Select Page

রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জীবন সংগ্রামের সিনেমা ‘জন্মভূমি’ ছাড়পত্র পেল

রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জীবন সংগ্রামের সিনেমা ‘জন্মভূমি’ ছাড়পত্র পেল

রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জীবন সংগ্রামের সিনেমা ‘জন্মভূমি। পরিচালনা করেছেন প্রসূন রহমান।

# সোফিয়া নামের একজন অন্তঃসত্ত্বা নারী, যে তার সন্তানকে এই শরণার্থী শিবিরে জন্ম দিতে চাননা। চায় যে কোনও উপায়ে জন্মভূমিতে ফিরে যেতে
# এমন আকুতির গল্প নিয়ে নির্মিত সিনেমা ‘জন্মভূমি’। পরিচালনা করেছেন প্রসূন রহমান
# সম্প্রতি সিনেমাটি আনকাট সেন্সর সনদ পেয়েছে

রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরের অভ্যন্তরীণ জীবন-সংগ্রাম ও তাদের জন্মভূমিতে ফিরে যাওয়ার আকুতিকে ধারণ করে নির্মিত হয়েছে পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘জন্মভূমি’। দীর্ঘদিনের গবেষণা শেষে এর চিত্রনাট্য তৈরি ও পরিচালনা করেছেন লেখক-নির্মাতা প্রসূন রহমান। সম্প্রতি সিনেমাটি পেয়েছে আনকাট সেন্সর সনদপত্র।

এ খবর জানিয়ে নির্মাতা ফেসবুকে লেখেন, ‘সকল বন্ধু, সহকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীকে জানাচ্ছি, আমাদের চলচ্চিত্র ‘জন্মভূমি’ বিনা কর্তনে সেন্সর ছাড়পত্র পেয়েছে। আশা করছি শিগগিরই আমরা এটি বড় পর্দায় দেখতে পারব।’

এরইমধ্যে প্রকাশ পেয়েছে সিনেমার অফিশিয়াল পোস্টার। তখন পরিচালক জানিয়েছিলেন চলতি বছরেই মুক্তি পাবে ছবিটি। ছবিটি প্রযোজনা করছে বেঙ্গল মাল্টিমিডিয়া।

প্রসূন রহমান সারাবাংলাকে বলেন, ‘জন্মভূমি চলচ্চিত্রটি ডিসেম্বর মাসেই স্বল্প পরিসরে মুক্তি দেওয়ার চেষ্টা চলছে। জীবন ঘনিষ্ঠ বা বাস্তবধর্মী চলচ্চিত্র তো এই দেশে এমনিতেই বেশী সিনেমা হলে জায়গা পায়না। তাই মাল্টিপ্লেক্স বা সিনেপ্লেক্সগুলোতেই মুক্তি দেওয়ার চেষ্টা করছি আমরা। এরপর হয়তো শহরের বাইরে এবং দেশের বাইরে মুক্তি দেয়ার চেষ্টা চলবে।পাশাপাশি বেশ কিছু আর্ন্তজাতিক চলচ্চিত্র উৎসবেও অংশগ্রহণ করবে ছবিটি।’

২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর থেকে প্রায় ৮ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। ধারণা করা হয় তাদের মধ্যে প্রায় ৬৫ হাজার নারী অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। যাদের অনেকেই এরই মধ্যে মা হয়েছেন। মা হবার পথে আরও অনেক নারী।

গল্প : সোফিয়া নামের একজন অন্তঃসত্ত্বা নারী, যে তার সন্তানকে এই শরণার্থী শিবিরে জন্ম দিতে চাননা। সোফিয়া চায় যে কোনও উপায়ে নিজের জন্মভূমিতে ফিরে যেতে। নিজের জন্মভূমিতে ফিরে সন্তান জন্ম দিতে। শরণার্থী শিবিরের জনাকীর্ণ আশ্রয়ে নিজের সন্তানকে বড় করে তোলার মাঝে সে কোনো আনন্দ খুঁজে পায়না।

সোফিয়াদের বাড়িটা আগুনে পুড়িয়ে দেয় মায়ানমার সেনাবাহিনী। সেই সঙ্গে স্বামী ও শ্বাশুড়িকে হারানোর পর প্রতিবেশীদের সাথে সেও চলে আসে বাংলাদেশে। এই শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেওয়ার পর তার ৮ ফিট বাই ১০ ফিট একটা ঝুপড়ি ঘর হয়েছে, কিন্তু এ ঘর তো আর নিজের ঘরের মতো নয় যে ঘরে সে বড় হয়েছে, যে ঘরে সে স্বামীর সাথে সংসার পেতেছিল।

শরণার্থী শিবিরে আসার পর একদিন সে খুঁজে পায় মানিক নামের এক যুবককে, যে ১০ বছর আগে প্রতিবেশীদের সাথে এখানে পালিয়ে এসেছিল। শরণার্থী হিসেবেই সে এখানে বড় হয়েছে। এখন সে ক্যাম্পে হারানো শিশুদের জড়ো করে তাদের পিতা-মাতাদের খুঁজে এনে দেয়। সোফিয়া মাইকের আওয়াজ শুনে খুঁজতে খুঁজতে পৌঁছে যায় তার কাছে।

এর পরের গল্প বর্তমান সময়ের। সে গল্পে পাওয়া যায় বাস্তবের জমিন থেকে উঠে আসা ঘুর্ণায়মান আরও কিছু চরিত্র এবং চরিত্রগুলোর যার যার অবস্থান থেকে দেখা নিজস্ব বয়ান। কিন্তু সকল প্রতিকূলতা এড়িয়ে চলতে থাকে জন্মভূমি অভিমুখে সোফিয়ার অর্ন্তগত অভিযাত্রা। যে যাত্রা প্রত্যাশিত হলেও বিপদসংকুল।

চলচ্চিত্রে সোফিয়া চরিত্রে অভিনয় করেছেন নবাগতা সায়রা আক্তার জাহান এবং মানিক চরিত্রে রওনক হাসান। তাদের সাথে রয়েছেন সঙ্গীতা চৌধুরী, জয়নাল জ্যাক, নাসির উদ্দিন, অংকন চাকমা এবং একটি বিশেষ চরিত্রে অভিনয় করেছেন জার্মান অভিনেত্রী পামেলা কেচটার।


Leave a reply