চিত্রনাট্য ও পরিচালক বাছাইয়ে গুরুত্ব দেয়ায় ধন্যবাদ পাবেন শরিফুল রাজ
শরীফুল রাজের ক্যারিয়ার গ্রাফকে দুটি ছবির মাধ্যমে পোট্রে করা যায়৷ প্রথম ছবিটা ঢাকার এক স্ট্রাগলিং তরুণের হঠাৎ রেদোয়ান রনির সিনেমাতে সুযোগ পেয়ে যাবার গল্প, আইসক্রিম ছবিতে সুযোগ দেয়ায় কৃতজ্ঞতায় সাংবাদিকদের সামনে কেঁদে দিয়েছেন তিনি। দ্বিতীয় ছবিতে কয়েক বছরের ব্যাবধানে সেই রাজের অভিনীত দুটি সিনেমা দেশী বিদেশি সিনেমার সাথে পাল্লা দিয়ে মাল্টিপ্লেক্সের ৭০ ভাগ শো দখল করে নিয়েছে সিংগেল হল গুলোতেও ভাল চলছে, সিনেমার নিজের যোগ্যতায়।
২০২২ সালের করোনা পরবর্তী সময়ে প্রেক্ষাগৃহ পূনরায় চালু হয়েছে খুব বেশিদিন হয় নি। তবে সিনেমা হলে দর্শকখড়া চলছে। রোজার ইদে সুপারস্টারের সিনেমাসহ বেশ কটি সিনেমা মুক্তি পায়। কোন সিনেমাই সাফল্যের মুখ দেখেনি। তখনই করোনার আগে শুটিং শুরু হওয়া দীর্ঘদিন থেমে থাকা চলচ্চিত্র পরাণ। একই ইদে মুক্তি পায় অনন্ত জলিলের একশ কোটি খ্যাত সিনেমা দিন দ্যা ডে এবং প্রভাবশালী অনন্য মামুনের সাইকো। এই দুই সিনেমার দাপটে শরিফুল রাজ-মীম-ইয়াশ রোহানের পরাণ মুক্তি পায় মাত্র ১১টি হলে। কিন্তু এক সপ্তাহের মাঝেই প্রেক্ষাগৃহে উপচে পড়া ভীড় আর ওয়ার্ড অফ মাউথের কারণে হল সংখ্যা বেড়ে যায় পাঁচ গুণ। পরবর্তী সপ্তাহগুলোতে হল সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ৫৫, ৫৮, ৪৭, ৩৩, ৩৩, ৩৯, ২৭, ২৪, ১৯, ১৩, ৯, ৮, ১০, ১১, ৭, ৫! টানা ১৭ সপ্তাহে দেশের মাল্টিপ্লেক্স ও সিংগেল স্ক্রিণে দাপটের সাথে চলে পরাণ। এমনকি পরবর্তীতে একাধিকবার সিংগেল স্ক্রিণ ও মাল্টিপ্লেক্সে পূনরায় রিলিজ পায় পরাণ। পরাণ চলা সময়ে দুই সপ্তাহ পরেই মুক্তি পায় শরিফুল রাজ অভিনীত আরেক সিনেমা হাওয়া। পরিচালকের অভিষেক সিনেমা, পাশাপাশি ভিন্ন ধারার সিনেমা হওয়ায় ২৬ হলে মুক্তি পায় হাওয়া৷ পরাণের মত এটিও দুর্দান্ত হাইপ নিয়ে হল সংখ্যা বাড়াতে থাকে৷ পরবর্তী সপ্তাহগুলোতে হল সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ৪২, ৪৯, ৫৭, ৪৭, ৪১, ২৫, ১৭, ১০, ১৫, ১৫, ১০, ৬! একই সাথে শরিফুল রাজের দুইটি সিনেমা ৪০+ শো নিয়ে টানা কয়েক সপ্তাহে সিনেপ্লেক্সে চলেছে। দেশের বাইরেও ছিল এ দুটি সিনেমার দাপট।
বাংলাদেশের ৯০ ভাগ প্রেক্ষাগৃহ সিংগেল স্ক্রিণ, যেগুলোর অবস্থা প্রচন্ড বাজে, শিক্ষিত মানুষের যাবার পরিবেশ নাই। তার উপর এফডিসি ঘরানার বাইরের কেউ ওগুলো হলে সিনেমা রিলিজ দিলে টাকার হিসেবে হেরফের করে। তাই মূলত একটা শ্রেণীকে টার্গেট করা সিনেমা ওসব হলে মুক্তি পায়। তাই যেসকল অভিনেতা অভিনেত্রী স্ক্রিপ্ট বেজ ভাল সিনেমা করে তাদের জন্য চ্যালেঞ্জিং হয়ে যায় মাল্টিপ্লেক্স ছাড়া হল পাওয়া। এমন প্রতিকূলতার মাঝেও পাশাপাশি মুক্তি পাওয়া দুটি ভাল মানের সিনেমার এমন দাপট দেখানো বিরল ঘটনা। রাজের সিনেমা তা পেরেছে৷ এমন দাপটের পরেও রাজ হাওয়ায় গা ভাসিয়ে যত্রতত্র সিনেমায় অভিনয় না করে স্ক্রিপ্ট ও পরিচালকের উপর গুরুত্ব দিয়েছেন সেজন্য বিশেষ ধন্যবাদ প্রাপ্য। এবার ইদে রাজের ৩টি সিনেমা আসছে।
ঈদের তিন সিনেমার পরিচালকের সঙ্গে রাজ
কাজলরেখা মনপুরা খ্যাত সেলিমের ড্রিম প্রজেক্ট, মৈমনসিংহ-গীতিকা নিয়ে আগ্রহ বরাবরই বেশি। অনুদানের সিনেমা দেয়ালের দেশের এখন পর্যন্ত রিলিজ দেয়া সবকিছুতে সৃজনশীলতার ছাপ পাওয়া গেছে। ওমর নিয়ে খুব বেশি প্রত্যাশা না হাকলেও গোছানো থ্রিলার হলে ভাল করবেই বলে ধারণা। প্রেক্ষাগৃহে যেমনই করুক রাজের সিনেমা গুলো তার টার্গেটেড অডিয়েন্সকে তৃপ্ত করুক। রাজের জন্য শুভকামনা।