জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (২০০২-২০০৪)
২০০২ : মরমী কবি হাছন রাজার জীবনীনির্ভর ছবি চাষী নজরুল ইসলামের ‘হাছন রাজা’ সর্বোচ্চ ৭টি শাখায় পুরস্কার অর্জন করে। প্রখ্যাত পরিচালক কাজী হায়াতের জাতীয় পুরস্কার লাভ করেন ইতিহাস ছবির জন্য,পাশাপাশি তার ছেলে কাজী হায়াত একই ছবির জন্য প্রথমবারের মতো জাতীয় পুরস্কার লাভ করেন।
এই বছর পুরস্কার তালিকা নিয়ে বেশ বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছিল। আর্ন্তজাতিকভাবে পুরস্কৃত ও প্রশংসিত মাটির ময়নাকে জুরি বোর্ড অবমূল্যায়ণ করেছে বলে অভিযোগ উঠে। ছবিটি যেখানে সেরা চলচ্চিত্র হওয়ার দাবি রাখে, সেখানে মাত্র ৩টি শাখায় পুরস্কৃত হয়। এছাড়া রাজনৈতিক সুবিধা নিয়ে অনেকেই পুরস্কার নিয়েছেন বলে গুঞ্জন উঠে। ঘোষণার কয়েক বছর পর পুরস্কার প্রদান করা হয়। এছাড়া এই বছর সেরা অভিনেত্রী,সহ অভিনেতা,সংলাপ রচয়িতা বিভাগে পুরস্কার দেয়া হয়নি। মোট ১৭ টি শাখায় পুরস্কার প্রদান করা হয়—
১. সেরা চলচ্চিত্র : হাছন রাজা
২. সেরা পরিচালক : কাজী হায়াত (ইতিহাস)
৩. সেরা চিত্রনাট্যকার : তারেক মাসুদ (মাটির ময়না)
৪. সেরা সঙ্গীত পরিচালক : সুজেয় শ্যাম (হাছন রাজা)
৫. সেরা অভিনেতা : কাজী মারুফ (ইতিহাস)
৬. সেরা সহ অভিনেত্রী : ববিতা (হাছন রাজা)
৭. সেরা খল অভিনেতা : হেলাল খান (জুয়াড়ী)
৮. সেরা শিশু শিল্পী : রাসেল ফরাজী (মাটির ময়না)
৯. বিশেষ শাখায় সেরা শিশু শিল্পী : নুরুল ইসলাম বাবলু (মাটির ময়না)
১০. সেরা গীতিকার : গাজী মাজহারুল আনোয়ার (লাল দরিয়া)
১১. সেরা সুরকার : আলাউদ্দিন আলী (লাল দরিয়া)
১২. সেরা গায়ক : মনির খান (লাল দরিয়া)
১৩. সেরা গায়িকা : উমা খান (হাছন রাজা)
১৪. সেরা চিত্রগ্রাহক : শহীদুল্লাহ দুলাল (হাছন রাজা)
১৫. সেরা সম্পাদক : মুজিবুর রহমান দুলু (ইতিহাস)
১৬. সেরা শিল্প নির্দেশক : উত্তম গুহ (হাছন রাজা)
১৭. সেরা রূপসজ্জাকর : রহমান (হাছন রাজা)
২০০৩ : কিংবদন্তি গীতিকার গাজী মাজহারুল আনোয়ার পরপর তিনবার জাতীয় পুরস্কার পেয়ে হ্যাটট্টিক করেন।এছাড়া বহু ব্যবসাসফল ছবির নায়ক প্রয়াত মান্না ও কিংবদন্তি কৌতুক অভিনেতা প্রয়াত দিলদার তাদের অভিনয় জীবনের একমাত্র জাতীয় পুরস্কার অর্জন করেন।
বিতর্কের রেশ এই বছরও চাঙ্গা হয়ে উঠে। আধিয়ারের মতো চলচ্চিত্র থাকা সত্ত্বেও জুরি বোর্ড সেরা চলচ্চিত্র ও পরিচালক শাখায় পুরস্কার দেয়নি। ঘোষণার কয়েক বছর পর পরবর্তী সরকার পুরস্কার প্রদান করে। মোট ১৩টি শাখায় পুরস্কার প্রদান করা হয়—
১. সেরা কাহিনীকার : গিয়াসউদ্দিন সেলিম (আধিয়ার)
২. সেরা অভিনেতা : মান্না (বীর সৈনিক)
৩. সেরা অভিনেত্রী : পপি (কারাগার)
৪. সেরা সহ অভিনেতা (যৌথ) : রাজিব ও সোহেল রানা (সাহসী মানুষ চাই)
৫. সেরা সহ অভিনেত্রী : সাথী (বীর সৈনিক)
৬. সেরা খল অভিনেতা : কাবিলা(অন্ধকার) ও শানু (বউ শ্বাশুড়ীর যুদ্ধ)
৭. সেরা কৌতুক অভিনেতা : দিলদার (তুমি শুধু আমার)
৮. সেরা শিশু শিল্পী : প্রিয়াঙ্কা (কখনো মেঘ কখনো বৃষ্টি)
৯. সেরা গীতিকার : গাজী মাজহারুল আনোয়ার (কখনো মেঘ কখনো বৃষ্টি)
১০. সেরা গায়ক : বশির আহমেদ (কখনো মেঘ কখনো বৃষ্টি)
১১. সেরা গায়িকা : বেবী নাজনীন (সাহসী মানুষ চাই)
১২. সেরা চিত্রগ্রাহক : মাকসুদুল বারী(আধিয়ার)
১৩. সেরা শিল্প নির্দেশক : কলন্তর (দুই বধূ এক স্বামী)
২০০৪ : প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার আমজাদ হোসেনের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক উপন্যাস ‘অবেলায় অসময়’ অবলম্বনে জনপ্রিয় অভিনেতা তৌকীর আহমেদ নির্মাণ করেন ‘জয়যাত্রা’। ছবিটি সর্বোচ্চ ৭টি শাখায় জাতীয় পুরস্কার লাভ করে। মোটামুটি বিতর্কে না গিয়ে সেই সময়ের জুরি বোর্ড পুরস্কার ঘোষণা করে।
তবে মেঘের পরে মেঘের জন্য রিয়াজ,পূর্ণিমার পুরস্কার না পাওয়ায় অনেকেই হতাশ হন। এছাড়া এই বছর সেরা গায়িকা, সংলাপ রচয়িতা বিভাগে পুরস্কার প্রদান হয়নি। মোট ১৫টি শাখায় পুরস্কার প্রদান করা হয়—
১. সেরা চলচ্চিত্র : জয়যাত্রা
২. সেরা পরিচালক : তৌকীর আহমেদ (জয়যাত্রা)
৩. সেরা কাহিনীকার : আমজাদ হোসেন (জয়যাত্রা)
৪. সেরা চিত্রনাট্যকার : তৌকীর আহমেদ (জয়যাত্রা)
৫. সেরা সঙ্গীত পরিচালক : সুজেয় শ্যাম (জয়যাত্রা)
৬. সেরা অভিনেতা : হুমায়ূন ফরিদী (মাতৃত্ব)
৭. সেরা অভিনেত্রী : অপি করিম (ব্যাচেলর)
৮. সেরা সহ অভিনেতা : ফজলুর রহমান বাবু (শঙ্খনাদ)
৯. সেরা সহ অভিনেত্রী : চাঁদনী (জয়যাত্রা)
১০. সেরা শিশু শিল্পী : অমল সাহা (দূরত্ব)
১১. সেরা গায়ক : সুবীর নন্দী (মেঘের পরে মেঘ)
১২. সেরা চিত্রগ্রাহক : রফিকুল বারী চৌধুরী (জয়যাত্রা)
১৩. সেরা সম্পাদক : জুনায়েদ হালিম (শঙ্খনাদ)
১৪. সেরা শিল্প নির্দেশক : উত্তম গুহ (লালন)
১৫. সেরা রুপসজ্জাকর : ম.ম.জসীম (এক খণ্ড জমি)