পশ্চিমবঙ্গে জনপ্রিয়তা না থাকলে শাকিব খানের পেছনে লগ্নি করছে কেন?
শাকিব খানের আপকামিং দুই প্রজেক্ট দরদ ও তুফানের সঙ্গে জড়িত আছে কলকাতার বড় দুই প্রতিষ্ঠান এসকে মুভিজ ও এসভিএফ ফিল্ম। তাদের সঙ্গে আগেও কাজ করেছেন এ নায়ক। পশ্চিমবঙ্গে এ নায়কের জনপ্রিয়তা না থাকা সত্ত্বে নাকি তাকে নিয়ে কাজ করছেন প্রযোজকরা! কেন? শাকিবের জনপ্রিয়তা ও অভিনয় নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করলেও এ প্রশ্নের উত্তর দেননি প্রযোজক রানা সরকার বা তাকে কেউ প্রশ্নও করেনি।
দেশ টিভির এক প্রতিবেদনে প্রচারিত অডিও বার্তায় শাকিব খান প্রসঙ্গে রানা বলেন, ‘শাকিব জনপ্রিয় হলেও পশ্চিমবঙ্গে তার সিনেমার দর্শকপ্রিয়তা নেই। সুপারস্টারের সিনেমা যেমন চলা উচিত, যেমন দেব, জিৎ, সোহম—সে রকম চলে না। শাকিব খান হয়তো খুব জনপ্রিয়, কিন্তু অভিনয়ে অন্য যারা নাম করছেন, তাদের তুলনায় অতটা ভালো নয়।’
বাংলাদেশ-ভারত যৌথ প্রযোজনায় শাকিব খান ছবি করলেও হলগুলো এই নায়কের সিনেমায় ততটা আগ্রহী নয় বলে মন্তব্য রানা সরকারের। তিনি বলেন, ‘শাকিব খানের সিনেমা হলে তো চলেই না, বাংলার কোনো স্যাটেলাইট চ্যানেলেও তাকে সেই দামটা দেয় না, যে দামটা দেব, জিতের মতো নায়কদের আছে।’
শাকিব খান সুপারস্টার ঠিকই, তবে এই নায়ক যদি আরও অভিনয়ের দিকে মনোযোগ দিতেন, তাহলে ভালো হতো বলে মনে করেন রানা সরকার। পশ্চিমবঙ্গের নায়কদেরও প্রায় সময় কটাক্ষ করেন টালিউডের এই প্রযোজক। তাঁদের অভিনয় পারা না–পারা এবং নানা দুর্বলতা নিয়ে তোলেন প্রশ্ন। এবার শাকিব খানের মতো জনপ্রিয় নায়কের অভিনয়দক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন এ প্রযোজক।
অবশ্যই এবার প্রথম নয় ২০২২ সালের আগস্টে অভিনেতা জয়জিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তর্কের একটা পর্যায়ে শাকিব খানের নাম নেন রানা সরকার। তার দাবি ছিল, জয়জিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিবার শাকিব খানের ৩০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
শাকিব খানের কিসের টাকা মেরে দিয়েছেন জয়জিৎ বন্দ্যোপধ্যায় ও তার পরিবার? উত্তরে রানা সরকার বলেন, ‘এ ঘটনা তো অনেক আগের। চার-পাঁচ বছর আগের। শাকিব খান যখন আমাদের এখানে নিয়মিত কাজ করছিলেন, তখনকার ঘটনা। ছবির কাজ ও স্টেজ শোর কাজের সময় এসব অর্থের লেনদেন হয়েছে বলে জেনেছি।’ শাকিব খানের টাকা যে জয়জিৎ বন্দ্যোপধ্যায় মেরে দিয়েছেন, এসবের কোনো প্রমাণ আপনার কাছে আছে কি? রানা সরকারের উত্তর, ‘এটা আমাদের এখানকার সবাই জানে, প্রমাণের তো কিছু নেই। ও রকম প্রমাণ তো দেখানো সম্ভব নয়। এখন কেউ যদি অস্বীকার করে, তা তো কিছু করার নেই।’
তখন ভারতীয় গণমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে অবশ্য জয়জিৎ জানান, ‘আমি অভিনেতা হয়ে একজন অভিনেতার থেকে কেন ৩০ লাখ টাকা নেব? ইতিমধ্যেই রানা সরকারের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করার পরিকল্পনা নিয়েছি। আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলেছি। হেডলাইনে থাকার জন্য তিনি যা পারছেন, তা–ই বলছেন। শুধু আমাকে নয়, জীতু, কমল থেকে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়—সবাইকে নিয়েই সে কথা বলে, কিন্তু তাতে কারোর কিছু যায়–আসে না। ও সব সিনেমার ঘোষণা করে, কিন্তু রিলিজ হতে দেখা যায় না। আর একটা লোক কতটা নিচে নামলে আমার স্ত্রী ও ছেলেকে এ বিষয়ে টেনে আনে। খুব শিগগির আমি রানা সরকারের জবাব দেব।’
অন্যদিকে শাকিব খান তখন প্রথম আলোকে বলেন, ‘এটা একেবারে ভুয়া খবর। রানা সরকার ও জয়জিৎ ব্যানার্জি নামের কারও সঙ্গে আমার কোনো পরিচয় নেই। আমি ভারতে কাজ করেছি, তখন অনেকের সঙ্গে পরিচয় হয়েছে হয়তো, কিন্তু এই নামে কারও কথা মনে করতে পারছি না। যাদের কথা মনে করতে পারছি না, তাদের কারও সঙ্গে অর্থনৈতিক লেনদেন করার তো প্রশ্নই আসে না। পুরো বিষয় শুনে মনে হচ্ছে, এটা তাদের ব্যক্তিগত কোনো দ্বন্দ্ব। আমার নামটা জড়ালে হয়তো খবরে আসা যাবে, তাই এমনটা করেছে। আমার মনে হয়, শাকিব খান নামটা জড়িয়েছে শুধু আলোচনায় আসতে। ভারত ও বাংলাদেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবরের শিরোনামে তো তারা এসেছে ঠিকই।’