![অনুদান পাওয়ার সাত বছর পর মুক্তি পাচ্ছে ‘আজব কারখানা’](https://i0.wp.com/bmdb.co/wp-content/uploads/2024/06/ajob_karkhana1_bmdb_image.jpg?resize=150%2C150&ssl=1)
খোকন-রুবেল : অপ্রতিদ্বন্দ্বী নির্মাতা-শিল্পী জুটি
বাংলাদেশের বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রে পরিচালক-নায়ক কম্বিনেশনে যে কয়েকটি ধারা ছিল তার মধ্যে অন্যতম সেরা শহীদুল ইসলাম খোকন ও রুবেল জুটি। নির্মাতা-শিল্পীর এমন অনবদ্য জুটি ঢালিউডে কমই এসেছে।
শহীদুল ইসলাম খোকন যে ধরনের ছবি নির্মাণ করতেন ছবিগুলো ছিল তাঁর নিজের চলচ্চিত্রকেন্দ্রিক ভাষাকে তুলে ধরার প্রয়াস। ছবিগুলোর মধ্যে অ্যাকশন, রোমান্টিক, ফ্যামিলি ড্রামা, কমেডি আছে। তবে মোটের উপর হিশাব কষলে তাঁর ছবিগুলোকে অ্যাকশনই বলতে হয়। রুবেল ছিল তাঁর ছবির সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য শিল্পী। খলনায়ক হিশাবে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ছিলেন হুমায়ুন ফরীদি। এই ত্রয়ের যোগফলে দেশীয় ব বাণিজ্যিক চলচ্চিত্র সমৃদ্ধি পেয়েছে। সামাজিক দায়বদ্ধতার যে ভাষায় প্রতিবাদী চলচ্চিত্র নির্মাণ করতেন কাজী হায়াৎ তার পাশাপাশি খোকনও ছিলেন প্রতিবাদী ভাষার পরিচালক।
খোকন-রুবেল কম্বিনেশনের ছবিগুলো – লড়াকু, বীরপুরুষ, উদ্ধার, বিষদাঁত, অকর্মা, বিপ্লব, উত্থান পতন, নরপিশাচ, সন্ত্রাস, টপ রংবাজ, অপহরণ, শত্রু ভয়ঙ্কর, সতর্ক শয়তান, ঘাতক, দুঃসাহস, বিশ্বপ্রেমিক, রাক্ষস, লম্পট, গৃহযুদ্ধ, চারিদিকে শত্রু, দিন মজুর, ভণ্ড, পাগলা ঘণ্টা, যোদ্ধা, মুখোশধারী, চাই ক্ষমতা।
রোমান্টিক ঘরানা বললে ‘বিশ্বপ্রেমিক’ ছবিটি সবার আগে আসবে। রোমান্টিকের ভেতরেও খোকন সাইকোপ্যাথ কিলিং-কে এনেছেন। রুবেল-মৌসুমীর চমৎকার রসায়ন ছবিটিকে অসাধারণ করেছে। কমেডি ছবির মধ্যে ‘অপহরণ, ভণ্ড’ এ দুটি অসাধারণ। ‘অপহরণ’ এগিয়ে থাকবে কারণ এর শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত নিখাদ কমেডি আছে। নায়ক, খলনায়ক এবং অন্যান্য সব চরিত্রেই কমেডি ছিল। অ্যাকশন ছবি বলতে গেলে বাকি সবগুলোই। ‘লড়াকু’ দিয়ে মার্শাল আর্টের যে ধারা শুরু হয়েছিল তার ধারাবাহিক ব্যবহার ছিল পরের ছবিগুলোতেও। ‘বীরপুরুষ, বিষদাঁত, অকর্মা, বিপ্লব, উত্থান পতন, টপ রংবাজ, ঘাতক, সতর্ক শয়তান, লম্পট, রাক্ষস, চারিদিকে শত্রু, শত্রু ভয়ঙ্কর, যোদ্ধা’ এগুলো টোটালি ফুল প্যাকেজ অ্যাকশন ছবি ছিল। মার্শাল আর্টের ইতিহাস, ঐতিহ্যের ক্লাসিক পরিবেশনা ছিল ‘বজ্রমুষ্টি’ ছবিতে এদিক থেকে এ ছবিটির বিশেষ গুরুত্ব আছে। ফ্যামিলি ড্রামায় ‘গৃহযুদ্ধ, দুঃসাহস, দিনমজুর’ এ ছবিগুলো উপভোগ্য। রুবেলকে নানা ধরনের ক্যারেক্টারাইজেশনে খোকন দেখিয়েছেন। এভাবে বিভিন্ন ধরনের ছবিতে খোকন-রুবেল কম্বিনেশন আছে।
খোকনের অসাধারণ পরিচালনার ছবিগুলোতে রুবেলের জনপ্রিয় কিছু গান –
রংচটা জিন্সের প্যান্ট পরা – উত্থান পতন
বুকে আছে মন – লড়াকু
শিখা আমার শিখা – বিশ্বপ্রেমিক
কত ভালোবাসি আমি তোমাকে – বিশ্বপ্রেমিক
ও সাথীরে আমারই জীবন শুধু তুমি – ভণ্ড
বুড়ো খোকার জন্মদিনে – সতর্ক শয়তান
আমি পথকে করেছি সাথী – পাগলা ঘণ্টা
আমি একশো বছর – পাগলা ঘণ্টা
যোদ্ধা আসবে – যোদ্ধা
খোকন-রুবেল নির্মাতা-শিল্পী জুটি অনুপ্রেরণা দেবে আগামী দিনের জন্য। তাঁদেরকে দেখে শেখা উচিত কিভাবে বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রের ভাষা ও পরিবেশনা করতে হয়। আর একটা খোকন-রুবেল আর আসবে না ঢালিউডে এ এক চরম সত্য।