জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (১৯৮১-১৯৮৩)
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের জন্য ১৯৮১ সাল একটি আলোচিত বছর। এই বছর তথ্য মন্ত্রণালয়ে জমাকৃত কোনো চলচ্চিত্র জুরি বোর্ডের কাছে যোগ্য বিবেচিত না হওয়ায় জাতীয় পুরস্কার বাতিল করা হয়।
১৯৮২ : বাংলাদেশ তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক ৭ম বারের মতো জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের আয়োজন করা হয়। এই বছর নতুন বিভাগ হিসেবে সেরা স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র শাখায় পুরস্কার প্রদানের রীতি চালু হয়। তবে জুরি বোর্ড সেরা চলচ্চিত্র হিসেবে কোনো চলচ্চিত্রকে যোগ্য মনে করেনি। এই বছর সেরা চলচ্চিত্র বাদে ১৬টি শাখায় পুরস্কার প্রদান করা হয়।
১. সেরা স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র- ল্যাথরিজম
২. সেরা পরিচালক- মহিউদ্দিন (বড় ভালো লোক ছিল)
৩. সেরা চিত্রনাট্যকার- আলমগীর কবির (মোহনা)
৪. সেরা সংলাপ রচয়িতা- সৈয়দ শামসুল হক (বড় ভালো লোক ছিল)
৫. সেরা সংগীত পরিচালক- আলম খান (বড় ভালো লোক ছিল)
৬. সেরা অভিনেতা- রাজ্জাক (বড় ভালো লোক ছিল)
৭. সেরা অভিনেত্রী- শাবানা (দুই পয়সার আলতা)
৮. সেরা সহ অভিনেতা- প্রবীর মিত্র (বড় ভালো লোক ছিল)
৯. সেরা সহ অভিনেত্রী- আয়শা আখতার (রজনীগন্ধা)
১০. সেরা শিশু শিল্পী- বিন্দি (লাল কাজল)
১১. সেরা গীতিকার- মাসুদ করিম (দুই পয়সার আলতা)
১২. সেরা গায়ক-এন্ড্রু কিশোর (বড় ভালো লোক ছিল)
১৩. সেরা গায়িকা- মিতালী মুখার্জি (দুই পয়সার আলতা)
১৪. সেরা চিত্রগ্রাহক (সাদাকালো)- রফিকুল বারী চৌধুরী (দুই পয়সার আলতা)
১৫. সেরা চিত্রগ্রাহক (রঙ্গিন)- শফিকুল ইসলাম স্বপন (নালিশ)
১৬. সেরা সম্পাদক- আওকাত হোসেন (দুই পয়সার আলতা)
এই বছর মহিউদ্দিন পরিচালিত ‘বড় ভালো লোক ছিল’ সর্বোচ্চ ৬টি শাখায় পুরস্কার লাভ করে। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের জনপ্রিয় উপন্যাস অবলম্বনে চাষী নজরুল ইসলামের ‘দেবদাস’ প্রাথমিকভাবে সেরা চলচ্চিত্র ও অভিনেতাসহ বেশ কয়েকটি শাখায় মনোনীত হয়। কিন্তু পরবর্তীতে জুরি বোর্ড রিমেকের অজুহাতে এই চলচ্চিত্রের সকল মনোনয়ন বাতিল করেন। সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক নিজের প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রত্যাখান করেন। প্রবীণ অভিনেত্রী আয়শা আখতার প্রথম ও শেষ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। জন্মসূত্রে বাংলাদেশি পরবর্তীতে ভারতীয় নাগরিকত্ব নেওয়া জনপ্রিয় শিল্পী মিতালী মুখার্জি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কার অর্জন করেন।
১৯৮৩ : এই বছর মাত্র ১০ টি শাখায় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার দেয়া হয়। সেরা গায়ক, গায়িকা, শিশুশিল্পীসহ বেশ কয়েকটি শাখায় পুরস্কার দেওয়া হয়নি।
১. সেরা চলচ্চিত্র- পুরস্কার
২. সেরা পরিচালক- কামাল আহমেদ (লালুভুলু)
৩. সেরা চিত্রনাট্যকার- সৈয়দ শামসুল হক (পুরস্কার)
৪. সেরা সংলাপ রচয়িতা- সৈয়দ শামসুল হক (পুরস্কার)
৫. সেরা অভিনেতা- সোহেল (লালু ভুলু)
৬. সেরা অভিনেত্রী- শাবানা (নাজমা)
৭. সেরা সহ অভিনেতা- শাকিল (পুরস্কার)
৮. সেরা সহ অভিনেত্রী- সুবর্ণা মুস্তফা (নতুন বউ)
৯. সেরা চিত্রগ্রাহক ( সাদাকালো)- আনোয়ার হোসেন (পুরস্কার)
১০. সেরা চিত্রগ্রাহক (রঙ্গিন)- অরুন রায় (জনি)
বাংলাদেশে কিশোর অপরাধ নিয়ে নির্মিত প্রথম চলচ্চিত্র সিবি জামানের ‘পুরস্কার’ সর্বোচ্চ ৫টি শাখায় পুরস্কৃত হয়। জনপ্রিয় টিভি অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তফা নিজেকে প্রধান চরিত্র দাবি করে সহ অভিনেত্রীর পুরস্কার প্রত্যাখান করেন। এটি ছিল তার প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। ‘পুরস্কার’ সিনেমার জন্য শিশুশিল্পী হিসেবে সুমন সাহা আবারো পুরস্কৃত না হওয়ায় জুরি বোর্ড বেশ সমালোচিত হয়।