‘কখনোই দাবি করি নাই হুমায়ূনের বায়োপিক বানাচ্ছি’
কলকাতার সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা শুক্রবার জানায়, প্রয়াত হুমায়ূন আহমেদের জীবনী অবলম্বনে নির্মিত হয়েছে মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ‘ডুব’ (নো বেড অব রোজেস)। এতে হুমায়ূনের চরিত্রে অভিনয় করেছেন ইরফান খান, মেয়ে শিলা আহমেদ হয়েছেন নুসরাত ইমরোজ তিশা। প্রথম স্ত্রী গুলতেকিন খান হয়েছেন রোকেয়া প্রাচী ও দ্বিতীয় স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন চরিত্রে অভিনয় করেছেন কলকাতার অভিনেত্রী পার্নো মিত্র।
শুক্রবার সকালে ফেসবুক স্ট্যাটাসে ফারুকী জানান– ছবির ক্রেডিট বা ক্যাম্পেইনে বা কমিউনিকেশন ম্যাটেরিয়েলে আমরা কখনোই দাবি করি নাই বা করার কোনো সম্ভাবনাও নাই যে ‘আমরা হুমায়ুন আহমেদের বায়োপিক বানাচ্ছি”। আমরা কোনো বায়োপিক বানাচ্ছি না। পিরিয়ড ।
এবার পড়ে নিন ফারুকী পুরো স্ট্যাটাসটি–
“ফারুকীর ছবিতে যদি লেখা থাকে ‘এটা হুমায়ূন আহমেদের জীবন অবলম্বনে’ তা হলে অবশ্যই ওর আমাদের কাছ থেকে পারমিশন নেওয়া উচিত ছিল। কিন্তু ও যদি কয়েকটা ঘটনা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে ছবিটা বানায়, সে ব্যাপারে আমার কিছু বলার নেই। তবে ফারুকী যে বাবাকে, বাবার লেখাকে অসম্ভব ভালবাসে সেটা আমি জানি। এখন ছবিটা দেখেই যা বলার বলব” – শীলা আহমেদ ।
1) আমি মনে করি শীলার মন্তব্য এই বিষয়ে শেষ কথাটা বলে দেয়। আমাদের তরফ থেকে আমি পরিষ্কার করে বলছি, ছবির ক্রেডিট বা ক্যাম্পেইনে বা কমিউনিকেশন ম্যাটেরিয়েলে আমরা কখনোই দাবি করি নাই বা করার কোনো সম্ভাবনাও নাই যে ‘আমরা হুমায়ুন আহমেদের বায়োপিক বানাচ্ছি”। আমরা কোনো বায়োপিক বানাচ্ছি না। পিরিয়ড ।
2) শীলার প্রতি কৃতজ্ঞতা হুমায়ুন আহমেদের প্রতি আমার ভালোবাসা লক্ষ্য করার জন্য । আসলেই হুমায়ূন এবং তার পরিবারের সদস্যরা ভালবাসার অদ্ভুত যাদুবলে আমাদের অনেকের পরিবারের সদস্যই যেনো হয়ে উঠেছিলেন । তাদের ব্যক্তিগত সুখ দুঃখ তাই আমাদের স্পর্শ করেছিলো তীব্র ভাবে। আমি সহজে আমার চোখের জল ফেলি না। এবং পাবলিক স্পেসে তো আবেগ দেখানোর প্রশ্নই আসে না। কিন্ত তার মৃত্যু আর মৃত্যু পরবর্তী কয়টা দিন আমার সেই কাঠিন্য টলিয়ে দিয়েছিলো ।
আমি তখন সিউলে। ইমাম লি’র গাড়ীতে রিপিট মোডে বাজা “হোয়াইল মাই গিটার জেন্টলি উইপস”, গাড়ীর কাঁচে অসময়ের বৃষ্টি, আর গাড়ির ভেতর তিন বঙ্গ সন্তানের আর্দ্র চোখ। এটার নামই ভালোবাসা। এই ভালোবাসার কথাই কি শীলা বলেছেন?
3) আনন্দবাজারকে ধন্যবাদ হুমায়ুন আহমেদের দুই পরিবারেরই ইন্টারভিউ নেয়ার জন্য । আমাদের টেলিভিশন আর পত্র পত্রিকা দেখলে তো মনেই হয় না যে প্রথম পরিবারটা পৃথিবীতে এক্জিস্ট করে। হ্যাঁ আমি বুঝি, প্রবল আত্মসম্মান বোধ এবং অভিমান থেকে উনারা দুরে থাকেন। পাশপাশি এটাও সত্য হুমায়ূনের যাবতীয় স্মৃতির উত্তরাধিকার হিসাবে তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রীকে জনমানসে প্রতিষ্ঠিত করার একটা মিশনও বোধ হয় এখানে চলমান। তবে, ভাববেন না আমি কেবল উনার প্রথম পরিবারের ব্যাথায় কাতর। এক লেখায় আমি লিখেছিলাম আমি শাওন এবং তার সন্তানদের বেদনা অনুভব করেও কাঁদছি।
জীবন অনেক জটিল । এখানে কোনো চির নায়ক, চির ভিলেন নাই। আহারে জীবন, আহা জীবন।”