Select Page

সাঁতাও: অনেক কিছুর গল্প, তাড়াহুড়াও অনেক

সাঁতাও: অনেক কিছুর গল্প, তাড়াহুড়াও অনেক

অবশেষে হল পেয়েছে সাঁতাও। সিনেমাটি দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর লড়াইয়ের গল্প। একজন কৃষকের অভাবের সাথে লড়াই, প্রকৃতির সাথে লড়াই, মানব সৃষ্ঠ প্রতিবন্ধকতার সাথে লড়াইয়ের গল্প সাঁতাও।

সিনেমাটিতে প্রকৃতি একটা বড় ইস্যু হলেও ক্যামেরা নিয়ে অযাচিত নিরীক্ষা করেননি পরিচালক। কিন্তু ফ্রেমে ফ্রেমে নদী অধ্যুষিত এলাকার জীবনাচার তুলে ধরেছেন। সেই সাথে নানা রকম পশু-পাখি-প্রাণীর ছোট ছোট অংশগ্রহণ আছে সিনেমাজুড়ে। বন্যা, খরা, ফসল সহ ঋতু পরিবর্তনের প্রতিটি বিষয় রিয়েল টাইমে ধারণ করায় দৃশ্যগুলো কিছুটা নতুনত্ব রেখেছে। ফলে স্বাভাবিকভাবে সিনেমাটির ব্যায় বেড়েছে বলে ধারণা রাখি।

বিভিন্ন পশুপাখি এবং ফসলের সমারোহ এর আগে একমাত্র ‘নেকাব্বরের মহাপ্রয়াণ’ সিনেমাতেই দেখা গিয়েছিল। যদিও সেখানে অনেক ডিটেইলে ছিল। আর সাঁতাওতে অংশগ্রহণ আছে। প্রতিটি চরিত্রের সহজ-সরল অভিনয় ভাল লেগেছে। গণ মানুষের অর্থায়নে গণ মানুষের সিনেমার বলতে যা বোঝায় সেটাই হয়েছে। লোকেশন, মেকআপ এবং কস্টিউম সবকিছুই পরিমিত।

এ ধরনের সিনেমা সাধারণত ধীরগতির হয়ে থাকে। তবে সাঁতাও ধীরের চেয়ে খানিকটা গতিশীল। তবে সিনেমাটিতে অনেক কিছু দেখাতে গিয়ে কোন কোনটা দুমদাম এসে চলে গেছে। এই তাড়াহুড়া ব্যপারটা ভাবনার ছন্দপতন ঘটিয়েছে। ফলে কিছু জায়গা খাপছাড়া হয়ে গেছে। তবে আগে বলা একটা কথা আবারো বলতেই হবে যে, রিয়েল টাইম এবং রিয়েল লাইভে দৃশ্য ধারণ করায় অনেক অনেক বিষয় উঠে এসেছে যার সাথে শহুরে ছেলে-মেয়েদের পরিচয় নেই। সিনেমাটি হলে কিংবা অনলাইনে যদি তারা দেখে, তখন নতুন অভিজ্ঞতা পাবে।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে সিনেমাটি আসলে কেমন হলো! উত্তরে বলবো: বাংলাদেশে এ জাতীয় সিনেমা সাধারণত যেমন হয়ে থাকে, তেমনটাই হয়েছে। সে হিসেবে ভালভাবে পাস। তবে আমাদের নির্মাতাদের ভাবনাগত জায়গায় পরিবর্তন আসাটা জরুরি। এই জাতীয় সিনেমা অন্যভাবেও বানানোর সুযোগ আছে। সময় বদলায়, নির্মাতা বদলায় কিন্তু পাণ্ডুলিপি বা চিত্রনাট্য বদলায় না। এই বদলটা জরুরি। তাতে কিন্তু সিনেমার গল্প-দর্শন একই থাকবে। কিন্তু চূড়ান্ত প্রদর্শন হবে অনেক বেশী আকর্ষণীয়।

সাঁতাও এর সাথে জড়িত সবার জন্য শুভকামনা। আগামীতে আরো সমৃদ্ধ চলচ্চিত্র পাওয়ার প্রত্যাশা রাখি। নতুন সিনেমার অপেক্ষায় রইলাম।

বি.দ্র.: সিনেমাটি ফেস্টিভলে বিনামূল্যে দেখেছি। আমার নীতিগত জায়গা থেকে বিনামূল্যে সিনেমা দেখে পাবলিক প্লেসে তা নিয়ে ভাল/মন্দ কোন মন্তব্য করার অধিকার থাকা উচিত নয়। তবে একজন নবীন নির্মাতার অভিষেক চলচ্চিত্র হিসেবে তাকে সমর্থন দিতে এবং তার শ্রমের প্রতি সম্মান জানিয়ে সিনেমাটি নিয়ে লিখলাম।


লেখক সম্পর্কে বিস্তারিত

নির্মাতা, লেখক ও উদ্যোক্তা .... “নিজের টাকায় টিকিট কেটে সিনেমার দেখি অধিকার নিয়ে দেই তালি বা গালি”

মন্তব্য করুন