কাউকে চিনতে পারছেন না আনোয়ারা
১১ মার্চ রাতে হঠাৎ মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হলে ঢাকার রামপুরার বনশ্রীর একটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় রেকর্ড সংখ্যক জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত অভিনেত্রী আনোয়ারাকে। টানা ১০ দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর দুই দিন আগে তাকে বাসায় আনা হয়।
প্রথম আলো এক প্রতিবেদনে জানায়, শুরুতে এ অভিনয়শিল্পী মেয়ে মুক্তিকেও চিনতে পারছিলেন না। কয়েক দিন পর মেয়েকে চিনতে পারলেও পরিবারের বাইরের কাউকে এখনো ঠিকমতো চিনতে পারছেন না। চোখে এখনো সবকিছু ঝাপসা দেখছেন। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের কারণে এমন পরিস্থিতি হয়েছে এই অভিনয়শিল্পীর।
২৩ মার্চ বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে হল অব ফেম মিলনায়তনে বসছে ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০২০’–এর এবারের আসর। এবার যুগ্মভাবে আজীবন সম্মাননা প্রদান করা হচ্ছে আনোয়ারা বেগম ও রাইসুল ইসলাম আসাদকে। এই অনুষ্ঠানে পুরস্কার নিতে সুদূর আমেরিকা থেকে এরই মধ্যে ঢাকায় এসেছেন আসাদ। কিন্তু অসুস্থতার কারণে সশরীরে উপস্থিত থেকে পুরস্কার নিতে পারছেন না আনোয়ারা। তার হয়ে পুরস্কার গ্রহণ করবেন মেয়ে মুক্তি।
অভিনেত্রী মুক্তি বলেন, তারা পরিবারের সবাই মিলে কক্সবাজার বেড়াতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ঢাকায় ফেরার তিন দিনের মাথায় ১১ মার্চ রাতে ব্রেন স্ট্রোক করেন আনোয়ারা। সেদিন রাতেই তাকে দ্রুত বনশ্রীর একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়।
মুক্তি আরও বলেন, ‘স্ট্রোক করার পর কয়েক দিন তো আম্মা আমাকেই চিনতে পারেননি। এখন আমাকে চিনছেন। কিন্তু আত্মীয়স্বজন কেউ এসে নাম বললেও তাঁদের চিনতে পারছেন না। চোখে ঝাপসা দেখছেন। ধরে ধরে হাঁটাতে হয়। কিছু দূর হাঁটলে দুর্বল হয়ে পড়েন। সবাই আম্মার জন্য দোয়া করবেন।’
আনোয়ারাকে ধরা হয় ঢাকাই চলচ্চিত্রের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও সফল পার্শ্ব অভিনেত্রী। ১৪-১৫ বছর বয়সে চলচ্চিত্রে আসেন তিনি। আনোয়ারা অভিনীত প্রথম ছবির নাম ‘আযান’। নায়িকা হিসেবে তার প্রথম চলচ্চিত্র ১৯৬৭ সালে সৈয়দ আউয়াল ও শিবলী সাদিক পরিচালিত উর্দু ভাষার ছবি ‘বালা’। অভিনেত্রী হিসেবে আনোয়ারার টার্নিং পয়েন্ট একই বছর মুক্তি পাওয়া চলচ্চিত্র খান আতাউর রহমান পরিচালিত ‘নবাব সিরাজউদ্দৌলা’। ওই ছবিতে আলেয়া চরিত্রে অসাধারণ অভিনয় করে তিনি সর্বস্তরের দর্শকের প্রশংসা কুড়ান। অভিনয়ের জন্য তিনি আটবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন।
আনোয়ারার জন্ম ১৯৪৮ সালের ১ জুন কুমিল্লার দাউদকান্দিতে। তার পূর্ণনাম আনোয়ারা জামাল। সম্প্রতি প্রয়াত হয়েছেন তার স্বামী মহিতুল ইসলাম। এর কিছুদিন পর থেকে মেয়ে মুক্তির সঙ্গে থাকছেন তিনি।