
‘ধুমধাড়াক্কা সিনেমা অনেক হয়েছে’ বলে নতুন দুই ছবির ঘোষণা শাকিব খানের
নিজের কাজ নিয়ে আজকাল খুব একটা মিডিয়ায় কথা বলেন না শাকিব খান। প্রযোজক-পরিচালক ও এ নায়কের ঘনিষ্ঠ সাংবাদিক সূত্রে যতটা খবর মেলে। এছাড়া গুজব-গুঞ্জন তো রয়েছেই। এবার নিজের পরবর্তী দুই সিনেমার খবর জানিয়ে বললেন, ধুমধাড়াক্কা গল্পের বাইরে আলাদা কিছু করতে চান।

সমকালকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেয়া সাক্ষাৎকার শাকিব খান বলেন, “ধুমধাড়াক্কা সিনেমা তো অনেক হয়েছে। এবার একটু অন্য ধরণের স্টোরি বেইজ সিনেমা আনতে চাই। সেভাবে প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে এবং কাজ আগাচ্ছে। নেক্সট আসছে সাকিব ফাহাদের পরিচালনায় ‘সোলজার’, যেটা এই ডিসেম্বরে রিলিজের প্ল্যান আছে এবং পরবর্তীতে আবু হায়াত মাহমুদের পরিচালনায় ‘প্রিন্স’ রিলিজ হবে ঈদুল ফিতরে। আরো কয়েকটা সিনেমার স্টোরির কাজ চলছে। সবকিছু লক হলে জানতে পারবেন। সবগুলো সিনেমা স্টোরি থেকে শুরু করে সবকিছুই ভিন্ন রকমের। এর বাইরে চমকপ্রদ কিছু খবর আছে, ধীরে ধীরে সবাই তা জানতে পারবেন।”
ঈদুল আজহার পর যুক্তরাষ্ট্রে উড়াল দেন শাকিব খান। বর্তমানে সেখানেই আছেন তিনি, সঙ্গে শবনম বুবলি ও তাদের সন্তান শেহজাদ।
সম্প্রতি শেখ মুজিবুর রহমানের প্রয়াণ দিবসে শোক জানিয়ে বিতর্কের মুখে পড়েন শাকিব খান। ফ্যাসিবাদীবিরোধী আন্দোলনকারীদের একটি অংশ তাকে ‘কালচারাল ফ্যাসিস্ট’ বলেও উল্লেখ করে আরো অনেকের সঙ্গে। তেমন এক প্রেক্ষাপটে শাকিব খানের এ সাক্ষাৎকার। বিষয়টি নিয়ে তিনি বলেন, ‘দেখুন এখন আমাদের দেশে তো সব সেক্টরে সংস্কার চলছে। বিশ্বাস ছিল আমাদের চিন্তা ভাবনাতেও এই সংস্কার প্রতিফলিত হবে। এমন প্রেক্ষাপটে দলমত নির্বিশেষে, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সকল শহীদদের যেমন স্মরণ করা উচিত তেমনি দেশের জন্য অতীতে যারা ত্যাগ স্বীকার করেছেন জাতির সেইসব শ্রেষ্ঠ সন্তানদেরও সম্মান জানানো উচিত। তাদের স্মরণে শ্রদ্ধা প্রদর্শন কোনো রাজনৈতিক দলের সীমাবদ্ধতায় আবদ্ধ থাকা উচিত নয়। জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানেরা সবসময় রাজনীতির ঊর্ধ্বেই থাকুক। দুঃখজনকভাবে অনেক সময় আমাদের জাতির এই শ্রেষ্ঠ সন্তানদের নাম, সম্মান এবং ত্যাগ শুধুমাত্র রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়। এটা থেকে আমাদের বিরত থাকা উচিত। যারা আমাদের দেশ ও মানুষের জন্য জীবনের সর্বস্ব দিয়েছেন, তাদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা আমাদের সবার নৈতিক দায়িত্ব। তাদের নিয়ে বিভাজন তৈরি নয়, বরং আমাদের সম্মিলিত একতা ও সংহতি গড়ে তোলা উচিত। দেখুন আমি শাকিব খান কখনও কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলাম না। কোনো রাজনৈতিক পদ বা দায়িত্বও আমার নেই।’
এমনকি বিগত সময়ে রাজনৈতিক কারণে বাধার সম্মুখীন হওয়ার দাবিও করেন তিনি। শাকিব বলেন, ‘বিগত বছরগুলোতে বিভিন্ন সময়ে আমাকে রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হওয়ার অফার করা হয়েছে, কিন্তু শুধুমাত্র সিনেমার কথা ভেবে আমি সচেতনভাবে এড়িয়ে গিয়েছি। এমনকি কোনো ধরণের পলিটিক্যাল সুযোগসুবিধা নেইনি। বরং অনেকসময় আমাকেই কর্ম থেকে ব্যক্তিজীবনে পলিটিক্যাল লোক দ্বারা অনেক বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে সেটা তো সংবাদমাধ্যমের কল্যাণে কারো অজানা থাকার কথা নয়। সম্প্রতি দেওয়া আমার পোস্ট কাউকে মনঃক্ষুণ্ণ করার কোনো উদ্দেশ্য ছিল না। যারা এটাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন ন্যারেটিভ খুঁজছেন তা মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়। আমার শ্রদ্ধা, ভালোবাসা এবং কর্ম সবসময় দেশ ও দেশের মানুষের জন্য।’
সম্প্রতি শাকিব খানের সিনেমাগুলো মুক্তির অল্পদিন পরই পাইরেসির শিকার হচ্ছে। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সরকারের দায়িত্বশীল পদে যারা আছেন, তাদের এব্যাপারে সুদৃষ্টি প্রয়োজন। কঠোর হওয়া প্রয়োজন এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির উদাহরণ সৃষ্টি করতে হবে। পাইরেসির যারাই করছে বিষয়টি ইনটেনশনালি এবং পরিকল্পিতভাবে করছে মনে হয়! সিনেমাকে পাইরেসি করে আমার একার ক্ষতি করছে না, পুরো ইন্ডাস্ট্রিরই ক্ষতি করছে।’
এছাড়া শুধু ঈদে সিনেমা মুক্তি পাওয়ায় সিঙ্গেল স্ক্রিন সারা বছর খরা ভুগতে ভুগতে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে; এ প্রসঙ্গে শাকিব খান বলেন, ‘প্রযোজক, পরিবেশক এবং হলমালিকদের অনুরোধে এজন্যই তো ঈদ ছাড়াও সিনেমা করছি, যাতে ঈদের বাইরেও সিংগেল স্ক্রিনগুলো চাঙ্গা থাকে। আসলে ভালো সিনেমার মাধ্যমে বিনোদিত করতে পারলে ঈদের বাইরেও দর্শকরাই হলে ফ্যামিলি নিয়ে এসে ফেস্টিভ্যাল ভাইব ক্রিয়েট করেন। এজন্য প্ল্যান করেছি, বছরে তিনটি ভালো সিনেমা করবো এবং করছিও।’