‘সামথিং লাইক অ্যান অটোবায়োগ্রাফি’, সত্য-মিথ্যা অথবা তিশা-ফারুকীর ট্রেলার
সিনেমার নাম ‘সামথিং লাইক অ্যান অটোবায়োগ্রাফি’। পরিচালনার পাশাপাশি অভিনয় করেছেন মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, তাকে দেখতেও লাগছে ভীষণ কিউট; সঙ্গে নুসরাত ইমরোজ তিশা। যৌথভাবে গল্পও লিখেছেন তারা। ফলে ‘অটোবায়োগ্রাফি’ শুনে নড়েচড়ে বসলেও ট্রেলারে মিলল দুটি ভিন্ন নাম ফারহান ও তিথি। না, এখানে শেষ নয়। কিছু অজানা বিষয়ের সঙ্গে কিছু কিছু জানা ঘটনার মিল পাচ্ছেন দর্শক। আসলে কী হতে যাচ্ছে?
চরকি প্রযোজিত ফিল্ম সিরিজ ‘মিনিস্ট্রি অব লাভ’ এর ১২টি প্রজেক্টের একটি ‘সামথিং লাইক অ্যান অটোবায়োগ্রাফি’। সিনেমাটির ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার হচ্ছে বুসান চলচ্চিত্র উৎসবের চলতি আসরে। যেখানে মর্যাদাপূর্ণ ‘কিম জিসুক অ্যাওয়ার্ড’-এর জন্য মনোনীত হয়েছে। এ উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) প্রকাশ হয়েছে ছবিটির ট্রেলার। এ ছবিতে কী আছে, দর্শক ট্রেলার দেখে জেনে নিন। আশা করি মজাই পাবেন।
এ সিনেমা ব্যক্তিগত হওয়া নিয়ে মার্কিন চলচ্চিত্র বিষয়ক সাইট ভ্যারাইটিকে ব্যাখ্যা দেন ফারুকী বলেন, কোনো একটি ফিল্ম বানাই কারণ একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে আমার কিছু বলার আছে। শুধু গল্প বলার জন্য আমি ফিল্ম বানাতে পারি না। আমাকে দার্শনিকভাবে বিষয়ের সঙ্গে সংযুক্ত থাকতে হয়। এভাবে অন্যদের গল্প আমার ব্যক্তিগত গল্প হয়ে যায়। তাই আমি সবসময় বলি আমার সব ছবিই আত্মজীবনীমূলক। কিন্তু এই ছবির জন্য আমরাই বিষয়। আমি মনে করি মহামারী অবশ্যই আমাদের চিন্তা প্রক্রিয়াকে পরিচালনা করতে অবদান রেখেছে। মহামারীর সময়টি সম্ভবত আত্মপ্রতিফলনের সময় ছিল। এবং তখনই আমরা একসাথে এ স্ক্রিপ্ট লিখতে শুরু করি।
ভ্যারাইটি জানায়, চলচ্চিত্রটি ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক ভাবনাকে মিশিয়েছে। আবার ধরনের দিক থেকে রোমান্টিক-কমেডি ও সোশ্যাল-ড্রামার মিশ্রণ।
ফারুকী বলেন, এক ধরনের প্রেমের গল্প বলার অনেক চেষ্টা করেছি আমরা। একটি দম্পতির প্রেমের গল্প। তাদের স্বপ্ন ও ইচ্ছা সম্পর্কে প্রেমের গল্প। কিন্তু প্রেমের গল্পগুলো একরকম দুর্বলতার গল্পও। ‘সামথিং লাইক অ্যান অটোবায়োগ্রাফি’ মূলত মানুষ হিসেবে, দম্পতি হিসেবে, নাগরিক হিসেবে, সম্ভাব্য পিতামাতা হিসেবে এবং বছরের পর বছর পিতৃতান্ত্রিক মাছের বাটিতে সাঁতার কাটা দুটি হারিয়ে যাওয়া আত্মার মতো আমাদের দুর্বলতার গল্প। এটি একটি রাজনৈতিক চলচ্চিত্র বলে মনে হতে পারে কারণ এটি অত্যন্ত ব্যক্তিগত। কারণ ব্যক্তিগত বিষয় রাজনৈতিক।
ট্রেলারের শেষ দিকে ছবির দম্পতি তিথি ও ফারহানের মা-বাবার হওয়ার টুকরো দৃশ্য দেখা যায়। আছে এ বিষয়ে সামাজিক বৈরিতার দৃশ্য।
ফারকী বলেন, ছবিটিকে আমার মেয়ে ইলহামের কাছে আমার প্রেমপত্র হিসেবে দেখছি। যখন সে বড় হবে ও ফিল্মটি দেখার সুযোগ পাবে, আমি আশা করি সে আমাকে তার কানে ফিসফিস করে বলতে শুনবে, এটাই সেই পৃথিবী সেখানে তুমি এসেছ। তুমি যথাসাধ্য চেষ্টা করো যাতে তুমি যেখানে এসেছে তোমার সন্তানরা এর থেকে অনেক অনেক বেশি ভিন্ন একটি জগতে আসে।
অন্যদিকে তিশা বলেন, এই ছবি আমার হৃদয়ের খুব কাছের। শুধু এই কারণে নয় যে সহ-লেখক হিসেবে আমার প্রথম প্রয়াস। চলচ্চিত্রটি জীবনের খুব কোমল মুহূর্ত নিয়ে কাজ করেছে যা আমার কাছে খুব প্রিয়। বেশির ভাগ দর্শক খুব সহজেই রিলেট করতে পারবে। বিশেষ করে নারী দর্শকরা ছবিটির মুহূর্তগুলো অন্যভাবে অনুভব করবেন। একই ফিল্ম দুটি ভিন্ন মানুষের সঙ্গে তাদের অভিজ্ঞতা, লিঙ্গ, রঙ ইত্যাদির ওপর ভিত্তি করে ভিন্নভাবে কথা বলতে পারে। একজন নারী হিসেবে আমি এই ধরনের গল্প আরো বেশি বেশি দেখতে চাই। নারীরা দীর্ঘদিন ধরে নানা প্রশ্নের সম্মুখীন। একজন নারীর জন্য প্রশ্ন কখনই শেষ হয় না। এখন সময় এসেছে আমাদের পরিবর্তে কিছু প্রশ্ন ছুঁড়ে ফেলার।
এ ছবিতে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে আছেন ইরেশ জাকের। ‘সামথিং লাইক অ্যান অটোবায়োগ্রাফি’ নামটি জাপানি নির্মাতা আকিরা কুয়োসাওয়ার স্মৃতিকথা থেকে নেয়া বলে জানান ফারুকী।