Select Page

রিভিউ: ঘুমপরী ও নীল সুখ

রিভিউ: ঘুমপরী ও নীল সুখ

ঘুমপরী (২০২৫), পরিচালক জাহিদ প্রীতম; অভিনয় প্রীতম হাসান, তানজিন তিশাপারসা ইভানা; প্লাটফর্ম চরকি; রেটিং ৭/১০

হলিউডের ‘দ্য ফল্ট ইন আওয়ার স্টার্স’ কিংবা ‘ফাইভ ফিট এহেড’ দেখে যে মানবিক ক্রিয়া আমাদের ভেতর খেলা করে, একেবারে ভিন্ন এক সিনেমাগলির নির্মাতারা চাইলে সেই ক্রিয়া আমাদের মনে তৈরি করতে পারেন। জাহিদ প্রীতম মেকার হিসেবে অনেকটাই প্রেডিক্টেবল, উনার রোমান্টিসিজম ও ট্র্যাজিক স্ক্রিনপ্লে অনেকটাই ওপেন। তবে তার কাজ হাজারো অশান্তির ভীড়ে আমাদের সম্পর্ক নিয়ে ভাবায়, চোখ ভেজায় – এইটা খুব ভালো। অনেক সীমাবদ্ধতা কিংবা আহামরি স্ক্রিনপ্লে না হলেও ‘ঘুমপরী’ কে ভালো বলতেই হবে। ব্যক্তিগতভাবে প্রীতম কিংবা পারসাকে মিউজিশিয়ান হিসেবে দেখতেই ভালো লাগবে আমার। তবে এই পার্টিকুলার কনটেন্টে তারা ভালো করেছে স্বীকার করতেই হবে।

গল্প কোমায় পড়ে থাকা জ্যোতি, তার হতভাগা প্রেমিক মেঘ আর মেঘের একসময়ের ছাত্রী উষাকে নিয়ে। আর দশটা ট্রায়েঙ্গুলার লাভ স্টোরি বলবো না, আবার সেই ফরম্যাট থেকে খুব বেরিয়েও কিছু হয়েছে তাও দাবি করব না। শুরুতে আপনার মায়া হবে উষা নামের মেয়েটির প্রতি যে টিউটর মেঘকে প্রচণ্ডভাবে নিজের করে চায়। আর মেঘ চায় হাসপাতালে কোমায় পড়ে থাকা জ্যোতির একটু সম্মোহন, একটু কথোপকথন। কিন্তু মেডিক্যালি সেটা পসিবল না। সামনে থেকেও উষা মেঘের হয় না, আড়ালে থাকা জ্যোতিই মেঘের সবটা জুড়ে থাকলেও আবার তাদের মাঝে থেকে যায় ‘কষ্টকর’ এক দীর্ঘ অপেক্ষা। জাহিদ প্রীতম সেই অপেক্ষার কথা বারবার বলেছেন, যেটা ফুরিয়েছে কী না জানতে দেখতে হবে ‘ঘুমপরী’।

কালার টোন খুব ভাল, পারসার সাথে প্রীতমের বিল্ড আপ গানটা ভালো আর ভালো পারসা মেয়েটা। ভালো করে অভিনয়ে মন দিলে সে রূপকে সাথে নিয়ে এগিয়ে যেতে পারবে। প্রীতমের ক্যারেক্টার টাইপকাস্টেড হয়ে যাচ্ছে, তানজিন তিশাকে খুব বেশি বিউটি ম্যাটেরিয়াল করে রাখা হলো যেন। অল্প সময়ে কী ভালো করলেন মিলি বাশার! জাহিদ নিরবের মিউজিক দারুন।

নীল সুখ (২০২৫); পরিচালনা ভিকি জাহেদ; অভিনয় মেহজাবীন চৌধুরীরেহান; প্লাটফর্ম বিঞ্জ; রেটিং ৬/১০

ভিকি জাহেদ আর তার চরিত্রের ভয়েস ন্যারেশান, বেশ বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ‘নীল সুখ’এও অর্পা চরিত্রে মেহজাবীন খুব সম্ভব ফিল্মের প্রায় অর্ধেক সময় ন্যারেশানই দিয়ে গেলেন। যে ইউনিক এটেম্পট ভিকিকে আলাদা করেছিলো, সেইটাই এখন ‘গলার কাঁটা’, সাথে যোগ হয়েছে আলগা তথ্যদানের ভাণ্ডার খুলে বসা। সুদর্শন রেহান এখানে মারুফ চরিত্রে ডাবড করা ভয়েসে যেন কোথায় এসেও হারিয়ে গেলেন। মেহজাবীন এত ভালো কিছু পারফর্ম্যান্স করেছেন, ‘নীল সুখ’ সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে আহামরি কিচ্ছু না। ফিল্মের প্রথম অর্ধেক যথেষ্ট বোরিং। এলএসডির ইম্পলিমেন্টেশন আরো কেয়ারফুলি হ্যান্ডল করা যেতো।

এইসব বাদ দিলে ‘নীল সুখ’ একটা হ্যাপি ওয়ান টাইম ওয়াচ কনটেন্ট। আপনার খুব ভালো লাগবে না, খারাপও লাগবে না, আপনি শেষ না করে উঠতেও পারবেন না। অর্পার জার্নি আপনি নিজেও করবেন তার সাথে। হুমায়ূন আহমেদকে হোম্যাজ দেয়াটা ভালো, তবে খুব ইফেক্টভলি ওয়ার্ক করে নাই। ‘পারফিউম’ নিয়ে বেইজটা ভাল ছিলো। গোলাম ফরিদা ছন্দার অদ্ভুত নিরব ডায়লগ এম্বিয়েন্সটা ধরিয়েছে। ন্যানসিকে রবীন্দ্রসঙ্গীত গাইতে শুনে অবাক হয়েছি, ভালো ছিল অন্য গানটাও। ক্যামেরা, ইডিট, কালার, প্রোডাকশন ভিকি জাহেদ সবসময়ই একটা স্ট্যান্ডার্ড ধরে করে, সেইটা বজায় ছিলো। ক্লাইম্যাক্স মোটামুটি প্রেডিক্টেবল তবে খারাপ না।


About The Author

Graduated from Mawlana Bhashani Science & Technology University. Film maker and writer.

Leave a reply