নব্বই দশকের গ্ল্যামারাস নায়িকা রাণী
নায়িকা রাণী… নব্বই দশকের গ্ল্যামারাস নায়িকা ছিলেন তিনি, আবেদনময়ীও বলা যায়।
অভিনীত ছবি: আঁখি মিলন, দাঙ্গা ফ্যাসাদ, সালমা, বদনসীব, আগুন পানি, পাষাণ, প্রেম লড়াই, চোর, আজকের শয়তান, গোলামীর জিঞ্জির, জীবন দিয়ে ভালবাসি, বৃষ্টি বাদল, কলিজার টুকরা, অবুঝ সন্তান, বশিরা, শত্রুতা, প্রমাণ, বিদ্রোহী সন্তান, পরীস্থান, শাহী খানদান, আদেশ, দাগী, যাদু মহল, নির্যাতন, ঘর ভাঙা ঘর, চাচা ভাতিজা, পুষ্পমালা, দুলারী, ভাগ্যবতী, ঈমানদার, বড় ভাই, রানী আমার নাম, প্রতিঘাত, কঙ্কর, জবানবন্দী, অমর বন্ধন, দেশ দুশমন, স্বামীর আদেশ, বীর বিক্রম, বিষদাঁত, ছোট বৌ, অবদান, অবহেলা, মালামাল, জিপসী সর্দার, বিষকন্যার প্রেম, রুবেল আমার নাম, অধিনায়ক, উত্তর দক্ষিণ, ধনবান, বউ শ্বাশুড়ি, নরম গরম, ভরসা, স্বপ্ন কুমার, মেঘমালা, জবরদস্ত, ইনসাফ, শ্রদ্ধা, বাবার আদেশ, রাখাল রাজা, ঘরের সুখ, রাজা কেন সন্ত্রাসী, সন্ধান, স্বপ্ন, শাস্তির বদলে শাস্তি, সন্ত্রাস, খুনের বদলে খুন, নাগরদোলা।
সামাজিক-পারিবারিক ছবিতে কাজ করেছে সবচেয়ে বেশি। তার অভিনয়ের গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো হাসি। হাসিটা খুবই সুইট ছিল। মুচকি হাসিতে যে এক্সপ্রেশনগুলো দিত সেগুলোই ভালো লাগত।
রাণীর জুটি ছিল জসিম, ইলিয়াস কাঞ্চন, মান্না ও রুবেলের সাথে তবে তাদের সবার সাথেই গুটিকয়েক ছবিতে জুটি ছিল।
‘স্বামীর আদেশ’ ছবিতে জসিমের প্রেমিকা ও স্ত্রীর ভূমিকায় ছিল। এ ছবির অসাধারণ একটি সিকোয়েন্সে শাবানা তাঁর দেবর জসিমের ছেলেকে বাঁচাতে নিজের মেয়ে অন্তরাকে বিসর্জন দেয়। পরে নিজে মারা যায়। জসিম এসে ভাস্তিকে মৃত দেখে বলে ‘ভাবী আমাদের ছুটকি মারা গেছে ভাবী। ও আর চাচ্চু চাচ্চু বলে আমার বুকে ঝাঁপিয়ে পড়বে না।’ এ সময় রাণী কাঁদতে থাকে। শাবানা কথা না বলাতে জাগাতে গেলে লাশটি মাটিতে পড়ে যায়। এসময় জসিম ও রাণী দুজনের এক্সপ্রেশন ছিল অসাধারণ।
ইলিয়াস কাঞ্চনের বিপরীতে ‘বিদ্রোহী সন্তান’ ছবিতে ভাইটাল ছিল রাণী। রাজিব তার ইলেকশনের পোস্টারে ফুলের মালা পরিয়ে দিতে বললে রাণী আগুন ধরিয়ে দেয় এবং ঐ সময় অ্যাংরি এক্সপ্রেশন ছিল দেখার মতো।
‘বশিরা’ ছবিতে মান্না প্রতিশোধ নিতে থাকে তার সাথে অন্যায় করা রাজিবের গুণ্ডাদের মেরে। শেষ দৃশ্যে রাজিব কফিনে করে মান্নার লাশ নিয়ে আসে দাফন করার জন্য আর সেটা করা হয় মান্নার স্ত্রী রাণীকে দিয়ে। রাণীর ঐ সময়ের অভিনয় চমৎকার ছিল। তবে ফিনিশিং-এ মান্নার কারিশমা দেখে রাজিব, রাণী সবাই অবাক কারণ মান্না মারা যায়নি।
রাণীর উল্লেখ করার মতো গান সেভাবে নেই। তবে ‘অবদান’ ছবির ‘মন একবার ভালোবাসে যারে’ জনপ্রিয়। জাফর ইকবালের বিপরীতে ছিল। এর বাইরে ‘বিদ্রোহী সন্তান’ ছবির ‘তোমাকে আমি ভালোবাসি/এ কথার আগে পরে কোনো কথা নেই’ গানটি চমৎকার।
রাণী তার সময়ের ব্যস্ত নায়কদের সাথেই ছবি করেছে। নিজের একটা পরিচিতি গড়তে পেরেছিল। তার কাজগুলোর মধ্যেই রাণী বেঁচে থাকবে চলচ্চিত্রে।