তিনকন্যা এক ছবি (ফটো অ্যালবাম)
প্রয়াত শিবলী সাদিক পরিচালিত জনপ্রিয় চলচ্চিত্র ‘তিনকন্যা’। ওই চলচ্চিত্রের মাধ্যমে আন্তজার্তিক খ্যাতিসম্পন্ন নায়িকা চম্পার অভিষেক। আরও বড় চমক ছিল এক চলচ্চিত্রে তিন বোন সুচন্দা, ববিতা ও চম্পা একত্রে অভিনয়। সে চলচ্চিত্রে একটি গানও ছিল ‘তিন কন্যা এক ছবি’।
বহু বছর পর সে গানটি মনে করিয়ে দেয় সাম্প্রতিক বাচসাস পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানের একটি ছবি।
বাচসাস ৩৮তম আসরের পুরস্কার বিজয়ী ছিলেন ববিতা (২০১২) ও চম্পা (২০১৩)। তাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন সুচন্দা। আগে তাদের চলচ্চিত্র শিল্পীদের পিকনিক বা অন্যান্য অনুষ্ঠানে দেখা গেলেও এই প্রথম এত বড় অনুষ্ঠানে এক ফ্রেমে বন্দি হলেন। যা বাংলা চলচ্চিত্রের জন্য স্মরণীয় মুহূর্ত।
২০১১ ও ২০১২ সালে সেরা পাশ্বচরিত্র হিসেবে নির্বাচিত হন ববিতা ও চম্পা। তাদের হাতে পুরষ্কার তুলে দেওয়ার জন্য মঞ্চে আহ্বান করা হয় তাদেরই বড় বোন এক সময়ের জনপ্রিয় অভিনেত্রী সুচন্দাকে। তাদেরকে মঞ্চে নিয়ে আসেন বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় দুই অভিনেত্রী পপি ও মাহিয়া মাহি। ববিতা ও চম্পা তাদের অনুভূতিতে জানান, এর আগেও অনেক পুরষ্কার তারা পেয়েছেন কিন্তু আজকের এই পুরষ্কার তাদের জীবনে অনন্য কারন পুরষ্কারটি তারা গ্রহন করছেন তাদেরই বড় বোন অভিভাবক তুল্য সুচন্দার হাত দিয়ে।
সুচন্দা তার অনুভূতিতে বলেন, আজ তিনি অনেক খুশি। যেই হাত দিয়ে একদিন ছোট বোনদের খাওয়াতেন, মা মারা যাওয়া পরে যে হাত দিয়ে অভিভাবক হয়ে ছোট বোনদের ধরেছিলেন, যেই হাত ধরে এতদিন ববিতা ও চম্পা ঢাকার চলচ্চিত্রে এসেছিলেন, সেই হাত দিয়েই আজ ছোট বোনদের পুরস্কৃত করছেন।
সুচন্দা তার অনুভূতিতে বলেন, আজ তিনি অনেক খুশি। যেই হাত দিয়ে একদিন ছোট বোনদের খাওয়াতেন, মা মারা যাওয়া পরে যে হাত দিয়ে অভিভাবক হয়ে ছোট বোনদের ধরেছিলেন, যেই হাত ধরে এতদিন ববিতা ও চম্পা ঢাকার চলচ্চিত্রে এসেছিলেন, সেই হাত দিয়েই আজ ছোট বোনদের পুরস্কৃত করছেন।
এই সময় স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে কেদে পেলেন সুচন্দা, তখন বড় বোন ধরে ববিতা ও চম্পাকেও কাদতে দেখা যায়। পুরু অনুষ্ঠানের অতিথি ও দর্শকরা যেন একটি ঐতিহাসিক মুহুত্ব তখন দেখে এবং সমগ্র পরিবেশ তখন কিছুটা সময়ের জন্য নিরব হয়ে যায়।
এই তিন বোনকে তখন সন্মান জানাতে অুনষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি ও দর্শকরা উঠে দাড়িয়ে করতালির মধ্য দিয়ে সন্মানিত করেন।
এর আগে ক্যান্সার সচেতনতা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করছেন সুচন্দা, ববিতা ও চম্পা।
সুচন্দার আসল নাম কহিনুর আখতার। সুচন্দা ১৯৬৫ সালে অভিনয় শুরু করেন। সুভাষ দত্ত পরিচালিত কাগজের নৌকা চলচ্চিত্রের মাধ্যমে ১৯৬৬ সালে তার সিনেমায় অভিষেক ঘটে। পরবর্তীকালে, ১৯৬৭ সালে হিন্দু পৌরাণিক কাহিনী নিয়ে সিনেমা বেহুলায় অভিনয় করেন। এরপর বেশ কিছু জনপ্রিয় চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন।
ববিতার মূল নাম ফরিদা আক্তার পপি। তিনি ১৯৫৩ সালে বাগেরহাট জেলায় জন্ম নেন। বড়বোন সুচন্দা অভিনীত জহির রায়হানের সংসার চলচ্চিত্রে শিশুশিল্পী হিসেবে ববিতার আত্মপ্রকাশ ঘটে ১৯৬৮ সালে। ওই চলচ্চিত্রে তিনি রাজ্জাক-সুচন্দার মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করেন। চলচ্চিত্র জগতে তাঁর প্রাথমিক নাম ছিলো ‘সুবর্ণা’। জহির রায়হানের ‘জ্বলতে সুরুজ কি নিচে’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করতে গিয়েই তার নাম ‘ববিতা’ হয়ে যায়। ১৯৬৯ সালে ‘শেষ পর্যন্ত’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন প্রথম নায়িকা চরিত্রে। সত্যজিত রায়ের ‘অশনি সংকেত’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে আন্তর্জাতিক খ্যাতি পান।
শিবলী সাদিক পরিচালিত ‘তিনকন্যা’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে গুলশান আরা আক্তার চম্পা চলচ্চিত্রের জগতে আগমন করেন। সন্দ্বীপ রায়ের ‘টার্গেট’ সিনেমাতে এবং বুদ্ধদেব দাশ গুপ্তের ‘লালদরজা’ সিনেমাতে অভিনয় করার সুযোগ পান। এভাবে তিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও নিজেকে মেলে ধরেছিলেন।গৌতম ঘোষ পরিচালিত ‘পদ্মা নদীর মাঝি’ চলচ্চিত্র ছিল তাঁর সবচেয়ে বড় মাপের কাজ।
তাদের বাবা নিজামুদ্দীন আতাউব একজন সরকারি কর্মকর্তা ছিলেন ও মা বি. জে. আরা ছিলেন একজন চিকিৎসক।
এবার দেখে নিই বিখ্যাত সেই গান-
[ব্যবহৃত তথ্য, ছবি ও ভিডিও অনলাইন থেকে সংগৃহীত]