বাবার পাশে দিতির শেষ শয্যা
শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী পারিবারিক গোরস্থানে বাবার কবরের পাশে সমাহিত করা হবে পারভীন সুলতানা দিতিকে। সোমবার (২১ মার্চ) নারায়ণগঞ্জের গ্রামের বাড়িতে বাদ জোহর শেষ জানাজার পর তার শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হবে।
রোববার (২০ মার্চ) সন্ধ্যায় অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তাফা সাংবাদিকদের এ কথা জানান। রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে দিতির মরদেহ দেখে এবং তার পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা জানিয়ে বের হওয়ার পথে তিনি কথা বলছিলেন। এসময় সুবর্ণা মুস্তাফার সঙ্গে ছিলেন হাসপাতালের চিফ অব কমিউনিকেশন অ্যান্ড বিজনেস ডেভেলপমেন্ট সাগুফা আনোয়ার।
সুবর্ণা মুস্তাফা বলেন, আমি দিতির মেয়ে লামিয়া ও দীপ্তর পক্ষ থেকে আপনাদের জানাচ্ছি, আজ বাদ এশা গুলশানের আজাদ মসজিদে মরহুমার প্রথম নামাজে জানাজা হবে। এরপর সেখান থেকে তার মরদেহ হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হবে।
সোমবার ভোরে দিতির মরদেহ নেওয়া হবে গুলশানে মরহুমার নিজের বাড়িতে। সেখানে সকাল ৮টা থেকে সাড়ে ১০টার মধ্যে দ্বিতীয় জানাজা হবে। এরপর তার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে গ্রামের বাড়িতে। বাদ জোহর তৃতীয় ও শেষ জানাজার পর শেষ ইচ্ছে অনুযায়ী দিতিকে পারিবারিক গোরস্থানে বাবার কবরের পাশে চিরসমাহিত করা হবে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়, দিতির মৃত্যুর পর তাকে গোসল করিয়ে এখন হিমঘরে রাখা হয়েছে।
এ দিকে দিতির সহকর্মীদের অনেকেই এফডিসিতে সম্মান জানানোর প্রস্তাব দিলেও তার পরিবার রাজি হয়নি।
রবিবার বিকেল ৪টা ৫ মিনিটে ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান দিতি। তিনি বেশ কিছুদিন ধরে এখানে কোমায় ছিলেন। তার মৃত্যুতে সাংস্কৃতিক অঙ্গনে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। তিনি এক কন্যা (লামিয়া চৌধুরী) ও এক পুত্র দীপ্ত এবং অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
মস্তিষ্কে টিউমার ধরা পড়ায় গত বছরের ২৬ জুলাই ভারতে চেন্নাইয়ের মাদ্রাজ ইনস্টিটিউট অব অর্থোপেডিকস অ্যান্ড ট্রামাটোলজিতে (এমআইওটি) ভর্তি হয়েছিলেন দিতি। এরপর ২৯ জুলাই প্রথম অস্ত্রোপচারের পর কেমো নিয়ে ২০১৫ সালের ২০ সেপ্টেম্বর দেশে ফেরেন জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী। কিন্তু কেমোথেরাপির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণে আবারও অসুস্থ হয়ে পড়েন। এ কারণে ৩০ অক্টোবর তাকে ভর্তি করা হয় রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে।
অবস্থা অপরিবর্তিত থাকার কারণে গত বছরের ৩ নভেম্বর দ্বিতীয় দফায় দিতিকে চেন্নাই নেওয়া হয়। এর দু’দিনের মাথায় ৫ নভেম্বর তার মস্তিষ্কে দ্বিতীয়বারের মতো সফল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে মস্তিষ্কে জমে থাকা পানি অপসারণ করা হয়। কিন্তু তখনও পুরোপুরি ঝুঁকিমুক্ত ছিলেন না। তার অবস্থা এতোই গুরুতর ছিলো যে, মাসখানেক নিজের দুই সন্তান ও আত্মীয়-স্বজনদের চিনতে পারছিলেন না তিনি।