
দর্শক কমা সত্ত্বেও জাজ মাল্টিমিডিয়ার কারণে মনিহারে ‘তাণ্ডব’
মাল্টিপ্লেক্সে তুমুল ঝড় তুললেও শাকিব খান অভিনীত সাম্প্রতিক কয়েকটি সিনেমার তুলনায় ব্যবসায়িক দিক থেকে সিঙ্গেল স্ক্রিনে পিছিয়ে রয়েছে ‘তাণ্ডব’। এর মাঝেই মুক্তির সপ্তাহখানেকের মধ্যে এইচডি প্রিন্ট পাইরেসি হয়ে পুরোপুরি ব্যবসায়িক ঝুঁকিতে ফেলে দিয়েছে রায়হান রাফী পরিচালিত সিনেমাটিকে। এর মাঝে জানা গেল, যশোর মনিহার হল ‘তাণ্ডব’-এর বদলে চলতি সপ্তাহে ঈদের অন্য সিনেমা নিয়ে আগ্রহী হলেও সার্ভার পরিষেবাদাতা জাজ মাল্টিমিডিয়ার কারণে তা সম্ভব হয়নি।

এমন দাবি পেছনে রয়েছে পাইরেসি সংক্রান্ত ঘটনা। পরপর দুই ঈদে ‘বরবাদ’ ও ‘তাণ্ডব’-এর এইচডি প্রিন্ট ফাঁস হওয়ার পর অনেকেই দাবি করেন, এর সঙ্গে বিতরণ প্রতিষ্ঠানগুলোর কেউ দায়ি। বিশেষ করে ডিসিপির সঙ্গে যুক্ত প্রতিষ্ঠানের নাম আসছে। এর আগে ‘বরবাদ’ ফাঁস হওয়ার পর সরাসরি অভিযোগ না এলেও জাজ মাল্টিমিডিয়ার পক্ষ নিয়ে অনেককেই কথা বলতে দেখা যায়। তাদের দাবি, জাজের সার্ভার থেকে পাইরেসি হয় না। এবারও একই ধরনের গুঞ্জন রয়েছে। সেই কারণে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে এক সময়ের বড় প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানটি।
কালের কণ্ঠের এক প্রতিবেদন অনুসারে, দেশের বৃহত্তম প্রেক্ষাগৃহ মণিহারে দর্শক হচ্ছে না বললেই চলে। হলটির বুকিং ম্যানেজার আলী আকবর সোহাগ বলেন, “আমরা ‘তাণ্ডব’ চালাচ্ছি। খুব খারাপ অবস্থা। ছবিটা পাইরেসি হয়ে গেছে তো। একেবারে ঝকঝকে প্রিন্ট ছড়িয়ে গেছে চারদিকে। এ কারণে দর্শক একেবারেই হচ্ছে না। শুধু আমাদের এখানে না, পুরো দেশে একই অবস্থা। আমরা তো খবরাখবর রাখি। আমরা ছবিটা নামিয়ে দিতাম। কিন্তু এ সপ্তাহে নতুন ছবি দিচ্ছে না সার্ভার কর্তৃপক্ষ [জাজ মাল্টিমিডিয়া]। কারণ পাইরেসির দায় কেউ কেউ জাজকে দিচ্ছে। কিন্তু তারা কেন এটা করবে? এটা তো তাদের ব্যবসা। পাইরেসি হলে তো নিজেদেরই ক্ষতি। এ জন্য এ সপ্তাহেও ‘তাণ্ডব’ চালাতে হচ্ছে আমাদের। আগামী সপ্তাহে ‘উৎসব’ চালাব। সঙ্গে আরো একটি ছবিও নেব, ওটার ব্যাপারে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি।”
এদিকে ঈদের তৃতীয় সপ্তাহে এসে তেজ কমে এসেছে ঈদের ছবিগুলোর। ‘তাণ্ডব’ ও ‘উৎসব’ বাদে বাকিগুলোর অবস্থা নাজুক। এর মধ্যে সর্বাধিক হল নিয়ে দাপট বজায় রাখছেন শাকিব খান। স্টার সিনেপ্লেক্সে প্রতিদিন ৪০টি শো চলছে ছবিটির। যদিও গত সপ্তাহে অঙ্কটা ছিল ৪৬। অর্থাৎ কমেছে। শো কমেছে লায়ন সিনেমাস ও ব্লকবাস্টার সিনেমাসেও। এ দুটি মাল্টিপ্লেক্সে গত সপ্তাহে ‘তাণ্ডব’-এর শো ছিল যথাক্রমে ৯টি ও ১৩টি। এ সপ্তাহে তা কমে দাঁড়িয়েছে ছয়টি ও আটটিতে।
অন্যদিকে আগের দুই সপ্তাহের তুলনায় এগিয়ে গেছে তানিম নূরের ‘উৎসব’। সিনেমাটির শো বেড়েছে হুহু করে। গত সপ্তাহে সিনেপ্লেক্সে ছবিটির শো ছিল ১৩টি; এ সপ্তাহে বেড়ে হয়েছে ১৯টি। ব্লকবাস্টার সিনেমাসে চলছে প্রতিদিন চার শো এবং লায়ন সিনেমাসে দুটি।
স্টার সিনেপ্লেক্সের জ্যেষ্ঠ বিপণন কর্মকর্তা মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, “দ্বিতীয় সপ্তাহ বেশ ভালো গেছে। তৃতীয় সপ্তাহের শুরুটাও ভালো। দর্শক আসছেন, ছবি এনজয় করছেন। বিশেষ করে ‘তাণ্ডব’ ও ‘উৎসব’ ভালো যাচ্ছে। বাকি ছবিগুলোর দর্শক হচ্ছে না তেমন। তবু কিছু শো রেখেছি। ‘উৎসব’-এর দর্শক প্রতিনিয়ত বাড়ছে। আমাদের প্রত্যাশা এ ধারা আরো কিছুদিন থাকবে। অন্তত চতুর্থ ও পঞ্চম সপ্তাহ পর্যন্ত ছবি দুটির চাহিদা ভালো থাকবে।”