ঢালিউডে স্থবিরতা, দুই মাসে একটি ছবির মুক্তি!
ঈদুল ফিতরে দুটি ভারতীয় সিনেমা মুক্তির জোর চেষ্টা চলেছে। কিন্তু আদালতের আদেশে পিছু হটতে বাধ্য হয়। আর সেই সিনেমায় দুই ঈদের মাঝে বড় রিলিজ ঢালিউডে। দেখা নেই দেশিয় কোনো সিনেমার।
এক সময় বাংলাদেশে প্রতি সপ্তাহে সিনেমা মুক্তি পেলেও এখন মাস পেরিয়ে গেলেও নতুন সিনেমার দেখা মিলছে না। বছরের শুরু হয়েছে এভাবে। আর দুই ঈদের মধ্যখানের সময় দেখিয়ে দিল অবস্থা কতটা শোচনীয়।
দুই ভারতীয় ছাড়া একমাত্র রিলিজ বলতে গেলে প্রবাসী নির্মাতা রাহশান নূরের ‘বেঙ্গল বিউটি’। তাও আবার মাত্র একটি হলে কোনোভাবে এক সপ্তাহ প্রদর্শিত হয়েছে সিনেমাটি। যদিও অনেকে বলছেন, নির্মাতা অনেক পরিবেশকের কাছে গিয়ে প্রতারিত হয়েছেন। এছাড়া মাঝে মুক্তি পেয়েছে ‘প্রেমিক ছেলে’ নামের সিনেমা। নির্মাণ ও অন্যান্য বিষয় মিলিয়ে সিনেমাটি সি গ্রেডে পড়ে। তাই আলোচনাও হয়নি।
তবে একেবারে যে ছবি মুক্তির পরিকল্পনা কারো ছিল না এমন নয়। ঘোষণা এসেছিল ২৭ জুলাই মুক্তি পাবে মোস্তাফিজুর রহমান মানিকের ‘জান্নাত’ ও অভি মিনহাজের ‘মেঘকন্যা’। কিন্তু পরপর ভারতীয় সিনেমা মুক্তির কারণে পিছিয়ে যায় দুই নির্মাতা। এখন শোনা যাচ্ছে, ‘জান্নাত’ মুক্তি পাবে ঈদুল আজহায়।
আর ভারতীয় সিনেমা দুটি মোটামুটি ব্যবসাও করছে। ঈদের পর আবার খানিকটা আর্থিক লাভের দেখা পাচ্ছেন হল মালিক। অবস্থা এমন চলছে তারা আবার ভারতীয় সিনেমা আমদানির রা তুলবেন।
প্রযোজক ও পরিবেশক সমিতির নিবন্ধন খাতায় ঈদুল আজহা পর্যন্ত বেশ কিছু দেশি ছবি মুক্তির পাওয়া যায়। ‘জান্নাত’ ছাড়াও ছিল ‘আমার প্রেম আমার প্রিয়া’, ‘লিডার’, ‘ফিফটি ফিফটি লাভ’ ও ‘চল যাই’। কিন্তু কোনো ছবিই নির্ধারিত দিনে মুক্তি পাচ্ছে না।
৩ আগস্ট ‘আমার প্রেম আমার প্রিয়া’ ছবিটি মুক্তির কথা ছিল। এই ছবির পরিচালক শামীমুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমদানি করা বড় বাজেটের ছবিগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় যাওয়ার ইচ্ছা নেই। তাই ছবির মুক্তি পিছিয়েছি।’
তবে সিনেমার এ সংকট নিয়ে সুস্পষ্ট বক্তব্য নেই শীর্ষস্থানীয় সমিতি সংশ্লিষ্টদের। যেমন পরিচালক সমিতির মহাসচিব বদিউল আলম বলেন, ‘সত্যি কথা যে বড় বাজেটের ছবির সংখ্যা কিছুটা কমেছে। যে ছবি হচ্ছে, সেগুলো উত্সবকে কেন্দ্র করে তৈরি হচ্ছে। এর বাইরে কম বাজেটের ছবিগুলোর প্রতি পরিবেশক ও হলের মালিকেরা উত্সাহ দেখান না। তাই ঈদ-পরবর্তী সময়টায় একধরনের শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে।’
যদিও বলা হয়ে থাকে দুই ঈদের মাঝে সিনেমার ব্যবসা জমে না। কিন্তু এ ধরনের শূন্যতা আগে দেখা যায়নি। এছাড়া সিনেমা নির্মাণ কমে যাওয়া থেকে বোঝা যায় এ ধরনের সংকট ঈদের পরেও থাকবে। কারণ মুক্তির ঘোষণায় আছে ‘দেবী’ বা ‘রাত্রির যাত্রী’র মতো হাতের গোণা কয়েকটি সিনেমার। অন্যদিকে শোনা যাচ্ছে বেশ কিছু ভারতীয় ছবি আমদানির।