Select Page

ভালো থেকো : ভালোই লাগলো

ভালো থেকো : ভালোই লাগলো

ভালো থেকো
ধরণ : রোম্যান্টিক/ফ্যামিলি ড্রামা
পরিচালক : জাকির হোসেন রাজু
কাস্ট : আরিফিন শুভ (জয়), তানহা তাসনিয়া (নীলা), আসিফ ইমরোজ (ইমরোজ), কাজী হায়াৎ (নীলার বাবা), রেবেকা (নীলার মা), জ্যাকি আলমগীর (মাহিম), তানিন সুবহা (নীলার বোন), আমজাদ হোসেন (মাহিমের বাবা), অরুণা বিশ্বাস (ইমরোজের মা) প্রমুখ।

নামকরণ : এ ছবির মূল বিষয় আইডেন্টিটি ক্রাইসিস নিয়ে, যার অভাবে এক প্রেমিককে তার ভালোবাসা বিসর্জন দিতে হয়। তাই সমাজের কথা ভেবে সে তার ভালোবাসার মানুষকে ভালো রাখতে চায়। তাই ‘ভালো থেকো’ নামটি যথার্থ।

কাচিস (কাহিনী+চিত্রনাট্য+সংলাপ) : যদিও এ ছবির কাহিনী টিপিক্যাল ফ্যামিলি ড্রামা টাইপ, তবুও আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত সুন্দর গল্প। কিন্তু ছবিটির চিত্রনাট্য একদম ইজ্জত ডুবিয়ে দিয়েছে। অনেক বেশি অগোছালো এবং একটা ভালো মৌলিক গল্পকেও নোনতা বানিয়ে ফেলেছে। সংলাপ মোটামুটি ছিল; তবে কিছু ক্ষেত্রে তানহা তাসনিয়ার মঞ্চনাটক টাইপ ডায়লগ শুধু লোক হাসিয়েছে। তবে সব ডায়লগ এমন হয়নি। বেশ কিছু ভালোও হয়েছে।

এ অংশ পাবে ১০০ তে ৫০।

টিমওয়ার্ক :  সত্যি কথা বলতে আরিফিন শুভর কাছে যতটা আশা করেছিলাম ঠিক ততটা পাইনি। ছবিতে বেশ কয়েকটি ক্যারেক্টার ছিল এবং জয় চরিত্রে দেখানোর মতো অনেক কিছুই ছিল, কিন্তু রাজু স্যার এবার শুভর থেকে শতভাগ বের করতে পারেনি। প্রথমার্ধে শুভর ওভার অ্যাক্টিং বেশ চোখে পড়েছে; তবে দ্বিতীয়ার্ধে শুভর কান্নার এক্সপ্রেশনগুলো দেখার মতো ছিল।

তানহা তাসনিয়াও মন ভরাতে পারেনি; এক্সপ্রেশনে অনেক ঘাটতি ছিল। তবে অভিজ্ঞতা বাড়লে এ সমস্যাগুলো সে ভবিষ্যৎ এ কাটিয়ে উঠতে পারবে।

আসিফ ইমরোজের চরিত্রের ব্যাপ্তি অনেক কম ছিল, তবে তিনি খুব একটা খারাপ করেনি। নিজেকে প্রমাণের সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন।

আমজাদ হোসেন, কাজী হায়াৎ, রেবেকা, জ্যাকী আলমগীরসহ অন্যান্য চরিত্রগুলো একদম পারফেক্ট ছিল; এই জিনিসটা আমার বেশ ভালো লেগেছে। কারণ সাধারণত বাংলা ছবিতে সাইড রোলকে তেমন একটা গুরুত্ব দেওয়া হয় না। তবে এখানে বেশ যত্ন সহকারে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। তবে কাজী হায়াতের সেই স্লো মোশনের ডায়লগ ডেলিভারি বিরক্তিকর ছিল। এমএ শহিদ এবং মঞ্জুর; উভয়ের রোল অনেক ছোট হলেও অভিনয়ে সাবলীলতা ছিল।

এ অংশ পাবে ১০০ তে ৬০।

কারিগরি : ছবির সিনেমাটোগ্রাফি বেশ ভালো হয়েছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক অসাধারণ! ছবিতে গান রয়েছে তিনটি। সবগুলো গানের কোরিওগ্রাফি একদম মানানসই। আরিফিন শুভ এবং আসিফ ইমরোজ দু’জন-ই বেশ সুন্দর নেচেছে। এডিটিং এবং কালার গ্রেডিং মোটামুটি ছিল। ১৪২ মিনিটের ছবিতে মাত্র ১টি (!) ফাইট সিন রয়েছে তাও অনেক দূর্বলতা ছিল। লোকেশন মোটামুটি ভালো ছিল। তবে কিছু কিছু সিনে শুভর চুল একবার বড়, আবার একবার ছোট দেখা গেছে। যা খুবই দৃষ্টিকটু ছিল।

এ অংশ পাবে ১০০ তে ৭০।

বিনোদন : ছবিতে কমেডি সিকুয়েন্সগুলো ঠিকমতো ডানা মেলতে পারেনি। বাজে চিত্রনাট্য এবং বাজে অভিনয় সব মজা একদম ধুলিসাৎ করে দিয়েছে। ছবির প্রথম হাফ তেমন ভালো জমেনি। তবে শেষ ৪০ মিনিটে; বিশেষ করে যখন শুভ এবং আসিফ ইমরোজ যখন মুখোমুখি হয় তখন বেশ জমে উঠেছিল। অনেক টুইস্ট অ্যান্ড সাসপেন্স ছিল এবং এটা একদম গল্পের শেষ অংশে গিয়ে সমাপ্ত হয়;  তাই টুইস্টগুলো উপভোগ্য ছিল।

এ অংশ পাবে ১০০ তে ৩০।

ব্যক্তিগত : ব্যক্তিগতভাবে এছবি নিয়ে আমার তেমন কোনো expectation ছিল না। তবে ট্রেলার দেখে যতটা খারাপ লেগেছে ঠিক ততটা খারাপ লাগেনি। আর বাংলা ছবিতে সাধারণত দেখা যায়, প্রথম হাফের পর দ্বিতীয় হাফে গল্প খেই হারিয়ে ফেলে। কিন্তু ছবির গল্প দ্বিতীয় হাফেই বেশি জমে উঠেছে।

এ অংশ পাবে ১০০ তে ৪০।

রেটিং : ২.৫/৫

ছবিটি কেন দেখবেন : আপনার যদি রাজু স্যারের টিপিক্যাল রোমান্টিক মুভি ভালো লাগে তাহলে এ ছবি আপনার জন্য। এছাড়াও আপনার যদি ফ্যামিলি-ড্রামা টাইপ মুভি ভালো লাগে কিংবা আপনি যদি আরিফিন শুভর ভক্ত হোন তাহলেও এ ছবি আপনার জন্য।


Leave a reply