লন্ডনের উৎসবে হচ্ছে ‘নোনা জলের কাব্য’র প্রিমিয়ার
বাংলাদেশ সরকারের অনুদানসহ বেশ কয়েকটি বিদেশি তহবিল জেতা ‘নোনা জলের কাব্য’র প্রিমিয়ার হতে যাচ্ছে।
৭-১৮ অক্টোবর যুক্তরাজ্যে অনুষ্ঠিত হবে বিএফআই লন্ডন ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের এবারের আসর। করোনা পরিস্থিতির কারণে ভার্চুয়াল ও ফিজিক্যালি ৫৮টি ছবি প্রদর্শিত হবে। এর মধ্যে ৪৪টি ছবি দেখা যাবে শুধু অনলাইনে, তার একটি রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিতের প্রথম সিনেমা ‘নোনা জলের কাব্য’।
এ খবর জানিয়েছিলেন ছবিটির অভিনেতা তিতাস জিয়া। এ ছাড়া স্কিনডেইলিতে এসেছে উৎসবের ওপর বিস্তারিত প্রতিবেদন। সেখানে প্রকাশিত তালিকায় স্থান পেয়েছে বাংলাদেশ ও ফ্রান্সের যৌথ প্রযোজনার ছবিটির নাম।
তিতাস মঙ্গলবার ফেসবুকে লেখেন, “বিএফআই লন্ডন ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল কিছুক্ষণ আগে ২০২০ সালের ফেস্টিভ্যালে অংশগ্রহণকারী চলচ্চিত্রের তালিকা প্রকাশ করেছে। ৭ থেকে ১৮ অক্টোবর ২০২০ পর্যন্ত অনুষ্ঠিতব্য এই ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল অত্যন্ত প্রেস্টিজিয়াস। আনন্দের সাথে জানাচ্ছি যে, আমাদের চলচ্চিত্র ‘নোনা জলের কাব্য’ (দ্য সল্ট ইন আওয়ার ওয়াটারস) এবারকার উৎসবে অংশগ্রহণের জন্য নির্বাচিত হয়েছে এবং এই উৎসবের মাধ্যমে আমাদের চলচ্চিত্রের ইউকে প্রিমিয়ার অনুষ্ঠিত হবে। ৬৪তম বিএফআই লন্ডন ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের ‘অফিশিয়াল সিলেকশন’ আমাদের নোনা জলের কাব্য’ (দ্য সল্ট ইন আওয়ার ওয়াটারস)। এই বছর মাত্র ৫৮টি চলচ্চিত্র সারা দুনিয়া থেকে নির্বাচিত করা হয়েছে, তার মধ্যে একটি – আমাদের চলচ্চিত্র।”
নোনা জলের কাব্যর চিত্রনাট্য লেখা ও সরেজমিন গবেষণা চলে চার বছর ধরে। চিত্রনাট্যের জন্য এ ছবি পেয়েছিল ‘স্পাইক লি রাইটিং গ্রান্ট’। ২০১৮ সালের ১৩ জুলাই অর্ধশতাধিক শিল্পী ও কলাকুশলী মিলে ঘোর বর্ষায় পটুয়াখালী ও চট্টগ্রামে শুটিং শুরু হয়ে শেষ হয় সেপ্টেম্বরের ৩ তারিখে। জেলেপাড়ার জীবন নিয়ে এই ছবিতে আরও অভিনয় করেছেন ফজলুর রহমান বাবু, তাসনুভা তামান্না, শতাব্দী ওয়াদুদ, অশোক ব্যাপারী, আমিনুর রহমান মুকুলসহ আরও অনেকে। ছবির সংগীতায়োজন করেছেন শায়ান চৌধুরী অর্ণব। প্রযোজক ও কলাকুশলীদের অনেকেই ভিনদেশি।
এ ছবি সরকারি অনুদান পেয়েছিল ৫০ লাখ টাকা। আরও প্রায় ৭৫ লাখ টাকা এসেছিল ফরাসি সরকারের সিএনসির সিনেমা ‘দ্যু মন্ড গ্রান্ট’ থেকে। এই ছবির ফরাসি প্রযোজক এর আগে অস্কারজয়ী তথ্যচিত্র মার্চ অব দ্য পেঙ্গুইনস প্রযোজনা করেছেন। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ছবিটি প্রযোজনা করেছে হাফ স্টপ ডাউন। সম্পাদনা করেছেন রোমানিয়ার লুইজা পারভ্যু ও ভারতের শঙ্খজিৎ বিশ্বাস। শব্দ ও রং সম্পাদনার কাজটি হয়েছিল ফ্রান্সের দুটি বিখ্যাত স্টুডিওতে। যেখানে নিয়মিত ডিজনির ছবিরও সম্পাদনা হয়।
এ ছাড়া ‘নোনা জলের কাব্য’ পায় টরিনো ফিল্ম ল্যাব অডিয়েন্স ডিজাইন ফান্ড ২০২০। এর অধীনে সুমিত তার চলচ্চিত্রকে বিশ্বের দর্শকের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য পেয়েছেন ৪৫ হাজার ইউরো। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ৪৫ লাখ টাকার সমান।
জানা গেছে, মহামারিকাল শেষ হলে বাংলাদেশের সিনেমা হলে মুক্তি দেওয়া হবে ছবিটি।
এরই মধ্যে সুমিত তাঁর পরের ছবি ‘আ নিউ প্রফেট’-এর জন্য পেয়েছেন স্লোন ফাউন্ডেশন গ্র্যান্ট। ১ লাখ ডলার, মানে প্রায় ৮৪ লাখ ৫৫ হাজার টাকা। এই বিজ্ঞাননির্ভর গল্পটির প্রেক্ষাপট জাদুর শহর ঢাকা।