আলফা আই স্টুডিওস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার শাকিল কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘তুফান সিনেমা নিয়ে যে উন্মাদনা সাধারণ দর্শক, হলমালিকদের মধ্যে—এটা আশার সঞ্চার করে। আমি ধন্যবাদ জানতে চাই সেন্সর বোর্ড কর্তৃপক্ষকে, সেই সঙ্গে বোর্ডের সদস্যদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। সার্বিক সহযোগিতা ও আন্তরিকতার জন্য ধন্যবাদ জানাতে চাই তথ্য মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বিএফডিসিসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে। কৃতজ্ঞতা ডিজিটাল পার্টনার চরকি ও ইন্টারন্যাশনাল ডিস্ট্রিবিউটর এসভিএফর প্রতি।’
এরই মধ্যে সম্প্রতি চলচ্চিত্র সংগঠনগুলোর এক অনুষ্ঠানে মাত্র চারটি সিনেমায় লগ্নি করে প্রভাবশালী বনে যাওয়া প্রযোজক আরশাদ আদনান ‘তুফান’ দিয়ে একগুচ্ছ প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেন, ‘কোরবানির ঈদে ছবির আধিক্য নাই। একটাই ছবি আসছে। সে ছবির কাজ কীভাবে হইছে আমরা জানি। সে ছবি ইন্ডিয়ার ফ্যাইন্যান্স, ইন্ডিয়ার কাজ। সে ছবি কত টাকা খরচ করছে আমরা যেটা সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখছি ৮ কোটি ১০ কোটি টাকা। আমি একটা যদি কোশ্চেন করি ৮ কোটি-১০ কোটি টাকা আপনি ওখানে নিছেন কেমনে? আপনি কি এনবিআরের ছাড়পত্র নিছেন? আপনি কত টাকার ছাড়পত্র নিছেন? আপনি কত টাকার ছাড়পত্র নিছেন আপনি দেখান আমাকে। আমি একজন সাধারণ পরিচালক আমিও দেখতে যাই এভাবে টাকা নেওয়া সম্ভব। আমারও তো রাস্তা দরকার, আমারও তো ইন্ডিয়ায় শুটিং করার দরকার। আমারও শেখার আছে। আমি তাদের কাছে শিখতে চাই, কীভাবে তারা ৬০ লাখ, ৭০ লাখ না ৮০ লাখ টাকা বাংলাদেশের এনবিআরকে দেখায়ে ওখানে ৮ কোটি-১০ কোটি টাকার ছবি বানালো এ শুভংকরের চালটা কী আলাদিনের চেরাগটা কী করে পাইলো আমি তো বুঝি না। আমার তো এ রাস্তা জানা নাই। আমি তো এমেরিকায় শুটিং করছি বৈধ টাকা নিয়ে সমস্ত কিছু ক্লিয়ার করে কাজ করছি। বিদেশে কাজ করার নিয়ম-নীতি আছে।’
একইসঙ্গে বাংলাদেশে কলকাতার প্রযোজনা সংস্থার প্রবেশ নিয়ে সতর্ক করে দেন আরশাদ।
এর আগে ‘কপি’ সিনেমা বিষয়ে তার ফেসবুক পোস্ট নিয়ে বেশ তোলপাড় হয়। এরপর সম্প্রতি জানালেন, পূর্বঘোষিত ‘সাহেব’ সিনেমায় শাকিব খান নয় থাকবেন শরিফুল রাজ।
এদিকে ভারতের এসভিএফ যুক্ত থাকায় ছবিটিকে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ প্রযোজনার হিসেবে ভাবা হয়েছে। কিন্তু সেন্সর বোর্ড বলছে ভিন্ন কথা। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান খালেদা বেগম জানালেন, তারা ‘তুফান’কে দেশি ছবি হিসেবে ছাড়পত্র দিয়েছেন। তাই যৌথ প্রযোজনার ছবির জন্য প্রয়োজনীয় কাগজ লাগার কোনো কারণ নেই। আর বিদেশে শুটিংয়ের জন্য প্রয়োজনীয় অনুমতি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান আগেই নিয়েছিল। সে কাগজও তারা সেন্সরের সময় জমা দিয়েছেন। খবর প্রথম আলো, মাইটিভি ও সারাবাংলা