সাক্ষাতকারঃ ‘রাজনৈতিক ছবিতে অভিনয় করতে চাই’- সাইমন সাদিক
বাংলা চলচ্চিত্রের উদীয়মান তারকা সাইমন সাদিক। দেশের প্রথিতযশা চলচ্চিত্রকর জাকির হোসেন রাজু-র পরপর দু’টো ছবিতে অভিনয় করে নজর কেড়েছেন সবার। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রাপ্ত পরিচালক জাকির হোসেন রাজু-র উৎসাহে ২০০৯ সালে এনটিভি-র ‘সুপার হিরো সুপার হিরোইন’ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ । এরপর ২০১২ সালে তার হাত ধরেই ‘জ্বী হুজুর’ ছবিটির মাধ্যমে চলচ্চিত্রে আগমন । এই মূহুর্তে বক্স অফিস কাঁপাচ্ছে তার ‘পোড়ামন’ ছবিটি। সময়ের ব্যস্ত এই তারকার শুটিং করেই দিন আর রাত কাটে এখন। শুটিংয়ের ফাঁকেই তিনি ক্যারিয়ার ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে মুখ ও মুখোশ-এর সঙ্গে কথা বলেছেন।
প্রশ্নঃ আপনি এখন কোথায় ?
কক্সবাজার ।
প্রশ্নঃ কোন ছবির শুটিংয়ে ?
সাইমন তারিক ভাইয়ের ‘মাটির পরী’ ছবির শুটিংয়ে।
প্রশ্নঃ আপনি তো এনটিভি’র ‘সুপার হিরো-হিরোইন’-এ অংশগ্রহণের মাধ্যমে চলচ্চিত্রে আসেন?
না না এটা ঠিক নয়। আমার সম্পর্কে সম্পূর্ণ ভুল একটি তথ্য। আমার ওস্তাদ জাকির হোসেন রাজুর পরামর্শে ও সহযোগিতায় আমি সুপার হিরো-হিরোইন- এ অংশগ্রহণ করি। আর আমি সরাসরি চলচ্চিত্রে এসেছি তাঁর হাত ধরেই।
প্রশ্নঃ একজন সুঅভিনেতার কী কী গুণ থাকা দরকার বলে মনে করেন ?
প্রথম যে গুণটি থাকতে হবে বলে মনে করি তা হলো ভালো অভিনয় জানা । ভেতরে আবেগ থাকতে হবে। ভালবাসা থাকতে হবে চলচ্চিত্রের প্রতি, অভিনয়ের প্রতি । ভালোবাসা থাকতে হবে কাজের প্রতি । চেষ্টা করছি যেনো অভিনয়ের কাজটা সঠিকভাবে করতে পারি । আমি যেনো আমার পরিচালককে, স্ক্রিপ্টকে ফলো করতে পারি । তাহলেই ভালো একটা ছবি হবে, ভালো অভিনয় উপহার দিতে পারবো। অন্যদের ক্ষেত্রে জানিনা, আমি এটাই বিশ্বাস করি ।
প্রশ্নঃ অভিনয়ে আপনার আইকন কে ?
আমার ছবি’র পরিচালক । যে ছবির কাজ করছি সেই ছবির পরিচালক । আর অভিনয়ের ক্ষেত্রে যদি বলেন তাহলে বলবো আমি অভিনয় পুরোটা শিখেছি আমার ওস্তাদের কাছেই ।
প্রশ্নঃ কোনো ছবিতে কাজ করার আগে কোন বিষয়টিকে প্রাধান্য দেন? পরিচালক, গল্প না সহশিল্পী?
প্রথমত পরিচালক । তারপর হচ্ছে চিত্রনাট্য বা গল্প। এরপর আমার সহশিল্পী বা নায়িকা । এছাড়াও আরেকটি বিষয় রয়েছে – প্রোডাকশন হাউজ । এই চারটা বিষয় আমি বিবেচনা করে দেখি ।
প্রশ্নঃ সাম্প্রতিক ‘পোড়ামন’ নিয়ে বেশ সাড়া পাচ্ছেন । এই সফলতাকে কোন পর্যায়ে নিয়ে যেতে চান?
এটা সবসময় ধরে রাখতে চাই । ধরে রেখে সামনে এগিয়ে যেতে চাই ।
প্রশ্নঃ এমন কোন পরিচালক আছে যার সঙ্গে কাজ করতে চান?
এ মূহুর্তে বাংলাদেশের প্রথম সারির চলচ্চিত্র পরিচালক যারা রয়েছেন মোটামুটি সবার সঙ্গেই কাজ করেছি বা করছি । যাদের সঙ্গে এখনও কাজ করা হয়নি তাদের সঙ্গেও কাজ করতে চাই । অনেকের সঙ্গে কথাও হচ্ছে । তাই আপাতত এ ব্যাপারে কোন অতৃপ্তি থাকার কারন নাই । আমি বিশ্বাস করি সামনের সময়গুলোতে আরো ভালো ভালো ছবিতে কাজ করতে পারবো ।
প্রশ্নঃ আপনার মুক্তিপ্রাপ্ত ‘জ্বী হুজুর’ ও ‘পোড়ামন’ ছবি দু‘টোতে প্রায় একই ধরনের রোমান্টিক চরিত্রে অভিনয় করেছেন । আমরা কি সামনে ভিন্ন ধরনের কোন চরিত্রে আপনাকে দেখব নাকি এই ধরনের চরিত্রেই কাজ করবেন ?
না, ঠিক তা নয়। এরপর আমার যে ছবিটি আসছে তা হলো রাজু স্যারের ‘এর বেশি ভালবাসা যায় না’.. ছবিটিতে আমি একজন চঞ্চল ছেলের চরিত্রে অভিনয় করেছি , যে সারাক্ষণ দুষ্টুমি করে বন্ধুদের সঙ্গে । আরেকটাতে আমার চরিত্র মা ভক্ত এক ছেলের । পি এ কাজল স্যারের একটি ছবিতে অ্যাকশনধর্মী চরিত্রে অভিনয় করেছি। একেকটা চরিত্র একেক রকম। একটির সঙ্গে আরেকটির মিল পাওয়া যাবেনা।
প্রশ্নঃ এখনতো ঢালিউডে নতুন অনেকেই আসছেন। তাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য নিজের ভেতর কোন বিষয়গুলো থাকা দরকার বলে মনে করেন?
আমি সবসময় মনে করি আমাদের ইন্ড্রাস্ট্রিতে কমপক্ষে পাঁচটা নায়ক থাকুক যারা মোটামুটি একই লেভেলের । তাহলে তাদের সঙ্গে তুলনা করে নিজেকে যাচাই করতে পারবো। কোনদিক থেকে আমি সবার চেয়ে আলাদা তা দেখানোর সুযোগ পাবো । তাতে ইন্ড্রাস্ট্রি রান করবে সবসময়। আর আমি সবসময় ভাল কিছু করার চেষ্টা করে যাচ্ছি আপনাদের দোয়ায় ।
প্রশ্নঃ এমন কোনো চরিত্র আছে, যা স্বপ্নের চরিত্র ?
রাজনৈতিক চরিত্রে অভিনয় করার খুব ইচ্ছা । তবে এখন না । আরও বয়স হোক । আরেকটু পরিপক্ক হই অভিনয়ের দিক থেকে ।
প্রশ্নঃ আপনার প্রিয় অভিনয়শিল্পী কে?
আমাদের দেশে সালমান শাহ’কে খুব ভালো লাগতো। এখনও লাগে । এখনও প্রায় সময় দেখি তাঁর ছবিগুলো । আর দেশের বাইরে হচ্ছে শাহরুখ খান।
প্রশ্নঃ আপনার হাতে থাকা ছবিগুলো কি কি ?
আমার ওস্তাদ জাকির হোসেন রাজু’র ‘এর বেশি ভালবাসা যায় না’, শাহাদাত হোসেন লিটনের ‘তোমার কাছে ঋণী’, পি এ কাজলের ‘চোখের দেখা’, সাইমন তারিকের ‘মাটির পরী’ … এছাড়া রাজু চৌধুরীর নাম ঠিক না হওয়া একটি ছবি ।
সাইমনের সাথে দেখা হয়েছিল টিএসসিতে। খুবই জেন্টল ছেলে মনে হয়েছে। জাকির হোসেন রাজুকে খুবই শ্রদ্ধা করে। অনুরোধ করেছিলাম – যেন ফেসবুক ব্লগের জেনারেশনের পালসটা ধরার চেষ্টা করে, তাহলে ভালো করার সুযোগ থাকবে তার সামনে। মনে রেখেছে কিনা সন্দেহ, তবে রাজনৈতিক ছবি করার আগ্রহটা আশাব্যাঞ্জক। বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছবি বানায় কাজী হায়াত, শহীদুল ইসলাম খোকনের মত পরিচালকরা। দেখা যাক তারা সাইমনকে নিয়ে কাজ করেন কিনা, অথবা, নতুন ভালো কোন পরিচালক এগিয়ে আসেন কিনা সাইমনকে কাস্ট করার জন্য। সাইমন ভালোই করবে বলে বিশ্বাস করি। তার জন্য শুভকামনা 🙂