প্রেক্ষাগৃহ নিয়ে শঙ্কার মাঝে উৎসবে সেরা ‘সাঁতাও’
গত ২০ জানুয়ারি ‘ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে’ প্রিমিয়ার হয় খন্দকার সুমন পরিচালিত ‘সাঁতাও’-এর। এদিন প্রদর্শনী শেষে হল পাওয়া নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন নির্মাতা। তার দুদিন বাদে বাংলাদেশ প্যানারোমা বিভাগে সেরা পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের পুরস্কার পেয়েছে গণঅর্থয়ানের নির্মিত ছবিটি।
ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ক্রিটিকস ফেডারেশন’র (ফিপরেস্কি) পক্ষ থেকে ৩ জন বাংলাদেশ প্যানারোমা বিভাগে পুরস্কারের জুরি হিসেবে ছিলেন। তারা হলেন জার্মানির চলচ্চিত্র সাংবাদিক, গবেষক ও লেখক অ্যাক্সেল টিমো পার; ইউক্রেনের চলচ্চিত্র সমালোচক, চিত্রনাট্যকার ও সাংবাদিক এলিনা রুবাশেভসকাজা এবং বাংলাদেশ থেকে থাকছেন লেখক, চলচ্চিত্র সমালোচক ও সাংবাদিক বিধান রিবেরু।
পুরস্কারপ্রাপ্ত হিসেবে নাম ঘোষণার আগে অ্যাক্সেল টিমো পার মঞ্চে ‘সাঁতাও’ সম্পর্কে বলেন, ‘এমন একটা ছবিকে পুরস্কৃত করতে যাচ্ছি, যেটি আমরা দারুণ উপভোগ করেছি। এ ছবিতে রয়েছে জলবায়ু বিপর্যয়ের কথা, একটি গরুর বাছুরের জন্য একজন মায়ের ভালোবাসা, প্রাকৃতিক দুর্যোগে মানুষের টিকে থাকার লড়াই। এ ছবিতে রয়েছে অসাধারণ সিনেমাটোগ্রাফির কাজ। প্রধান অভিনেত্রীর ন্যাচরাল অভিনয় এবং সংলাপের চেয়ে সিনেমার ভাষার দুর্দান্ত ব্যবহার। পরিচালক স্থানীয় ভাষায় একটি বৈশ্বিক গল্প বলেছেন।’
খন্দকার সুমনের হাতে পুরস্কার তুলে দেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। পুরস্কার গ্রহণের সময় আবেগঘন বক্তব্যে পরিচালক তার পরিবারের সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
এদিকে ২৭ জানুয়ারি ঢাকাসহ সারাদেশে মুক্তি পাচ্ছে ‘সাঁতাও’। তবে হল নিয়ে এখনো সুখবর দিতে পারেননি খন্দকার সুমন। প্রিমিয়ার শোয়ের পর তিনি বলেন, ‘আমাদের সিনেমাটি অনেক সিনেমা হল মালিক নিতে ভয় পাচ্ছেন। তাদের ধারণা, এ ধরনের সিনেমা দর্শকরা দেখে না। কিন্তু তা মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। আপনারা আজ সাক্ষী যে আমাদের সিনেমারও মানুষ রয়েছে। আপনারা যদি দেশের মাল্টিপ্লেস ও প্রেক্ষাগৃহে সিনেমাটি দেখার দাবি জানান, তাহলে হয়তো এটি নিয়ে আমাকে হারতে হবে না। দেশের অসংখ্য চলচ্চিত্র নির্মাতা স্বপ্ন বুননের মাঝে আছে। সাঁতাও যদি জয়ী হয়, তাহলে তরুণ নির্মাতারাও সিনেমা নির্মাণে আরো সাহস পাবেন।’
গত নভেম্বরের শেষে এশিয়ার অন্যতম চলচ্চিত্র উৎসব ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল অব ইন্ডিয়া (আইএফএফআই) অনুষ্ঠিত হয়েছে ভারতের গোয়ায়। ওই উৎসবে প্রদর্শিত হয়েছিল ‘সাঁতাও’। ভারতের মহারাষ্ট্রে অজন্তা-ইলোরা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের অষ্টম আসরেও দেখানো হয়েছে এ সিনেমা।
সিনেমাটির প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন আইনুন পুতুল ও ফজলুল হক।