পরিচালক সমিতি বনাম নোমান রবিন
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি ‘কমন জেন্ডার’-খ্যাত নোমান রবিনের সদস্যপদ এক বছরের জন্য স্থগিত করেছে, একই সঙ্গে বর্তমান কমিটিতে তার আন্তর্জাতিক ও তথ্য সচিব পদ বাতিল করা হয়েছে। ৩১ অক্টোবর এক জরুরি সভার মাধ্যমে সমিতি এ সিদ্ধান্ত নেয়। ৩ নভেম্বর সুন্দরবন কুরিয়ারের মাধ্যমে সমিতির সিদ্ধান্তের চিঠি পেয়েছেন তিনি।
এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মামলা করবেন বলে জানালেন নোমান রবিন। তার মতে, সংগঠনের গঠনতন্ত্রের অপব্যবহার করে এটা করা হয়েছে।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করলেন সমিতির সভাপতি সোহানুর রহমান সোহান। তিনি বলেন, নিয়ম মেনেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে সমিতি।
বহিষ্কারের কারণ সম্পর্কে নোমান বলেন, ‘শাকিব খান একটি সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, “সমিতি করে কোনো লাভ নেই, কাজই আমাদের এগিয়ে নেবে।” সেই লেখাটা আমি ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে শেয়ার করেছিলাম। দ্বিতীয়ত, নির্মাতা সাইফ চন্দন আমার একটি ফেসবুক লাইভে এসে বলেছিল, “আপনাদের সমিতি কিসের সমিতি, আপনারা ‘পদ্মা পুরান’ নির্মাতার সিনেমা দেখে একবারও কি বলতে পারলেন না, ‘ভাই, তুমি এগিয়ে যাও?’ তা না করে আপনারা সংগঠনের পক্ষ থেকে পিকনিক করেন, আপনারা করেন বাজার।” তখন আমি একটি অস্বস্তির মধ্যে পরে সমিতির অন্যান্য কাজের কথা তার সামনে তুলে ধরি। পরে সমিতির পক্ষ থেকে আমাকে বলা হয়, সাইফ এই কথা কেন আমার লাইভে বলল। এই ঘটনার জন্য আমি ক্ষমাও চাই। কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব দিই। তারপরও তারা ক্ষমতা ব্যবহার করে আমাকে বহিষ্কার করে।’
আরও বলেন, ‘আমি সংগঠনের পরিপন্থী কোনো কাজে কখনোই যুক্ত ছিলাম না। আমি কোথাও সমিতির কথা উল্লেখ করিনি বা ছোট করিনি। কিন্তু ঘটনাগুলো নিজেদের গায়ে নিয়ে সমিতি আমাকে অন্যায়ভাবে বহিষ্কার করল। সমিতির পক্ষ থেকে আমি নির্বাচিত হয়ে কিছু পরিবর্তনের কথা বলতাম। বলেছিলাম আবদুল্লাহ মোহম্মদ সাদকে অভিনন্দন জানাতে। এ ছাড়া সংগঠন ঢেলে সাজানোসহ ভালো কাজের কথা বলায় আমাকে হয়রানি করতে সদস্যপদ স্থগিত করা হয়েছে। তারা আমার সঙ্গে অন্যায় করেছে।’
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে সোহানুর রহমান সোহান বলেন, ‘তিনি সংগঠনের পরিপন্থী কাজ করেছিলেন। আমাদের সংগঠনের নিয়ম অনুযায়ী তাকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।’
তবে কী ধরনের কার্যকলাপ নোমান করেছিলেন সোহানুর রহমান এই বিষয়ে মন্তব্য করেননি। আরও অভিযোগ যোগ করেন, ‘বহিষ্কারকে কেন্দ্র করে গতকাল রাতে (৪ নভেম্বর) ফেসবুকে লাইভে আমাদের নিয়ে অনেক কিছুই বলেছেন তিনি। এসব নিয়ে কথা বলতে চাই না। গঠনতন্ত্রকে অবমাননা করলে যে কারও বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নিতে পারি।’
এ দিকে নোমান রবিন জানান, তিনি সমিতিকে উকিল নোটিশ পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আশা করছেন ৭ বা ৮ নভেম্বরের মধ্যে এ নোটিশ পাঠাতে পারবেন।
নোমান বলেন, আমার উকিল নোটিশে জিজ্ঞাসা থাকবে— আমি বিশাল অংকের টাকা চাঁদা দিয়ে সদস্য হয়েছি। এক বছরের জন্য তারা কোন যুক্তিতে আমার সদস্যপদ স্থগিত করেছে? সমিতির যে ধারার কারণে আমাকে নিষিদ্ধ করেছে তা তো স্পষ্ট না। আমি তো সমিতির বিরুদ্ধে কথা বলি নাই। তারপর তারা যে ভাষায় আমার কাছে জবাব চেয়ে এর আগে চিঠি দিয়েছিলো, সে ভাষায় তা তারা দিতে পারে কিনা?
সূত্র/ প্রথম আলো ও সারাবাংলা ডটনেট