অারেফিন শুভ ফ্যাক্ট
একুশ শতকের সিনেমা দাবি করে অাধুনিকতার। অাধুনিক হতে হতে মানুষের রুচি পুরনো থেকে বদলাতে থাকে।পুরনোকে তাই বলে অস্বীকার করতে পারে না, যদিও বা কেউ করে থাকে সেটা বেশিদিন টেকে না। গণমানুষের নায়ক হতে গেলে তাকে মানুষের কাছে পরিচিত হতে হয়। মানুষের মন জয় করতে হয়। এভাবে অনেকদূর যাবার একটা পথ নিজেকেই বানিয়ে ফেলতে হয়। একুশ শতকের ঢালিউডে ডিজিটাল সময়ের নায়ক অারেফিন শুভ দর্শকের নতুন স্বপ্ন-সম্ভাবনা-প্রত্যাশার একটা পারদে পরিণত হয়েছে। ঢালিউডে সে এখন একটা ‘ফ্যাক্ট’ যাকে ‘ফ্যাক্টর’ হতে হবে ধীরে ধীরে। যেখান থেকে শুরু হবে অন্য কারো স্বাপ্নিক অধ্যায়।
দেখা যাক কি কি অাছে সে ‘ফ্যাক্ট’-এ..
দর্শনদারী ও গুণবিচারী
অারেফিন শুভ দর্শনদারী অবশ্যই।গুণবিচারী তার থেকে বেশি এবং দিনের পর দিন তা অারো বাড়ছে। সে তার নিজের মধ্যে পরিবর্তন অানতে খুব সচেতন। তার সময়ের অাধুনিক নির্মাতাদের সাথে কাজ করে সে। বেসিক স্মার্টনেস অাছে। তার সচেতনতা অনেক কারণটা পরিষ্কার, তার একটা সিনেমা নিয়ে সমালোচনা হলে পরেরটা নিয়ে খুব সতর্ক। পরেরটা অাগের থেকে বেটার করার চেষ্টা করে। এটাই ভবিষ্যতের বড় তারকার সবচেয়ে বড় গুণ যাকে প্রথম থেকে দ্বিতীয়তে অালাদা লাগবে।
সংসার দুঃখ তরঙ্গের মেলা
অাশা তার একমাত্র ভেলা
জীবন কখনোই সম্পূর্ণ রঙিন নয়।শুভরও ছিল না। তার পরিবারের শিক্ষা ছিল ‘এই তুমি ১ টাকা নয় ১০০ পয়সা খরচ করেছ। ‘এ শিক্ষা মারাত্মক! তার মানে কোনটা necessity আর কোনটা luxury সে ছোট থেকেই জানত। তাই নিজেকে চেনার কাজটা তখন থেকেই করেছে। পকেটে ২৫৭ টাকা নিয়ে ঢাকা শহরে এসেছে। না খেয়ে থেকেছে অনেকদিন। দারিদ্র্য নজরুল-কে মহান করেছিল যার স্বীকারোক্তি তার কবিতায় অাছে। সোজা কথায় বলতে গেলে দাঁড়ায় জীবনে দৌড় করেছে তাই সে জানে গতি ঠিক রাখতে হবে। গতিতেই অাছে এখন শুভ।
তুলনা তার অপছন্দ
শুভ তার সম্ভাবনা দেখাতে শুরু করল যখন অমনি পত্রিকাওয়ালা, ভক্তরা বলতে শুরু করল অারেকটা ‘সালমান শাহ’ পেয়ে গেছি। শুভ এ তুলনা নিল না। ‘কিস্তিমাত’ মুক্তির আগে সাক্ষাৎকারে বলল ‘সালমান শাহর সাথে তাকে
তুলনা করাতে ঘোর অাপত্তি অাছে। ‘সে জানে তার পথটা শুধুই তার সেখানে ‘সালমান শাহ’ অনুপ্রেরণা। এটাই sensibility.
গ্রাম-শহর বিস্তৃতি
অারেফিন শুভ-কে একজন মান্না, অামিন খান, রিয়াজ, শাকিব খান-দের মতো জনপ্রিয় ও গ্রহণযোগ্য হতে হলে কিংবা ভবিষ্যতের ‘লিজেন্ড’ জাতীয় কিছু হতে গ্রাম-শহর জুড়ে বিস্তৃত হতে হবে।ইতোমধ্যে সে যাত্রা চলছে।তবে শহরে যতটুকু সে সমাদৃত এবং প্রত্যাশিত সেটা গ্রামের ঘরে ঘরে জসিম-রুবেল-মান্না-রিয়াজ-শাকিব তাদের মতো নয়।নয় বলে থেমে থাকবে তা নয়।শুভকে প্রমাণ করতে হবে সে সামর্থ্য তার অাছে, প্রতিভাও অাছে।প্রত্যাশাটা এখানে অনেক অনেক বেশি।
পাছে লোকে কিছু বলে
লোকে যা বলে অামলে সবকিছু নিতে হয় না আবার অনেককিছুই নিতে হয়। শুভকে দরকারি কথাটা অামলে নিতে হবে অার অদরকারি যা কিছু গায়ে না মেখে ছেড়ে দিতে হবে। ‘নিয়তি’ সিনেমা সদ্য মুক্তি পেয়েছে। এর প্রচারণার জন্য শুভ নিজে দেয়ালে পোস্টার লাগিয়েছে। ‘অস্তিত্ব’-র সময়ও করেছে। এটাকে সমালোচকরা নানাভাবে রংচং মেখে বিশ্লেষণ করেছে। তার সিনেমা চলে না, দেখে না লোকে তাই রাস্তায় নেমেছে এসব বলে বেড়াচ্ছে।শুভকে এসব অদরকারি কথা গায়ে মাখা যাবে না। ‘ছুঁয়ে দিলে মন’ বা ‘মুসাফির’ দর্শক ভোলেনি। অপপ্রচার প্রকৃত প্রতিভাকে দমাতে পারে না।শুভর ধাঁচটা অালাদা। দর্শক যেমন অনেক পদের তাই সবাই তাকে খুব দ্রুত গ্রহণ করবে তা নয়। তাকে বুঝতে সময় দিতে হবে। ‘নিয়তি’ দিয়ে অভিনয়ের জায়গাটা যেমন পাকাপোক্ত করে দিয়েছে পাশাপাশি তার স্টাইলও স্মার্ট ছিল। শেষের পাঁচ মিনিটে শুভ যে অভিনয় করেছে এবং ক্যারেক্টার প্লে করেছে ভবিষ্যতের ‘সুপারস্টার’ হবার জন্য সেটা সিঁড়ি। তার জন্য মানসিক সমর্থন এখন খুবই জরুরি।
প্রতিভার প্রতি সুবিচার দরকার
আপনার যেমন নায়ক দরকার এসময় তার বৈশিষ্ট্যগুলো শুভর মধ্যে অাছে। কারণ সে পুরনো নয় নতুন করে হাজির হবার চেষ্টা করে যাচ্ছে। প্রতিভা অাছে যার জন্য তাকে নিয়ে প্রত্যাশা অনেক দর্শকের এবং শুভ তার স্টারডম নিয়ে চিন্তিত। এ চিন্তাই দর্শকের জন্য ইতিবাচক।শুভ দর্শকের জন্যই সচেতন থাকবে অাগামী দিনেও।
‘সুপারস্টার’ দর্শক বানায়
দর্শক চাইলে ‘সুপারস্টার’ হয়, না চাইলে অালোচনার বাইরে থাকে। শুভকে দর্শক চায় এবং সেটার মাত্রা দিন দিন বাড়ছে।তার মাধ্যমে দর্শক সিনেমাহলে যায়। দর্শক টানার সক্ষমতা সবার থাকে না। ঢালিউডের ক্রান্তিকালে এখন এ কাজটাই সবচেয়ে জরুরি। ‘সুপারস্টার’ শুভর জন্য পারফেক্ট।
অারেফিন শুভ এই মুহূর্তে দর্শক ডিমান্ডে ঢালিউডের ‘ফ্যাক্ট’ এবং সে যাচ্ছে ‘ফ্যাক্টর’ এর দিকে। আপনি মানলেও এটা সত্য না মানলেও সত্য।