তুফান: শত কোটির প্রত্যাশা ও লুকানো এক তাসের সম্ভাবনা
ঢালিউডে ‘১০০ কোটি’ শব্দটি অনন্ত জলিলের বদৌলতে লোকমুখে বিস্তার লাভ করেছিল। ‘দিন দ্য ডে’র বিতর্কিত এ দাবির পর প্রায় শত কোটি টাকা নির্মাণ ব্যয়ে নির্মিত ‘এমআর নাইন’ ও ‘মুজিব- একটি জাতির রূপকার’ও মুক্তি পেয়েছে গত বছর। এবার অবশ্য ১০০ কোটি টাকা ব্যয় নয়। এমন খবর শোনা না গেলেও, ১০০ কোটি টাকা আয়ের নিঃসঙ্কোচ প্রত্যাশা ধ্বনিত হয়েছে ঈদুল আজহায় মুক্তিপ্রতীক্ষিত ‘তুফান’ ছবির পরিচালক রায়হান রাফীর কণ্ঠে।
ইন্ডাস্ট্রির সাম্প্রতিক সময়ের সেরা পরিচালক, একমাত্র জেনুইন সুপারস্টার, সফল টেকনিক্যাল টিম, সঙ্গে মুক্তির আগেই দর্শকদের আগ্রহ- রায়হান রাফীর কণ্ঠে আত্মবিশ্বাসের প্রাধান্য থাকা অমূলক নয়।
২০১৯ সালের ‘পাসওয়ার্ড’-এর পর শাকিব খান যেন এক গণ্ডির মধ্যে আবদ্ধ হয়ে পড়েছিলেন। মনের মতো মানুষ পাইলাম না, শাহেনশাহ, বিদ্রোহী, গলুই, লিডার আমিই বাংলাদেশ— ছবিগুলোর মতোই আপ টু দ্য মার্ক ছিলেন না শাকিব খান। অবশেষে নিজেকে ভেঙে গড়ার পদক্ষেপে সৃষ্টি হলো ‘প্রিয়তমা’র মতো অল টাইম ব্লকবাস্টার। এই পদক্ষেপে নতুন যোগ হচ্ছে ‘তুফান’, যেখানে কারিগর রায়হান রাফীর দাবার বোর্ডে ঘুটি হিসেবে রয়েছেন মাসুমা রহমান নাবিলা, কলকাতার মিমি চক্রবর্তী ও যীশু সেনগুপ্ত।
এ সিনেমায় একটি লুকানো তাসও থাকতে পারে। এই তাসটি হতে পারেন আফরান নিশো। ‘তুফান’ সিনেমার কাহিনী কেমন হতে পারে তা নিয়ে বেশ গুজব ভাসছে। শোনা যাচ্ছে, নব্বই দশকের কুখ্যাত সুব্রত বাইনের জীবনকাহিনীর ওপর ভিত্তি করেই নির্মিত হচ্ছে সিনেমাটি।
এই শীর্ষ সন্ত্রাসী ২০১২ সালে নেপালের জেল হতে পলায়ন করেন ৭৭ ফুট সুড়ঙ্গ খুঁড়ে। এই সুড়ঙ্গের যোগ সূত্র ধরেই আফরান নিশোর থাকার সম্ভাবনা প্রতীয়মান হচ্ছে। ‘সুড়ঙ্গ’ ছবিতে মাসুদ যখন জেল থেকে সুড়ঙ্গ খুঁড়ে পালায়, তখন তার সাথে আরো কয়েকজনও যোগ দেয়। হতেই পারে, ‘তুফান’ ছবির শাকিব খান বা সুব্রতও ‘সুড়ঙ্গ’ ছবির মাসুদের সাথে জেল থেকে পালিয়েছিল।
আরো একটি প্রসঙ্গ শোনা যাচ্ছে, তুফানের শাকিব খানের দুইটি বয়সের চরিত্র থাকবে, একটি নব্বই দশকের,আরেকটি সাম্প্রতিক সময়ের। সাম্প্রতিক টাইমস্পানে মাসুদ ও মধ্যবয়সী সুব্রতের জেলে দেখা হওয়া, সুড়ঙ্গ খনন— দুইয়ে দুইয়ে চার মিলালে অন্তত ক্যামিও চরিত্রে আফরান নিশোর উপস্থিতির সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়ে উঠছে।
মাসুমা রহমান নাবিলাও এক্স ফ্যাক্টর হতে পারেন। আয়নাবাজি হইচইয়ে মুক্তি পাওয়ার পর নতুন দর্শকরা নিশ্চিতভাবেই নাবিলায় মুগ্ধ হয়েছেন। এই নাবিলা কেন সিনেমা করছেন না- সে প্রশ্নের উত্তরও তারা যখন খুঁজেছেন, তখন তাদের সামনে উত্তর হয়ে এসেছে ‘তুফান’। এক শ্রেণীর দর্শক মূলত নাবিলাকে দেখার জন্যই যাবে। এক্স ফ্যাক্টর হিসেবে উপস্থিতির ফলাফল সামান্য হলেও গুরুত্বহীন হবে না।
‘তুফান’ সিনেমার নান্দনিক ও সুস্থ নির্মাণ কামনা করছি। নতুন এক মাইলফলকের অপেক্ষায় সিনেমাপ্রেমীরা।
- এ লেখায় মতামতের সঙ্গে সিনেমার গল্প সম্পর্কিত কিছু অনুমান রয়েছে, যা বিএমডিবি যাচাই করে দেখেনি- ব্লগ সম্পাদক