Select Page

‘নোনা জলের কাব্য’ মুক্তি পাচ্ছে ২৬ নভেম্বর (ট্রেলার)

‘নোনা জলের কাব্য’ মুক্তি পাচ্ছে ২৬ নভেম্বর (ট্রেলার)

রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত পরিচালিত ‘নোনা জলের কাব্য’ দেশে মুক্তি পাচ্ছে ২৬ নভেম্বর। একাধিক আন্তর্জাতিক উৎসবে প্রদর্শিত এ ছবি আরও দুটি আয়োজনে অংশ নিচ্ছে।

স্কটল্যান্ডের গ্লাসগো শহরে অনুষ্ঠিতব্য জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক জলবায়ু সম্মেলনে ছবিটি প্রদর্শিত হবে ২৯ অক্টোবর ও ৮ নভেম্বর। এই সম্মেলনে পৃথিবীর প্রায় সকল দেশের রাষ্ট্র প্রধানরা অংশগ্রহণ করবেন। যাচ্ছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও।  

এ ছাড়া দেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির আগে সিনেমাটি শুটিং এলাকা পটুয়াখালীর প্রত্যন্ত জেলেপাড়ার প্রায় ২০০ পরিবারকে দেখানো হবে।

তিতাশ জিয়া ও দীপান্বিতা মার্টিন

২৩ অক্টোবর সকালে রাজধানীর ঢাকা ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন সিনেমা সংশ্লিষ্টরা।

দেশের সমুদ্র উপকূলবর্তী প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রান্তিক জেলেদের দৈনন্দিন জীবনযাপন, আবহাওয়ার প্রতিকূলতার মুখে টিকে থাকার লড়াই এবং তাদের সামাজিক রীতিনীতি ও সংস্কার এই চলচ্চিত্রের মূল বিষয়। সমাজ, সংস্কৃতির উন্নয়ন এবং পরিবেশের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন রোধে সচেতনতা বৃদ্ধিতে চলচ্চিত্র তথা বিনোদন অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে পারে– এই বিশ্বাস নিয়েই সুমিত নির্মাণ করেছেন ‘নোনা জলের কাব্য’।

তিনি বলেন, ‘ছবিটি নির্মাণ করতে আজ থেকে তিন বছর আগে আমি গিয়েছিলাম পটুয়াখালীর প্রত্যন্ত এক জেলেপাড়ায়। খুবই দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, উপকূলবর্তী সেই গ্রামটির এখন আর কোনও অস্তিত্ব নেই। মহামারির কারণে প্রায় দেড় বছর আমার সেখানে যাওয়া হয়ে ওঠেনি, কিন্তু এবার যখন পরিচিত সেই জায়গার খোঁজে, প্রিয় সেই মানুষগুলোর খোঁজে গেলাম, গিয়ে দেখি সেখানে কেবলমাত্র কিছু গাছপালা ভেঙে পড়ে রয়েছে। জানতে পারলাম, এই অঞ্চলে গত ২-৩ বছর ধরে সমুদ্রের পানির উচ্চতা খুব দ্রুত গতিতে বাড়ছে।’

টিম ‘নোনা জলের কাব্য’র কয়েকজন

নির্মাতা আরও বলেন, ‘ছবিতে যে সকল জেলে ভাই-বোনেরা অভিনয় করেছিলেন, তাদের কারও কারও সাথে আমার এবার দেখা হয়েছে। তাদের মুখে শুনেছি, ইলিশ মাছও নাকি এখন অপ্রতুল। শুনে বুঝলাম তাদের জীবনের এই কঠিন বাস্তবতা আমার সিনেমার গল্পকেও হার মানিয়েছে। সংগ্রামী এই মানুষগুলোর গল্প বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরা খুব জরুরি, সেই সূত্রেই জাতিসংঘের জলবায়ু কনফারেন্সে আবেদন করা। আয়োজকদের আমি বিশেষ ধন্যবাদ দিতে চাই, কারণ তারা আমার ছবিকে এবং ছবিটির মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনকে তুলে ধরার সুযোগ করে দিয়েছেন।’

এর আগে লন্ডন, বুসান, গুটেনবার্গ, সাও পাওলো, তুরিন, সিয়াটল, সিঙ্গাপুরসহ বেশ কিছু আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে দর্শক ও সমালোচকদের প্রশংসা কুড়িয়েছে ‘নোনাজলের কাব্য’।

 ‘নোনা জলের কাব্য’ প্রযোজনা করেছেন রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত ও ফরাসি প্রযোজক ঈলান জিরার্দ। জিরার্দ, ‘মার্চ অব দ্য পেঙ্গুইন‘, ‘গুডবাই বাফানা‘, ‘ফাইনাল পোর্ট্রেট’-এর মতো বিখ্যাত কিছু চলচ্চিত্র প্রযোজনা করেছেন। সিনেমাটোগ্রাফি করেছেন লস অ্যাঞ্জেলসে বসবাসরত থাই শিল্পী চানানুন চতরুংগ্রোজ, তিনি ২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের স্পিরিট অ্যাওয়ার্ড-এর মনোনয়ন পেয়েছিলেন। এছাড়া বাংলাদেশ থেকে ছবিটির নির্মাণ সহযোগী প্রতিষ্ঠান অমিতাভ রেজার হাফ স্টপ ডাউন। সম্পাদনা করেছেন আমেরিকার ক্রিস্টেন স্প্রাগ, রোমানিয়ার লুইজা পারভ্যু ও ভারতের শঙ্খ। শব্দ ও রঙ সম্পাদনার কাজটি হয়েছিল প্যারিসের দুটি বিখ্যাত স্টুডিওতে।

২০১৬ সালে চিত্রনাট্যের জন্য ‘নোনা জলের কাব্য’ পেয়েছিল ‘স্পাইক লি রাইটিং গ্রান্ট’।  একই বছর ভারতের ফিল্ম বাজারের কে-প্রোডাকশন মার্কেটে নির্বাচিত হয়েছিল সিনেমাটির চিত্রনাট্য। ২০১৭ সালে ছবিটি বাংলাদেশের জাতীয় চলচ্চিত্র অনুদান পেয়েছিল ৫০ লাখ টাকা। ২০১৮ সালে ৮০ লাখ টাকা অনুদান পেয়েছিল ফরাসি সরকারের সিএনসির ‘সিনেমা দ্যু মন্ড’ ফান্ড থেকে। ২০২০ সালে ছবিটি টরিনো ফিল্ম ল্যাব অডিয়েন্স (টিএফএল) ডিজাইন ফান্ড জিতেছে। এর ফান্ডের আওতায় পেয়েছে ৪৫ হাজার ইউরো, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ৪৫ লাখ টাকার সমান। এ অর্থের মাধ্যমে চলচ্চিত্রটিকে বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশের সিনেমা হলে পৌঁছে দেয়ার কাজ করছে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান।

বাংলাদেশে এ ছবির পরিবেশক স্টার সিনেপ্লেক্স। ছবিটিতে মূল ভূমিকায় অভিনয় করেছেন ফজলুর রহমান বাবু, শতাব্দী ওয়াদুদ, তিতাস জিয়া, তাসনোভা তামান্না প্রমুখ। আবহ সংগীত পরিচালনা করেছেন অর্ণব।

সূত্র/ বাংলা ট্রিবিউন ও ডেইলি স্টার


Leave a reply