Select Page

রিমেক নাকি অত্যাচার!

রিমেক নাকি অত্যাচার!

মূলত অফিসে যাওয়া-আসার পথে রেডিও শোনা হয়। কিছুদিন শুনে পর্যবেক্ষণ হইলো, অডিও ইন্ডাস্ট্রির নতুন গানগুলার কদর নাই রেডিওতে বা আমি যখন শুনি তখন তারা নতুন গান শোনায় না। আবার নতুন যা শোনায় তার বেশির ভাগ পুরোনো গানের পুরো রিমেক বা আধাআধি রিমেক। এর মাঝে হিন্দি গানের রিমেকও আছে।

একদিনের অভিজ্ঞতার বর্ণনা থেকে বাকি কথা তুলছি। সে দিন প্রথম যে রিমেক শুনলাম- হাবিব ওয়াহিদের কম্পোজিশনে করা ‘বন্দে মায়া লাগাইছে’। এ অ্যালবামের (কৃষ্ণ) গানগুলো সবসময় ভালো লাগতো। ফুয়াদের রিমেকগুলাও।

একটা হিন্দি গান আসলো। সুর ও কথা পরিচিত লাগতেছিল। পরে বুঝলাম এ আর রহমানের অসাধারণ ‘মাসাকালি’র দফারফা। এটা নিয়ে রহমানও বিরক্ত ছিলেন খুব। জাস্ট ওয়াক! এরপর বাংলা রিমেক আসলো। এটাও জাস্ট ওয়াক! কোন গান?

বাংলা সিনেমার জনপ্রিয় গান ‘তুমি চাঁদের জোছনা নও’ রিমেক করছেন ইমরান ও কোনাল। এত জঘন্য করে গাইছে! যেন দুজনকে বন্দুকের মুখে রেখে গাওয়ানো হইছে। ব্যাপার যদিও তা না। ইমরানের গলার কী যেন একটা সিগনেচার টিউন দাঁড়াইছে- যেটা নিজের গান তো বটে, রিমেকের মধ্যে প্রয়োগ করে যা-তা অবস্থা। টেনে টেনে গাইতে গাইতে পুরো গানের মেজাজই নষ্ট করে দেন তিনি।

এখন নাকি বের হইছে ‘হৃদয়ের আয়না ২.০’। কোথায় যে যাই! এটাও সম্ভব!

এর আগে আরেকটা অসাধারণ গান ‘আমার মনের আকাশে জ্বলে শুকতারা’ নষ্ট করছেন তিনি। এমনকি কয়েক দিনের আগে শেখ ভানুর ‘নিশিতে যাইও ফুলবনে’ কোনো ধরনের দরদ ছাড়াই!

সালমান শাহর ‘এ জীবনে যারে চেয়েছি’ও নষ্ট করছেন। এ তালিকায় হয়তো আরও দু-একটা খুঁজলে পাওয়া যাবে। ইমরান, আপনি নিজে স্লো মোশনে গান গাইতেছেন ঠিক আছে। কিন্তু এই গানগুলারে কলুষিত কইরেন না। সোনালি দিনের বারোটা বাজে!

উপলক্ষ্য ইমরানকে ঘিরে হলেও রিমেক আরও অনেকেই করেন নিশ্চয়। তবে আজকাল ইমরানেরগুলা বেশি শোনা হইছে রেডিও ও প্রচারের কারণে।

এখানে দায় থাকে যারা গানগুলো নির্মাণ করেন তাদেরও। একটা ব্যাপার হলো- বুঝতে হবে এ গানগুলোর লেখা ও সুরের একটা সময়কাল আছে। এরা ভিনটেজ বিষয়। সেভাবে যদি না হয় অখাদ্য তো হবে। এ ছাড়া গ্রেট সব গীতিকার-সুরকার এ সব গানের পেছনে ছিলেন। চাইলেও নষ্ট করতে পারেন না। সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির গানের স্বত্ব সাধারণত মিউজিক লেভেলের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়। কোনো কোনো কোম্পানির কাছে নামমাত্র দামে কেনা পুরোনো দিনের অনেক গানের স্বত্ব আছে। তা দিয়ে তারা বছরের পর বছর ব্যবসাও করছে। তাদের কাছে আমাদের আবদার- যদি রিমেক বা রিক্রিয়েশন করেনই একটু সচেতনভাবে করেন। বিশ্বাস করেন, এ সব গানে কারা মডেল হবে বা কোন দেশে ভিডিও নির্মাণ হবে- তা নিয়ে আমাদের আগ্রহ নাই। আর যদি পারেন পুরোনো গানগুলো ভালো কোয়ালিটির ফরমেটে রূপান্তর করে বেশি বেশি প্রচার করেন।


মন্তব্য করুন