Select Page

যে ভাবনা থেকে ‘কথা আছে’ গানে লিপসিঙ্ক করলেন দীপংকর দীপন

যে ভাবনা থেকে ‘কথা আছে’ গানে লিপসিঙ্ক করলেন দীপংকর দীপন

দীপংকর দীপনের নিজের আপকামিং প্রজেক্ট ছাড়াও সতীর্থ ভালো লাগা কাজ নিয়ে প্রায়শ সোশ্যাল মিডিয়ায় কথা বলেন। সম্প্রতি ‘লিডার আমিই বাংলাদেশ’ সিনেমার ‘কথা আছে’ গানের সঙ্গে ঠোঁট মিলিয়ে ভিডিও শেয়ার করেন। কিন্তু পরিচালক তপু খান ছাড়া কারো কাছ থেকে ধন্যবাদ পাননি তিনি। এ নিয়ে ফেসবুক পোস্টেই প্রতিক্রিয়া জানালেন দীপন। কী বললেন?

“কোন অভিযোগ বা অভিমান থেকে এই পোস্ট না সেটা পুরো পোস্ট পড়লে বুদ্ধিমানরা বুঝবে কিন্তু কেন এই পোস্ট সেটা আশাকরি শেষ প্যারায় বোঝাতে পারব। যেটা বলতে চাই সেটা বাংলা সিনেমার জন্য জরুরি, না হলে এই প্রসঙ্গ নিয়ে কথা বলতাম না।

কাল রাতে ‘লিডার আমিই বাংলাদেশ’ সিনেমার একটি ঠোঁট মিলিয়ে একটা ভিডিও পোস্ট করেছি। র‍্যাপ গান মুখস্ত করে লিপসিঙ্ক একটু টাফ, কষ্ট করতে হয়েছে, একাধিক বার রেকর্ড করতে হয়েছে। তারপর ব্যাপক সাড়া পেয়েছি, অনেক ভিউ আর শেয়ার হয়েছে। কিন্তু তপু ছাড়া ‘লিডার আমিই বাংলাদেশে’ সংশ্লিষ্ট কারো কাছ থেকে কোন ফোন ইনবক্সে রেসপন্স পাইনি। তপুকে আমি পোস্টে ট্যাগ করেছিলাম- এই সিনেমা নির্মাণের শুরু থেকেই তপুর সাথে আমার কথা হয়। তপু আমার বেশ কাছের, ওর কষ্ট, আত্মত্যাগ, শক্তি, দূর্বলতা- সবই আমি জানি। কাছের না হলেও একজন ফেলো পরিচালক হিসাবে আমি পাশে দাঁড়াতাম, সেটা আমি সব সময় করে গেছি। কিন্তু একটা সিনেমায় পরিচালক ছাড়াও প্রযোজক, রাইটার, নায়ক, নায়িকাসহ আরো গুরুত্বপূর্ণ কিছু পার্ট থাকে। তাদের কাছ থেকে কোন সাড়া পাইনি। এমন না এই ছবির প্রযোজক, রাইটার, নায়ক, নায়িকার সাথে আমার পরিচয় নাই, কথা নাই, তারা আমাকে চেনে না, বা তাদের কাছে আমার নাম্বার নাই। তারা নিশ্চই দেখেছে আমার লিপসিঙ্ক- নাকি ভেবেছে এটা খুব স্বাভাবিক একটা বিষয়। হয়তো দীপংকর দীপনকে টিকটকার বা রিল মেকার ভেবে নিয়েছে যেন গানে ঠোঁট মিলিয়ে প্রচার করাই তার কাজ। তাতে আমার সত্যি কোন দুঃখ নাই, একেবারেই নাই। লিডারের কোনো কনটেন্ট ভালো লাগলে আমি আবারো করবো, কেউ আমাকে কিছু না বললেও। তবে যাদের আমি আসলে কেয়ার করি তাদের কাছ থেকে আমি পেয়ে গেছি আমার ভালবাসার প্রতিদান।

কাল এটা পোস্ট করার পরই আমার কাছের এক শুভাকাংখী এক সাংবাদিক ফোন করে বলেছিল- গানটা আমি আমার টাইমলাইনে শেয়ার দিয়েছি, সেটাই তো যথেষ্ট ছিল- এটা করার কি দরকার ছিল- আমি একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের টিচার মানুষ, এটা আমাকে মানায় না। তাকে বলেছিলাম- ভাই বাংলা সিনেমার প্রচারে মুখে রঙ মেখে সঙ হয়ে নামতেও আমার আপত্তি নেই। হলে হিন্দি সিনেমা চললে বুকে একটা খোঁচা লাগে। বাংলা সিনেমার যেকোনো ভালো চেষ্টা যদি আমার ভালো লাগে আর সেটা যদি অনেস্ট হয় সেটা আমি প্রোমোট করেছি সবসময়। আমার বন্ধুপক্ষের নাকি শত্রুপক্ষের – আমার কী লাভ কী ক্ষতি সেটা ভাবিনি। আর ভালো প্রচেষ্টাটা যদি মেইনস্ট্রিম বাণিজ্যিক সিনেমার হয়- তাহলে সব নিয়ে পাশে দাঁড়াব। থেকেছি সবসময়। বাণিজ্যিক সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিকে বাঁচিয়ে রাখে অথচ বাণিজ্যিক সিনেমা সুধীজনরা নাট শিটকাবে আর আমাদের সিনেমাহল বন্ধ হতে হতে ভারতীয় সিনেমাকে ধার করার মত অবস্থায় চলে যাবে। তাই বাণিজ্যিক ম্যাসি সিনেমার সাথে ছিলাম সবসময়- থাকবো।

শুধু একটাই শর্ত কনটেন্ট না আমার মন থেকে টানতে হবে। কনটেন্ট আমাকে টানলে সেটা হলে কারো ব্যক্তি জীবন, সে আমার টিমের নাকি অন্য টিমের- কোন কিছুই আমার কাছে কাজ করেনা। অপু বিশ্বাসের ‘লাল শাড়ি’র মাধ্যমে বাঙালি একটা নতুন ভালো বৈশাখের গান পেয়েছে-এটা আমি বড় গলা  করে বলবোই। অপু বিশ্বাস আমাকে চিনুক না চিনুক, তাকে আমি পছন্দ করি বা না করি তাতে কিছু যায় আসে না। এখানে দেখেছি কোন কিছু ভাণো বলার আগে সুধীজনের দেখে সে কোন ঘরানায়- কোন সিন্ডিকেটের- তারপর আসে ভালো মন্দ বলার প্রশ্ন। এটাকে আমার খুব নোংরা আর সংকীর্ণ মনে হয়। আমার  সেসব নাই- আমি শুধু চাই সিনেমা হলে মানুষেরা হৈহৈ করে বাংলাদেশের সিনেমা দেখছে- মজা করছে- এর চেয়ে মধুর দৃশ্য আর কি হতে পারে।?

এই পোস্টটা কেন করলাম। এতে কী ভাবলেন – সিনেমা টিমের বাকিদের কাছ থেকে ন্যুনতম ধন্যবাদ না পাওয়াতে আমি বিচলিত। একদমই না। আমার কিছু যায়ই আসে আসে না। কনটেন্ট ভালো না লাগে আমি নাই, অন্যদিকে কনটেন্ট আমাকে টানলে আমার সাথে যায় না এমন অনেক তরিকায় আমি প্রচার করবো। তাতে কে কী ভাবল, কী পেলাম না পেলাম না এসব মাথায় কাজই করে না। প্রত্যাশা নাই কোনো। বাংলাদেশে সিনেমা বানাতে শুরু করার সময়ই রাষ্ট্র্ আর কলিগদের কাছে প্রত্যাশা শব্দটাকে মেরেই কাজ শুরু করেছি। ও নিয়ে আমার কোন মাথা ব্যথা নেই। মন খারাপ থেকে বলছি না আসলেই নাই। তবে রেসনন্স পেলে অন্য কলিগরাও এগিয়ে আসতো, তাহলে তাদেরই লাভ হতো। এসব আজ আপনাদের বলছি কারণ এটা আপনাদের জানা দরকার যে আমার সব প্রত্যাশা আসলে  আপনাদের  দর্শকদের নিয়ে, যাদের আমি ব্যক্তিগত ভাবে চিনি না – তারা আমার লিপসিঙ্কটাকে পছন্দ করেছে – তাতেই আমি খুশী। সেটাই আমার বড় প্রাপ্তি- আমি বিশ্বাস করি দর্শক সিনেমা প্রাণ। তারা নিউক্লিয়াস, অনেকে আমাকে ধন্যবাদ জানিয়েছে- তাদের আমিও ধন্যবাদ জানাই।

আপনাদের প্রাণপ্রিয় হিরোর ছবি আমি প্রচার করেছি- যদি ভালো লাগে তাহলে আমার একটা চাওয়া আছে- বাংলা সিনেমার কোনো কনটেন্ট যদি ভালো লাগে, তাহলে আপনার ও সেটা প্রচার করবেন। সেটা যে কোন হিরোর হোক না কেন, যে কোন পরিচালকের হোক না কেন। সামনে হিন্দি সিনেমা সাথে লড়াইটা অনেক কঠিন- আমাদের সবার একসাথে কাজ করা দরকার। আর বিষয়টা খুব কঠিনও না। আমরা ভালো সিনেমা বানাবো আর আপনারা মন খুলে প্রচার করবেন। আমাদের শক্তি অনেক- একসাথে হলে আমাদের বাঁচাতে হিন্দি সিনেমা লাগবে না। আমরাই যথেষ্ট।

ভালো থাকবেন। ঈদের সিনেমা দেখতে দেখা হবে সিনেমা হলে।”


Leave a reply