জাজের অনুমতি ছাড়া সিনেমা প্রদর্শন করলে মামলা!
ঢাকাই সিনেমার টিমটিমে অবস্থায় নতুন লড়াই শুরু হয়েছে প্রদর্শন মেশিন ঘিরে। এতদিন ধরে ডিজিটাল প্রজেকশন সিস্টেম জাজ মাল্টিমিডিয়ার সহযোগী প্রতিষ্ঠান জাজ এক্সট্রিম ডিজিটাল ব্যবসা করলেও এই ঈদ থেকে তাদের্ একচেটিয়া ব্যবসায় বাগড়া দিচ্ছে শাকিব খানের বিগ স্ক্রিন।
নায়কের ঈদ রিলিজ ‘মনের মতো মানুষ পাইলাম না’ প্রদর্শনের মাধ্যমে বিগ স্ক্রিনের যাত্রা শুরু। জাহের অভিযোগ না জানিয়ে হল থেকে তাদের মেশিন সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কিছুদিন আগে বিগ স্ক্রিনকে মামলার হুমকিও দেওয়া হয়।
সম্প্রতি জাজের পক্ষ থেকে সিনেমা হল মালিকদের সতর্ক করে দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। সেখানে বলা হয় চুক্তিপত্রের মাধ্যমে সারাদেশের সিনেমা হলে ডিজিটাল সরঞ্জামে অর্থায়ন করেছেন প্রতিষ্ঠানটি।
সে অনুসারে জাজ এক্সট্রিমের সঙ্গে যেসব পরিবেশকরা সিনেমা প্রদর্শনের ব্যবস্থা করবে- শুধু তাদের ছবিই প্রদর্শকরা তাদের হলে দেখাতে পারবেন। বলা হচ্ছে, “জাজ এক্সট্রিম ডিজিটালের সরবরাহকৃত ছায়াছবি ছাড়া কোনোভাবেই অন্য কোনো ছায়াছবি প্রদর্শন করতে পারবে না।” এর অন্যথা ঘটলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। এমনকি জাজ এক্সট্রিমের মাধ্যমে ‘অবৈধভাবে’ অন্য প্রতিষ্ঠানের যন্ত্রপাতির মাধ্যম প্রদর্শনী বন্ধ করে দেওয়া হবে।
এদিকে বিগ স্ক্রিনের বিরুদ্ধে মামলার হুমকি নিয়ে মুখ খুলেছেন শাকিব খান।
প্রেক্ষাগৃহগুলোতে এসকে ফিল্মসের মেশিন বসানোর উদ্যোগ নেওয়ার কারণ কী? এজন্য মামলার হুমকি শোনা যাচ্ছে- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, “মামলার কারণটা কী? সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি কারো পারিবারিক সম্পত্তি না কী? একজন প্রযোজক যখন ছবি রিলিজ করছেন তখন তা তিনভাগের একভাগ টাকায় করছেন। গত ঈদে ‘পাসওয়ার্ড’ রিলিজ করে একজন প্রযোজক হিসেবে আমি দেখেছি, সিনেমা হলে যেসব মেশিন বসানো রয়েছে সেগুলোর অবস্থা খুব করুণ। অকেজো ওইসব মেশিনের জন্য প্রযোজক হিসেবে সপ্তাহ-প্রতি আমাকে সাড়ে ৬ হাজার টাকা থেকে ৮ হাজার টাকা করে দিতে হয়েছে। ‘এসকে বিগ স্ক্রিন’ না এলে এই ঈদেও ডবল টাকা ভাড়া দিতে হতো। আমার টাকা দিয়ে সেই ছবি না হোক, বাস্তবে সে ছবিতো আমারই। সুফল তো আমার প্রযোজক পাবেন! কিন্তু, আমি মোট ভাড়ার তিনভাগের একভাগ নিচ্ছি। যেটা খরচ সেটাই নিচ্ছি।”
অবশ্য অভিযোগ উঠেছে- মেশিন বসিয়ে শাকিব প্রেক্ষাগৃহগুলো নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাচ্ছেন।
এই নিয়ে তিনি বলেন, “এটা পুরোপুরি ভুল কথা। মেশিন ভাড়ায় শুধু শুধু এতোগুলো টাকা দিলাম সেগুলো আমাকে কে ফেরত দেবেন? কোটি-কোটি টাকা লগ্নি করছি আমি। কিন্তু, এর সুবিধা পাবেন সবাই। আমি তো বছরে ছবি করবো চারটা থেকে ছয়টা। বাকি সময় অন্যদের ছবিই চালাতে হবে। যদি নিজের স্বার্থ বা প্রেক্ষাগৃহ নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইতাম, তাহলে ‘বীর’ রিলিজের সময়ই মেশিন বসাতাম।”
বোঝা যাচ্ছে, শুধুমাত্র একটি বা দুটি প্রতিষ্ঠান এই খাতে ব্যবসা করায় সিনেমা হল নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর হাতে কুক্ষিগত হয়ে নতুন সমস্যার সৃষ্টি করেছে। এতে সহজে সিন্ডিকেট করে নির্দিষ্ট ছবি আটকে দেওয়ার সুযোগও তৈরি হচ্ছে। এর জেরে হল মালিক পছন্দ মতো ছবি চালাতে পারবে না। অনেক ক্ষেত্রে দর্শক চাহিদা থাকলেও সেই ছবি আটকে দেওয়া যাবে!