
আফসানা মিমির কণ্ঠে ‘ম্যাডাম ফুলি’ সিনেমায় সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার জেতেন সিমলা
ঋতুপর্ণ ঘোষের ‘বাড়িওয়ালি’ সিনেমায় অভিনয় করে সেরা অভিনেত্রী বিভাগে ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছিলেন কিরণ খের। এ নিয়ে কম বিতর্ক হয়নি। কারণ নিয়মানুসারে পুরস্কারটির অংশীদার ছিলেন ডাবিং শিল্পী রিতা কৈরালও। অবশ্য বাংলাদেশে এমন কোনো নিয়ম নেই। ‘ম্যাডাম ফুলি’ প্রসঙ্গে এ তথ্যটা দেয়া হলো। সিমলার অভিষেক সিনেমায় তার চরিত্রের ডাবিং করেছিলেন আফসানা মিমি। সম্প্রতি ডাবিংয়ের স্মৃতিসহ মজার কিছু তথ্য জানালেন অভিনেত্রী।

শহিদুল ইসলাম খোকনের ‘ম্যাডাম ফুলি’ সিনেমায় সিমলার ডাবিং করেছিলেন তখন টিভি পর্দার জনপ্রিয় মুখ আফসানা মিমি। তিনি বলেন, ‘যেবার ‘‘চিত্রা নদীর পাড়ে’’ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেল, সেবার ‘‘ম্যাডাম ফুলিও” তালিকায় ছিল। “চিত্রা নদীর পাড়ে”র জন্য আমি মনোনীত হয়েছিলাম, আর “ম্যাডাম ফুলি”র জন্য সিমলা মনোনয়ন পান। সেরা অভিনেত্রী ক্যাটাগরিতে পুরস্কার জিতেন সিমলা। মজার কথা হলো, সিমলার ডাবিংও আমারই করা ছিল।’
উল্লেখ্য যে ‘ম্যাডাম ফুলি’র দ্বিতীয় অংশ যেখানে সিমলা শহুরে ও অতি আধুনিক নারী চরিত্রে অভিনয় করেন ঐ অংশের কণ্ঠ দেন আফসানা মিমি। (সম্পাদনা)
ঈদুল আজহায় মুক্তি পেতে যাওয়া ‘উৎসব’ সিনেমায় অভিনয় করেছেন মিমি। তানিম নূরের পরিচালনায় এই সিনেমায় কাজ করেছেন বাংলাদেশের খ্যাতনামা একঝাঁক অভিনয়শিল্পী। সম্প্রতি ‘উৎসব’–এর নাম ঘোষণা ও শিল্পীদের পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয় সংবাদ সম্মেলনে। সেখানেই জীবনের অজানা অনেক কথা ভাগ করে নিয়েছেন মিমি।
তিনি জানান, কমার্শিয়াল সিনেমায় অভিনয় না করলেও নেপথ্যে ছিলেন—শাবনাজ, পপি, সিমলা, ঋতুপর্ণাসহ অনেকের ডাবিং করেছেন।
আফসানা মিমি টিভি ক্যামেরার সামনে জানান, জীবনে অনেক বাণিজ্যিক সিনেমার প্রস্তাব পেলেও শুধু আজিজুর রহমানের ‘দিল’ সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন তিনি। সিনেমাটির পর আরও অনেক কমার্শিয়াল সিনেমার প্রস্তাব পেতে থাকেন। কিন্তু নাচ-ফাইটিংয়ের মতো দক্ষতা না থাকায় তিনি কমার্শিয়াল সিনেমা থেকে নিজেকে বিরত রাখেন।
সেই সময়ে মোহাম্মদ হোসেনের পরিচালনায় ‘জনম জনম’ সিনেমায় শাবনাজের ডাবিংয়ের প্রস্তাব পান তিনি। এই থেকে শুরু, শাবনাজের বেশির ভাগ সিনেমায় কণ্ঠ ব্যবহার হয় আফসানা মিমির। তবে এ তথ্যে কিছুটা গড়মিল রয়েছে। অনেকে বলছেন, ‘জনম জনম’ নয় ‘আজকের হাঙ্গামা’ সিনেমায় প্রথম শাবনাজের হয়ে কণ্ঠ দেন আফসানা মিমি। কারণ তিনি জানিয়েছে, এ সিনেমায় আরো অভিনয় করেছেন দিতি।
মিমির কথায়, ‘নিজের কণ্ঠ নিয়ে আত্মবিশ্বাসী ছিলাম না আমি। বলা যায়, হোসেন ভাইয়ের উৎসাহে ডাবিং করি। কিন্তু দেখলাম, শাবনাজের চেহারা আর অভিনয়ের সঙ্গে আমার কণ্ঠ যেন মিলে যায়। এরপর দেখা যায়, একটা লম্বা সময় শাবনাজের কত সিনেমায় যে ডাবিং করেছি, তার হিসাব নেই। তবে এর মাধ্যমে আমি অনেক সমৃদ্ধ হয়েছি। কারণ, পুরো ইন্ডাস্ট্রির অনেক বাঘা বাঘা অভিনেতা ও পরিচালকের সঙ্গে আমার কাজ করার সুযোগ হয়েছে। যেমন একজনের কথা এখন বলতে ভীষণ ইচ্ছা করছে—রোজী সামাদ, ওনার মতো একজন মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে আমি যখন ডাবিং করছিলাম, তখন আমার মনে হচ্ছিল, “ও উনাকে আমি এইভাবে সিনেমায় দেখে বড় হয়েছি।” এ রকম অনেক অনেক মানুষ।’
আফসানা মিমি আরও বলেন, ‘শহিদুল ইসলাম খোকন, উনি তো অনেক নতুন নায়িকাকে নিয়ে কাজ করতেন। ওদের ডাবিং আমার করতে হতো। বা কলকাতা থেকে যখন কেউ আসত, ইন্দ্রানী হালদার বা ঋতুপর্ণাদেরটা করে দিতাম, পপির শুরুর দিকে সিনেমায়ও করেছি।’
‘উৎসব’-এ মুখ্য ভূমিকায় রয়েছেন জাহিদ হাসান। এ অভিনেতা প্রসঙ্গে মজার একটি স্মৃতি ভাগাভাগি করে নেন আফসানা মিমি। ছোটবেলায় সিরাজগঞ্জে তারা নাকি একই স্কুলে, একই ক্লাসে পড়েছিলেন। কিন্তু তাদের মধ্যে তখন আলাপ ছিল না।