
খুব একটা ভাল লাগল না রায়হান রাফীর ‘আমলনামা’!
একটা ভালো লাগল না রায়হান রাফীর ‘আমলনামা’!

রাফী নিজের প্রডাকশন হাউজ ‘কানন ফিল্মস’ খোলার পর যে ফিল্মগুলা করলেন, তাতে ডেডিকেশন ও টাইম সেন্সের ঘাটতি স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে। আমার এখনোও করোনাকালীন সময়ে বানানো ‘অক্সিজেন’ কিংবা ‘জানোয়ার’র কথা মনে পড়ে। এরপর আরো অনেক কনটেন্ট হয়েছে, রাফী হল ও ওয়েব মিলিয়ে বছরে ৩-৪টা কাজ করছে কিন্তু আগের মেকিং, স্টোরি ইম্প্রোভাইজেশন আর পাচ্ছি না তেমন।
‘আমলনামা’ অন্য অনেক ডিরেক্টরের মেকিং থেকে বেটার হবে, তবে রাফী নিজের জায়গা যেখানে নিয়ে গেছেন, সেখান থেকে আহামরি কিছু হয় নি। সুমন সরকারের দারুন কিছু ফ্রেমিং আছে, সত্য ঘটনার পোট্রেশন আছে, নিধির মিউজিকও ভাল। তবু একটা জানা গল্প দিয়ে দর্শককে হুক করার যে টুলস লাগতো, সেগুলো অনুপস্থিত। খুবই প্রেডিক্টেড ওয়েতেই এগিয়েছে গল্প, সাবপ্লট থাকলেও খুব স্ট্রং কিছু না।
রাফী সময়ের স্রোতে আগেও ‘দহন’, ‘খাঁচার ভেতর অচিন পাখি’ বানিয়েছে। ‘আমলনামা’য় দেখানো বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এই সময়ের স্রোতে বানানো। এইটা লীগের আমলে বানালে রাফী অনেক বেশি গ্র্যাঞ্জার পেতো, যেইটা হয়তো সাগর-রুনিকে নিয়ে বানানো ‘অমীমাংসিত’র বেলায় ঠিক আছে। জানা গল্পও সিনেমায় দেখার আগ্রহ ছিলো তবে আপ টু দ্য মার্ক বলা যাবে না।
‘আমলনামা’য় যতটা না জাহিদ হাসানের ফেরার কথা বলা হলো, তার চেয়ে বেশি ‘কামব্যাক’ শব্দটা যায় কামরুজ্জামান কামুর ক্ষেত্রে। রাফীর কাস্টিং অসাধারণ, এইটা অস্বীকার করার জো নেই। কামু ইমোশনাল জায়গায় খুব ভাল, তবে পুলিশের সাথে জার্নিটায় উনি অনেকটা যেন পরিণতি জেনেই এক্ট করেছেন। তমা মির্জা কিছু টাইপ ফিক্সড কান্না ও এক্সপ্রেশন আছে, সেগুলো রিপিট করেছে। ইভেন শেষ সিনটায় শুধু বাস্তবের চরিত্রের সাথে কপিই করলো, নিজের দিক থেকে কিছু আনতে পারলো না। তবু জাহিদ হাসান থেকে তমা বা গাজী রাকায়েত বেটার। জাহিদ হাসানের গোফ তাকে মনে হয় ফ্লুয়েন্ট ডায়লগে ইন্টারাপ্ট করছিলো। হাসনাত রিপন, ফরহাদ লিমন সবাই ভাল। তবে সাবপ্লট হিসেবে লিমনের থানার রোলটা মূল কনসেপ্টে কোন কিছু এড করে নি। সারিকা বেশ ভাল তবে তার প্রেগন্যান্সি প্রপ্স খুব চোখে লেগেছে।
ওভারল, একবার দেখার জন্য ‘আমলনামা’ চলে, তবে এমন সেন্সিটিভ বিষয় নিয়ে আরেকটু ডেপথে কাজ আশা করেছিলাম যেইটা রাইটিং থেকে আসে নি। অন্তত বাহিনীর অভ্যন্তরীণ ক্যালকুলেশন আরো ভালভাবে দেখানো যেতে পারতো।
রেটিং : ৬.৫/১০