Select Page

আরিফিন নামটা কি কঠিন?

আরিফিন নামটা কি কঠিন?

ইনডিয়ান এক পত্রিকার লগে সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের নায়ক আরিফিন শুভ জানাইছেন মুম্বাইয়ের লোকেরা তারে অরবিন্দ ডাকে। তিনি তাতে সাড়া দেন।  

এই হিউম্যান ল্যাবে, এনাদের কর্মকাণ্ডই আমাদের মানব সাইকোলজি ও মানব সমাজের ক্ষমতা সম্পর্ক বোঝার গিনিপিগ। মানে এনাদের ব্যাখ্যা করেই আমরা এইসব বুঝতে পারি। পারফর্মিং আর্টিস্টদের নিয়া যেইরকম বলা যায়, এমনে সাধারণ লোক নিয়া এইরকম বলার সুযোগ নাই।

এইখানে আরিফিনের নামরে যে বদলাইল মুম্বাইয়ের লোকেরা, আরিফিন তা মানছেন তো বটেই, আরও খুশি হইছেন। নিজে থেকে বলতেছেন গর্বের সাথে। এর কারণ তিনি সামাজিক ক্ষমতা সম্পর্ক বোঝেন না। তারে ভিন্ন নাম দিয়া ছোট করা হইল।

নাম কে দেয়? যার পাওয়ার আছে সেই দেয়। আদি নামকরণের কাহিনী মনে করেন বাইবেল থেকে। গড আদমের সামনে দিয়া জন্তুদের যাইতে দিলেন, আর আদম একেকটার নাম দিলেন। এইভাবে অন্য প্রাণীদের ওপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা হইল।

আরিফিন নামটা কি কঠিন? বা মুসলিম নাম হিশাবে কঠিন? শাহরুখ খান, সালমান খান, এমরান হাশমী, ফারহান আখতার, নওয়াজুদ্দীন সিদ্দিকী কত নায়কই তো আছেন মুসলিম নাম নিয়া।

মুরাদুল ইসলামের লেখা নিয়মিত পেতে ক্লিক করুন

কোন প্রফেশনাল সেটিংয়ে নিজের পরিচয় দেবার কালে পুরা নাম বলবেন। ছোট করে বা ফার্স্ট নেইম খালি দিলে আপনি পাওয়ার হারাবেন। 

অন্যরা তাদের সুবিধামত ছোট করতে চাইলে দিবেন না। যেমন আপনার নাম রফিকুল আলম। এখন কেউ যদি বলতে চায় রফি, এইটা অ্যালাউ না করে রফিকুল বলতে বলেন বিদেশ হইলে, দেশে অবশ্য রফিকই চলবে কালচারাল কারণে। বাট রফি বন্ধুরা ডাকতে পারে। ওয়ার্কপ্লেসে বন্ধু হইয়া গেলে তারা বলতে পারে।

যদি ছোট করতে দেন, বা আরিফিন যেমন বদলাইতে দিছেন, এমন করলে, এটা সিগন্যাল দেয়, আপনার সেলফ ইস্টিম কম।

একবার আহমদ ছফারে একজন নাম বদলাইতে বলছিলেন, তার এক শিক্ষক। ওই সময়ে তার রিয়েকশন পড়ছিলাম, তিনি কইছিলেন এই এতোটা খাসি ইত্যাদি জবাই দিয়া আমার নাম রাখছে মা বাপ, বদলাব কেন।

আরিফিন যেমন অরবিন্দ ইজিলি হইতে পারলেন দাঁত কেলাইয়া, ভারতের, এমনকি কলকাতার কোনো নায়ক-নায়িকারে এমন মুসলমানি নাম দেয়ার সাহস করতে পারবে বাংলাদেশের কেউ? যেমন ইধিকা পালের নাম যদি দিত, মেহজাবিন? ইধিকা পাল তো ফিল্মই করত না!

বাংলাদেশের লোকদের এই স্বভাব কেন, একেবারে পায়ের তলায় গলে পড়ে কেন, এই প্রশ্নের উত্তরে আব্দুর রাজ্জাকের একটা কাহিনি মনে পড়ে।

সরদার ফজলুল করিমের নেয়া প্রফেসর রাজ্জাকের ইন্টারভিউয়ের বইতে পড়ছিলাম, তিনি একবার দেখলেন পূর্ব পাকিস্তানের এক এমপি পশ্চিম পাকিস্তানের এমপি আমজাদ আলীরে বলতেছেন, স্যার আপনিই একমাত্র ফাইনান্স মিনিস্টার যে আমাদের সঙ্গে ভালো করে কথা কইছেন।

রাজ্জাক পরে তারে বলছিলেন, আপনিও অ্যাসেম্বলি মেম্বার, আমজাদ আলীও অ্যাসেম্বলি মেম্বার। আর আপনি তার লগে এইভাবে কথা কইবার লাগছেন। আপনাদের অ্যাডভাইস দিতে আসে কোন পাগল!


About The Author

লেখক ও বিশ্লেষক

Leave a reply