Select Page

রিমেম্বারিং মনসুন রেভল্যুশন/ আট নির্মাতার কর্মশালার পর সিনেমা বানাবেন আট বিভাগের তরুণরা

রিমেম্বারিং মনসুন রেভল্যুশন/ আট নির্মাতার কর্মশালার পর সিনেমা বানাবেন আট বিভাগের তরুণরা

সংস্কৃতির বিকাশ ও বিকেন্দ্রীকরণের জন্য বাংলাদেশের আটটি বিভাগীয় শহরে কর্মশালাভিত্তিক চলচ্চিত্র নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়। রিমেম্বারিং মনসুন রেভল্যুশন শিরোনামের এ উদ্যোগের জনঢ় আটজন পরিচালক নির্বাচন করেছে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়। গতকাল গতকাল সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। নির্বাচিত এই আটজন চলচ্চিত্রকার হলেন অনম বিশ্বাস, হুমায়রা বিলকিস, নুহাশ হুমায়ূন, শঙ্খ দাশগুপ্ত, শাহীন দিল রিয়াজ, রবিউল আলম রবি, তাসমিয়াহ আফরিন মৌ ও মোহাম্মদ তাওকীর।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এই উদ্যোগের মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণপ্রক্রিয়ার সঙ্গে ঢাকা ও ঢাকার বাইরের সৃজনশীল তরুণ প্রজন্ম যুক্ত হবে এবং দেশের বরেণ্য ও মেধাবী চলচ্চিত্রকারদের পরিচালিত কর্মশালায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে চলচ্চিত্র নির্মাণ বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করবে। নবীন ও প্রশিক্ষিত চলচ্চিত্রকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে নির্বাচিত এই আট চলচ্চিত্রকার আটটি বিভাগীয় শহর থেকে এ বছর আটটি মাঝারি দৈর্ঘ্যের চলচ্চিত্র নির্মাণ করবেন।

গত ডিসেম্বরে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে একটি সার্চ কমিটি গঠিত হয়। সার্চ কমিটি গত দুই মাসে তিনটি অফলাইন এবং একাধিক অনলাইন সভায় মিলিত হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে তারা ১৬ জনের একটি তালিকা করে। এরপর নির্মাতাদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে তাঁদের ব্যস্ততা, আগ্রহ, জেন্ডার, কাজের ধরন এবং অভিজ্ঞতা বিবেচনায় আটজনকে চূড়ান্ত করে। এই আটজন চলচ্চিত্রকার ২০২৫ সালে দেশের আটটি বিভাগীয় শহরে চলচ্চিত্রবিষয়ক কর্মাশালা পরিচালনা ও চলচ্চিত্র নির্মাণ করবেন।

সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বালেন, ‘এই উদ্যোগের মাধ্যমে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় দুটি লক্ষ্য অর্জন করতে চাইছে। এক, শিল্পের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শাখা চলচ্চিত্র নির্মাণপ্রক্রিয়ার সঙ্গে ঢাকা ও ঢাকার বাইরের আগ্রহী তরুণ জনগোষ্ঠীর যোগাযোগ তৈরি করা এবং তাদের কর্মদক্ষতা তৈরি ও প্রতিভা বিকাশের সুযোগ করে দেওয়া। দুই, প্রশিক্ষণের মাধ্যমে অর্জিত জ্ঞান ও দক্ষতাকে সরাসরি কাজে লাগানোর জন্য প্রশিক্ষকদের সঙ্গেই চলচ্চিত্র নির্মাণে তরুণদের অংশ নেওয়া।

এসব কর্মশালা এবং চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য কোনো ছক বেঁধে দেওয়া হয়নি। এতে করে শিল্পীরা তাঁদের নিজস্ব কর্মপদ্ধতি ও সৃজনশীলতার সর্বোচ্চ প্রয়োগ ঘটাতে সমর্থ হবেন এবং শৈল্পিক, রাজনীতিমনস্ক, বৈপ্লবিক এবং তারুণ্যদীপ্ত শিল্পভাষা তৈরি করতে আরও স্বচ্ছন্দ হবেন। বিশেষ করে যে দীর্ঘ দুঃসময় আর রক্তস্নাত জুলাই বিপ্লব পার হয়ে বাংলাদেশের মানুষ এখন স্বাধীনভাবে নিশ্বাস ফেলছে, তার একটি শৈল্পিক ভাষা এসব চলচ্চিত্রে দেখতে পাব বলে আমরা আশা করছি।’

মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, এসব কর্মশালা এবং চলচ্চিত্র নির্মাণপ্রক্রিয়া ঢাকার বাইরের একটা বৃহৎ জনগোষ্ঠীকে এই শিল্পপ্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত করবে এবং এই বিপ্লবোত্তর সময়ে চলচ্চিত্রের মাধ্যমে শিল্পসংস্কৃতির একটি নতুন ভাষ্যের সন্ধান দেবে। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের এই উদ্যোগ চলমান থাকবে এবং দেশের বরেণ্য চলচ্চিত্রকারদের আরও অনেকেই পরবর্তী বছরগুলোয় এই উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত হবেন।

মাঝারি দৈর্ঘ্যের ছবিগুলো সরকারি অর্থায়নে হবে। তবে ছবিপ্রতি কত অর্থ দেওয়া হবে, সেটা পরবর্তী সময়ে নির্ধারণ করা হবে। এর মধ্যে আন্দোলন নিয়ে ছবি থাকতে পারে আবার ফিকশন কিংবা হরর—যেকোনো গল্পের ছবি বানানো যাবে।

ছবিগুলো জুলাইয়ে দেখানো হবে। পাশাপাশি সিনেমা হলে, ওটিটি প্ল্যাটফর্মেও মুক্তি পাবে।

নির্বাচিত নির্মাতাদের প্রতিনিধি হিসেবে হুমায়রা বিলকিস বলেন, ‘ঢাকার বাইরে বিভিন্ন বিভাগে কর্মশালা ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে, এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ। এতে নানা বিভাগের তরুণ নির্মাতারা যুক্ত হতে পারবেন। চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসেবে তাঁদের আবির্ভাব ঘটবে।’

সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিবের রুটিন দায়িত্বে থাকা মফিদুর রহমান (অতিরিক্ত সচিব), অতিরিক্ত সচিব নাফরিজা শ্যামা, নির্মাতা তানিম নূর, অনম বিশ্বাস, শঙ্খ দাশগুপ্ত, মোহাম্মদ তাওকীর ইসলামসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।


Leave a reply