Select Page

বায়োপিকের জন্য চুক্তিবদ্ধ হলেন ক্রিকেটার রকিবুল হাসান

বায়োপিকের জন্য চুক্তিবদ্ধ হলেন ক্রিকেটার রকিবুল হাসান

দেশে প্রথমবার কোনো ক্রিকেটার বায়োপিকের জন্য চুক্তিবদ্ধ হলেন। বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা রকিবু হাসানের জীবনী তুলে ধরা হবে সিনেমার পর্দায়। খেলার পাশাপাশি বীরত্ব ও ব্যক্তিগত জীবন উঠে আসবে।

সিনেমাটির কাহিনি ও চিত্রনাট্য তৈরি করছেন ক্রীড়া সাংবাদিক দেবব্রত মুখোপাধ্যায়। ছবিটি নির্মাণের পক্ষে একটি চুক্তিস্বাক্ষর হয়েছে রবিবার (১২ জুলাই)। দেবব্রত মুখোপাধ্যায় ছাড়াও রকিবুল হাসানের বাসায় এ সময় উপস্থিত ছিলেন ছবিটির নির্মাতা বান্টি আফজাল এবং প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান হাফ-প্যান্ট সিনেমা ফ্যাক্টরির নির্বাহী প্রযোজক রুমানা শারমীন স্বতি।

বাংলা ট্রিবিউনকে দেবব্রত জানান, সিনেমাটিতে উঠে আসবে ক্রিকেটার ও মুক্তিযোদ্ধা রকিবুল হাসানের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। রকিবুলকে বেছে নেওয়া প্রসঙ্গে বলেন, ‌‘আমরা আসলে শুরুটা করতে চেয়েছি। আর যেকোনও শুরুটা গুরুত্বপূর্ণ। ফলে বেছে নিয়েছি ক্রীড়াঙ্গনের এমন একজনকে, যিনি ক্রিকেটার পরিচয়কে ছাপিয়ে মানচিত্রের বিচারে বড় একজন বীর। তিনি শুধু মাঠেই যুদ্ধটা করেছেন, তা নয়। তার যুদ্ধটা ছিল পাকবাহিনীর মুখোমুখি দাঁড়িয়েও। ফলে এমন একজন জাতীয় বীরকে নিয়ে শুরুটা করতে চেয়েছি। যার ধারাবাহিকতা অন্যরা নিশ্চয়ই পালন করবেন।’

এই ছবিতে উঠে আসবে রকিবুল হাসানের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ তিনটি বছর। ১৯৬৯ থেকে ১৯৭১ সাল। যে সময়টাতে তিনি ব্যাটের মধ্যে বাংলাদেশে পতাকা বেঁধে মাঠে নেমেছেন ক্রিকেটার হিসেবে। একই সময়ে তিনি মুক্তিযুদ্ধ করেছেন রাইফেল হাতে। মূলত এই দুটি বিষয় উঠে আসবে চলচ্চিত্রে।

আরও বলেন, ‘প্রেম তো প্রাসঙ্গিকভাবেই চলে আসবে। তিন বছরের গল্প তুলে ধরছি। সেখানে প্রেম, বিরহ, যুদ্ধ- সবই থাকছে। সেভাবেই এগুচ্ছি আমরা।’

দেবব্রত মুখোপাধ্যায়, স্বতি, রকিবুল হাসান ও বান্টি আফজাল

নির্মাতা বান্টি আফজালের আগ্রহ রকিবুল হাসানের চরিত্রে নতুন কাউকে নিতে। তবেই নাকি চরিত্রটি সত্যিকারভাবে ফুটিয়ে তোলা সম্ভব। আর এই ছবির শুটিং মাঠে গড়াচ্ছে আসছে বছরের প্রথম দিকে। তার আগে কাস্টিং ও পাণ্ডুলিপি তৈরির কাজ চলছে দ্রুতলয়ে।

এদিকে রকিবুল হাসান বলেন, ‘দেখুন, কারও জীবন নিয়ে যদি সিনেমা বানানো হয়, সেটা তো আসলে সিনেমা থাকে না। সেটা হয়ে যায় স্বীকৃতির মতো। এই যে ওরা আমাকে উপলক্ষ করে সিনেমার উদ্যোগ নিলো, এটাকে আমি আমার জীবনের অন্যতম স্বীকৃতি হিসেবে দেখছি। তারচেয়ে বড় কথা, আমাদের সিনেমায় তো এমন কালচার নেই বললেই চলে। ফলে এমন উদ্যোগকে আমি সাধুবাদ জানাই। এমন কাজ আরও অনেক গুণীজনকে নিয়ে হোক।’

রকিবুল হাসানের ক্রিকেট ক্যারিয়ার শুরু হয় পাকিস্তান আমলে। ওপেনিং ব্যাটসম্যান হিসেবে প্রচুর সফলতা অর্জন করেন। একসময় পাকিস্তান টেস্ট দলে তার অন্তর্ভুক্তির সমূহ সম্ভাবনা ছিল। অনেকের মতে, পূর্ব পাকিস্তান ও বাঙালি বলেই তাকে সেই সুযোগ দেওয়া হয়নি। ১৯৬৯-৭০ মৌসুমে ঢাকায় অনুষ্ঠিত পাকিস্তান-নিউজিল্যান্ড টেস্ট সিরিজে দ্বাদশ খেলোয়াড় হিসেবে পূর্ব পাকিস্তানের রকিবুল হাসান সুযোগ পান। বাংলাদেশ সৃষ্টির পর দীর্ঘদিন জাতীয় দলের ওপেনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। জাতীয় দল থেকে অবসর নেওয়ার পর থেকে এখনও তিনি বাংলাদেশের ক্রিকেটের উন্নয়নে নিজেকে জড়িয়ে রেখেছেন নানাভাবে।


মন্তব্য করুন