Select Page

কিছু প্রযোজককে আত্মহত্যায় সাহায্য করলাম: ঈদের সিনেমা প্রসঙ্গে লায়ন সিনেমাসের কর্ণধার

কিছু প্রযোজককে আত্মহত্যায় সাহায্য করলাম: ঈদের সিনেমা প্রসঙ্গে লায়ন সিনেমাসের কর্ণধার

ঈদুল ফিতরে ১০টির মতো ছবি মুক্তি পাচ্ছে। কিন্তু দর্শক আগ্রহ, সামর্থ্য ও প্রেক্ষাগৃহ মিলিয়ে বড় জোর দুটি সিনেমা সফলতার মুখ দেখতে পারে। তা সত্ত্বেও বিষয়টি নিয়ে প্রযোজকদের বিকার নেই, যাকে ‘আত্মহত্যা’ বলে উল্লেখ করেছেন মাল্টিপ্লেক্স লায়ন সিনেমাসের কর্ণধার মীর্জা আব্দুল খালেক।

এ মাল্টিপ্লেক্সে ৯টি বাংলা ছবিকে শো দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে কোনো কোনোটি পেয়েছে নামমাত্র একটি শো।

সিনেমার শিডিউল প্রকাশ করে গতকাল আব্দুল খালেক লেখেন, “এই শিডিউলটা করার পর আমার একটা উপলব্ধি হলো, আমিও কিছু প্রযোজক ভাইদের আত্মহত্যা করতে সাহায্য করলাম।”

উল্লেখ যে শুরুতে ডজনের বেশি সিনেমা মুক্তির ঘোষণা থাকলেও কয়েকটি পিছিয়ে গেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিঙ্গেল ও মাল্টিপ্লেক্স মিলিয়ে গ্রিনকার্ড ৫টি, সোনার চর ৭টি ও কাজলরেখা ১০টি হল পেয়েছে।

এদিকে সমকালের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, সর্বোচ্চ ৮ কোটিসহ সাতটি সিনেমায় খরচ হয়েছে প্রায় ২৪ কোটি। তা, যদিও বেশির ভাগই ভরাডুবির শিকার হতে পারে।

শাকিব খান অভিনীত ও হিমেল আশরাফ পরিচালিত সিনেমা ‘রাজকুমার’- এর শুটিং হয়েছে ঢাকা, পাবনা, কুষ্টিয়া, মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইল, গাজীপুর, বান্দরবান, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রে। গল্পের কারণেই এসব লোকেশন বেছে নেওয়া।  সিনেমাটির ঘনিষ্ঠসূত্রের বরাতে পাওয়া খবর ৮ কোটির বেশি ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে রাজকুমার। এই টাকা কতটা তুলে আনা সম্ভব এই প্রশ্ন রাখা হয়েছিল আরশাদ আদানের কাছে। তার সহজ উত্তর, আমার ছবিতে শাকিব আছে, সুন্দর গল্প আছে তাই এটা তুলে এনে লাভ করা কেনো ব্যবারই না। 

মৈমনসিংহ গীতিকার ‘কাজলরেখা’ অবলম্বনে সিনেমা বানিয়েছেন গিয়াস উদ্দিন সেলিম। কাজলরেখার নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছেন মন্দিরা চক্রবর্তী। সুচ কুমারের বেশে দেখা যাবে শরিফুল রাজকে। কঙ্কণ দাসীর খলচরিত্রে অভিনয় করেছেন রাফিয়াথ রশিদ মিথিলা। মূলত কাজলরেখা চারশো বছর আগের বাংলার রূপকথা। অতীতের চিত্রগুলো বাস্তব সম্মতভাবে ফুটিয়ে তুলতে হাত খুলে প্রযোজককে খরচ করতে হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিনেমাটির পরিচালক। তার হিসেবে চারশ বছর আগের বাড়ি,সেট, বাণিজ্যিক বন্দর সব মিলিয়ে খরচ প্রায় দুই কোটি টাকা। শুকপাখি চরিত্র এনিমেশন। এখানেও বড় বাজেট ব্যয় করা হয়েছে। কাজলরেখা মুক্তি সামনে রেখে কনসার্ট, সারাদেশে বিলবোর্ডসহ নানা ধরণের ব্রাণ্ডিং করা হচ্ছে। প্রযোজনা সংস্থার সুত্রে জানা গেছে সব মিলিয়ে কাজলরেখা পাঁচ কোটি টাকার সিনেমা। কথা হচ্ছে এই টাকা কি থিয়েটার থেকে উঠবে? পরিচালক গিয়াস উদ্দিন সেলিম বলেন শুধু দেশের থিয়েটার দিয়ে কোনও ভালো সিনেমা লগ্নি তুলে আনতে পারবেনা।আমরা দেশের বাইরে কানাডা,আমেরিকাসহ নানা জায়গায় মুক্তি দিচ্ছি। এখানে ঈদে মুক্তির ঘোষণা দেবার পর মাল্টিপ্লেক্সসহ থিয়েটারের আগ্রহ দেখছি। মুক্তির নির্দিষ্ট সময় পর ওটিটি ও টিভি রাইটসহ আরো অনেক আয়ের খাত রয়েছে। সবচে বড় কথা হলো কাজলরেখা যদি বানাতে হয় আপনাকে বাজেট বড় করতে হবে। আয়ের চ্যালেঞ্জও নিতে হবে। নাহলে আমাদের সিনেমা কিভাবে এগুবে?

ঈদের সিনেমার অন্যতম আলোচিত ছবি হচ্ছে ‘দেয়ালের দেশ’। ছবিটির পোস্টার থেকে শুরু করে টিজার, ট্রেলার সব কিছুই পছন্দ হচ্ছে দর্শকদের। ফলে মিডিয়াম বাজেটের ছবি হয়েও সমালোকদের প্রশংসনীয় আলোচনা নিজের দখলে নিয়ে নিয়েছে ছবিটি।  মিশুক মনির পরিচালিত ছবিটিতে মূল চরিত্রে আছেন শরিফুল রাজ ও ‍বুবলী। ছবিটি সরকারি অনুদান পেলেও কো-প্রযোজক হিসেবে মিশুক মনি নিজের টাকাও ঢেলেছেন এতে। তা ঠিক কত ঢেলেছেন সে সম্পর্কে পরিচালক খোলাসা করতে নারাজ। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিনেমাটির টিমের এক সদস্য জানিয়েছেন প্রায় দুই কোটির মত নির্মাণ ব্যয় হয়েছে ছবিটির বেলায়। এতো টাকা হল থেকে উঠবে কিনা সে প্রশ্ন রাখলে, পরিচালক ও প্রযোজক জানান, গল্পটি বড় আকারে বলতে গিয়েই বাজেটে দ্বিগুণ ব্যায় করা হয়েছে। কোনো কিছুর ঘাটতি রাখা হয়নি এতে। তবে লগ্নিকৃত টাকা ফেরত আসবে এটা আমি নিশ্চিত। সঙ্গে বেশ মুনাফাও হবে। কারণ ছবিটি একবার কোনো দর্শক দেখলে শেষ অব্দি দেখতে হবে। ফলে ঈদে ছবিটি দর্শকরা দেখবেন সে বিশ্বাস আমার রয়েছে। 

দীর্ঘদিন পর নতুন সিনেমা নিয়ে আসছেন মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজ। তার পরিচালিত সিনেমা ‘ওমর’ মুক্তি পাবে এ ঈদে। ছবিটির টিমের এক সদস্যের বরাতে পাওয়া খবর, ওমর প্রায় দুই কোটি টাকা বাজেটের ছবি।

আসন্ন ঈদে মুক্তি পেতে যাচ্ছে চিত্রনায়ক আদর আজাদ ও চিত্রনায়িকা পূজা চেরি অভিনীত সিনেমা ‘লিপস্টিক’।  সূত্রের খবর ছবিটির নির্মাণ ব্যয় ছিল দেড় কোটিরও বেশি। তবে প্রযোজক ও পরিচালক সঠিক বাজেটের বিষয়ে খোলাসা করে জানাননি।

পবিত্র ঈদুল ফিতরে মুক্তি পাচ্ছে কাজী মারুফের সিনেমা ‘গ্রীন কার্ড’। মূলত যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বাঙালিদের জীবন নিয়ে নির্মিত এই সিনেমা। কাজী মারুফের বরাতে জানা গেছে সিনেমাটি চার কোটিরও বেশি খরচ হয়েছে। তিনি বলেন, আমেরিকাতে শুটিং করতে কি পরিমাণ খরচ হবে তা সবাই কমবেশি জানেন। ওখানে তো আমাকে সব কিছু ডলারে পেমেন্ট করতে হয়েছে। টাকায় হিসেবে করলে সেটা অনেক টাকা আসবে। যাই হোক টাকা বাজেট বেশি লেগেছে আমি গল্প বলতে কোনো ছাড় দেইনি। আমার বিশ্বাস সিনেমাটি দর্শক হলে গিয়ে দেখবেন।  


মন্তব্য করুন