সাত্তার: পোশাকি ছবির সুপারস্টার
ফোক ছবির একসময়ের অপ্রতিদ্বন্দ্বী-জনপ্রিয় নায়ক ছিলেন সাত্তার। তার অভিনীত অনেক ছবিই হিট-সুপারহিট হয়েছে। পেয়েছে ব্যাপক ব্যবসায়ীক সফলতা। কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে তার নিজের জীবনে অর্থনৈতিক সফলতা আসেনি কখনো।
তার মূল নাম আবদুস সাত্তার খোকন, ১৯৫৮ সালের ২৬ মে তিনি নারায়ণগঞ্জের গুবচরে জন্মগ্রহণ করেন। দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর ঢাকার একটি হসপাতালে ২০২০ সালের ৪ আগস্ট মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল মাত্র ৬২ বছর।
সাত্তারের বাবার নাম মোক্তার হোসেন, মায়ের নাম জোবায়দা খাতুন। ১৯৮৩ সালে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে এম.এ পাস করেন তিনি।
ইবনে মিজান পরিচালিত ‘আমির সওদাগর ও ভেলুয়া সুন্দরী’ ছবির সুটিং দেখতে গিয়ে একটি দৃশ্যে অভিনয় করেন শিশু সাত্তার। ছবিটি মুক্তিপায় ১৯৭০ সালে। এরপর তিনি শিশুশিল্পী হিসেবে অভিনয় করেন- ‘অতিথি’ ও ‘তীর ভাঙ্গা ঢেউ’ ছবিতে।
১৯৮৪ সালে এফডিসি’র ‘নতুন মুখের সন্ধানে’ কার্যক্রমের মাধ্যমে সাত্তার নতুনভাবে নায়ক হয়ে চলচ্চিত্রে পদার্পণ করেন। নায়ক হিসেবে তাঁর প্রথম ছবি ‘পাগলী’, মুক্তিপায় ১৯৮৫ সালে, পরিচালক কাজী হায়াৎ।
একসময় পোশাকি ছবির অপরিহার্য নায়ক হয়ে ওঠেন সাত্তার। তার অভিনীত অন্যান্য ছবির মধ্যে আছে- পাতাল বিজয়, রঙিন রূপবান, রঙিন রাখাল বন্ধু, শুভদা, রঙিন জরিনা সুন্দরী, রঙিন অরুণ বরুণ কিরণ মালা, নাগকন্যা, মধুমালা মদন কুমার, রঙ্গীন কাঞ্চনমালা, আলোমতি প্রেম কুমার, বনবাসে বেদের মেয়ে জোসনা, রঙ্গীন সাতভাই চম্পা, রাজবধূ, ভিখারীর ছেলে, বেদকন্যা পঙ্খিরানী, মোহনবাঁশি, মহুয়া সুন্দরি, জেলের মেয়ে রোশনী, সাগরকন্যা, শীষমহল, ঝড় তুফান, ঘর ভাঙা সংসার, ভালোবাসার যুদ্ধ, ইজ্জতের লড়াই, স্বামীহারা সুন্দরী, চাচ্চু আমার চাচ্চু, প্রভৃতি।
নায়ক সাত্তার এক সময় মডেলিংও করেছেন। অভিনয় অন্তপ্রাণ সাত্তার, মঞ্চে ও টেলিভিশন নাটকেও অভিনয় করেছেন। অসুস্থ হওয়ার আগে তিনি টেলিফিল্মও নির্মাণ করেছিলেন।
চলচ্চিত্রশিল্পী সমিতির আজীবন সদস্য নায়ক সাত্তার, বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথেও জড়িত ছিলেন। তিনি ছিলেন ‘নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা)’র প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও সাবেক যুগ্ম মহাসচিব।
২২ অক্টোবরকে ‘জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস’ ঘোষণার প্রস্তাবকের স্বীকৃতিস্বরূপ নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা)’র ‘রজতজয়ন্তীর সম্মাননা স্মারক’ দিয়ে সম্মানিত করা হয় নায়ক সাত্তারকে।
সূত্র : আজাদ আবুল কাশেম