করোনায় ক্ষতি ‘২০০ কোটি টাকা’, প্রণোদনা চায় ঢালিউড
সম্প্রতি কভিড-নাইনটিন মোকাবিলায় নানা খাতে ৯২ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে সরকার। কিন্তু সেখানে নেই বিনোদন অঙ্গন বা সংবাদমাধ্যমের জন্য কোনো আশ্বাস।
এমন পরিস্থিতিতে প্রযোজক নেতারা বলছেন, এক মাস ধরে চলচ্চিত্র নির্মাণ ও প্রেক্ষাগৃহ বন্ধ থাকায় ‘প্রায় ২০০ কোটি টাকার’ ক্ষতির মুখে সরকারি প্রণোদনা না পেলে চলচ্চিত্র শিল্পে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারবে না। এ প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে বিডি নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে।
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে সরকারের ঘরে থাকার সাধারণ ছুটিতে অন্যান্য শিল্পের মতো চলচ্চিত্র শিল্পেরও সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এ কারণে মুক্তির অপেক্ষায় থাকা প্রায় ১৫টি চলচ্চিত্র মুক্তি না পাওয়ায় ও সব প্রেক্ষাগৃহ বন্ধ থাকায় চলচ্চিত্র শিল্পের ‘প্রায় ২০০ কোটি টাকা’ ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করলেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক পরিবেশক সমিতির সভাপতি খোরশেদ আলম খসরু।
তিনি বলেন, “করোনাভাইরাসের প্রকোপ শেষ হওয়ার পরও ক্ষতিটা কতকাল আমাদের বয়ে বেড়াতে হবে-সেটা নিয়ে এখন অনিশ্চয়তায় আছি। চলচ্চিত্র আদৌ স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে পারবে কি না-তাও বলতে পারছি না।”
আরও বলেন, “ইন্ডাস্ট্রি বাঁচিয়ে রাখতে চলচ্চিত্র নির্মাণের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের ও প্রেক্ষাগৃহের মালিকদের জন্য সরকারি প্রণোদনা দিতে হবে। অন্যথায় চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রির ঘুরে দাঁড়ানোর কোনো সম্ভাবনা নেই।”
চলচ্চিত্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের দীর্ঘদিনের দাবির মুখে ২০১২ সালে চলচ্চিত্রকে ‘শিল্প’ হিসেবে ঘোষণা করে সরকার।
শিল্প হিসেবে এই সঙ্কটে চলচ্চিত্রকে সামনে এগিয়ে নিতে সরকারি প্রণোদনাকেই সমাধান হিসেবে দেখছেন দেশের প্রেক্ষাগৃহ মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির উপদেষ্টা মিয়া আলাউদ্দিন।
তিনি বলেন, “সরকার গার্মেন্ট শিল্পে যেভাবে প্রণোদনা দিচ্ছে; চলচ্চিত্রও শিল্পেও সেরকমটা জরুরি। অন্যথায় অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে যাবে আমাদের চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রি।”
দেশের হল মালিকদের ‘নাজুক’ পরিস্থিতি তুলে ধরে প্রদর্শক সমিতির এ নেতা বলেন, “দেশের পরিস্থিতির উপর নির্ভর করছে আমাদের হলগুলো কবে খোলা সম্ভব হবে। ইতোমধ্যে অনেক হলের যন্ত্রপাতি হয়তো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সিনেমা না চলায় স্টাফদের বেতন পরিশোধ করতে পারছেন না মালিকরা।”
এ দিকে কাজ না থাকায় সবচেয়ে বেশি কষ্টে দিন কাটছে নিম্ন আয়ের কলাকুশলীদের। এদের মধ্যে অনেকে দিন চুক্তিতে চলচ্চিত্রের ছোট ছোট চরিত্রে অভিনয় করে সংসার চালান; যারা ‘এক্সট্রা’ বলে পরিচিত।
শুধু এক্সট্রা নয়, মেকআপ আর্টিস্টদের সহকারী, স্ট্যান্টম্যান, প্রোডাকশন বয়সহ আরো অনেক কলাকুশলীরাই ‘বেকার’ হয়ে গেছেন।এফডিসির বিভিন্ন সংগঠনের তরফ থেকে টুকটাক সহায়তা পেলেও তারাও অনিশ্চয়তার মধ্যেই দিন কাটাচ্ছেন।
এর বাইরে চলচ্চিত্রের ডাবিং, সম্পাদনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরাও কোনো কাজ পাচ্ছেন না।