ঈদে নিজের একাধিক সিনেমা মুক্তির বিপক্ষে শরিফুল রাজ
ঢাকার ইন্ডাস্ট্রিতে এক ঈদে একই অভিনেতার ৫-৬টি সিনেমা মুক্তির রেকর্ড রয়েছে। সে সব সিনেমা হিট হলেও দর্শক কয়টির কথা মনে রেখেছেন তাও ভাবার বিষয়। এখন প্রেক্ষাগৃহ সংকটের সময়ে এক ঈদে নিজের একাধিক সিনেমা মুক্তির বিপক্ষে শরিফুল রাজ। এ নিয়ে তার নিজস্ব যুক্তিও রয়েছে।
পরাণ ও হাওয়ার মতো হিট সিনেমা দিয়ে ২০২২ সালে শীর্ষ আসনে চলে আসেন রাজ। কিন্তু সে ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ন থাকেনি। এরপর সিনেমার চেয়ে ব্যক্তিগত ঝুট-ঝামেলা নিয়েই আলোচনায় ছিলেন। তবে এর মাঝেও উল্লেখ করার মতো কিছু সিনেমায় অভিনয় করছেন। ঘটনাচক্রে তেমন তিনটি সিনেমা সামনে ঈদুল ফিতরে মুক্তি পাবে। তাতে নাখোশ ‘দামাল’ তারকা।
ঈদুল ফিতরে মুক্তি পেতে পারে গিয়াসউদ্দীন সেলিমের ‘কাজলরেখা’, মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজের ‘ওমর’ ও মিশুক মনির ‘দেয়ালের দেশ’। এ নিয়ে রাজ বলেন, ‘ভেবেছিলাম শুধু ওমর ঈদে মুক্তি পাবে। ‘কাজলরেখা’ ও ‘দেয়ালের দেশ’ আগেই মুক্তির কথা ছিল। কিন্তু এক ঈদেই আমার এতগুলো ছবি মুক্তি পাবে, এটা ভালো লাগছে না। এই ছবিগুলো আমার অনেক কষ্টের, অনেক পছন্দের কাজ। বিরতি দিয়ে মুক্তি পেলে সময় নিয়ে, প্রতিটি ছবি বিচার–বিশ্লেষণ করে দর্শকেরা ছবিগুলো দেখতে পারতেন। কিন্তু একসঙ্গে মুক্তির কারণে দর্শকেরা তিনটি ছবি না–ও দেখতে পারেন। দর্শক বিভ্রান্ত হতে পারেন। ভাগ করে দুই ঈদেও ছবিগুলো মুক্তি দেওয়া যেত।’
তবে তিনটি কাজ নিয়েই আশাবাদী রাজ। তার ভাষ্যে, তিন ছবির গল্প ও তার অভিনীত চরিত্র তিন ধরনের। যে ধরনের চরিত্রগুলোতে তাকে আগে দেখেনি দর্শক। ছবি তিনটির প্রস্তুতিতে বছরের পর বছর সময় লেগেছে।
সিনেমাগুলোর জন্য তার নিজের নিবেদন কতটা ছিল, সেটাও জানালেন রাজ। তিনি বলেন, ‘“কাজলরেখা” পাঁচশ বছর আগের গল্প। সেই সময়কার সুচ কুমার চরিত্রটির প্রস্তুতি নিয়েছি দুই বছর ধরে। চরিত্র পর্দায় বিশ্বাসযোগ্যভাবে ফুটিয়ে তোলার জন্য দীর্ঘ সময় কাজ করতে হয়েছে। “দেয়ালের দেশ” ছবিতে হিমঘরের গার্ডের চরিত্রে অভিনয় করেছি। পুরো এক বছর চরিত্রটিতেই ডুবে ছিলাম। ওজন কমাতে হয়েছে, চুল–দাড়ি বড় করতে হয়েছে। চরিত্রের প্রয়োজনে দীর্ঘদিন টেবিলে খাইনি। ফ্লোরে বসে খেয়েছি।’
এ ছাড়া রাজ জানালেন, ‘ওমর’ চরিত্রটির মধ্যে ভাঙাগড়ার খেলা আছে। শুটিংয়ের আগে টানা দুই মাস চিত্রনাট্য নিয়ে মহড়া করতে হয়েছে।
ছবির মুক্তির সময় তিন ছবির প্রচার নিয়েও সমস্যায় পড়তে পারেন বলে মনে করছেন রাজ। তিনি বলেন, ‘কোন ছবি রেখে কোন ছবির প্রচারে যাব? তিনটি ছবিই আমার জীবনের অন্যতম সেরা কাজ। শেষ পর্যন্ত সময় ভাগ করে নিয়ে ছবিগুলোর প্রচার করতে হবে।’
গত বছরের সেপ্টেম্বরে মাসে বিচ্ছেদ হয় রাজ ও পরীমনি দম্পতির। ওই সময় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন রাজ। তবে কয়েক মাসের মধ্যেই নতুন কাজে যুক্ত হন; চেষ্টা করেন কাজে ডুবে থেকে নিজেকে চাঙা রাখতে। এ প্রসঙ্গে রাজ বলেন, ‘ওই সময়টা আমার জন্য ভালো ছিল না। এক ছাদের নিচে বসবাস করা মানুষ দুটো আলাদা হয়ে গেলে, কেমন লাগে সেটা যাদের হয় তারাই বুঝবেন। তা ছাড়া ওই সময় আমার সন্তানকেও মিস করছিলাম খুব। প্রতিদিন যে সন্তানকে দেখছি, খেলছি, আদর করছি—সেই সন্তানের সঙ্গে হঠাৎ করেই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়াটা খুবই কষ্টদায়ক ছিল। তবে বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে এগিয়েছি আমি।’ খবর প্রথম আলো।