Select Page

অনেস্ট মেকিং : সামথিং লাইক অ্যান অটোবায়োগ্রাফি

অনেস্ট মেকিং : সামথিং লাইক অ্যান অটোবায়োগ্রাফি

সামথিং লাইক অ্যান অটোবায়োগ্রাফি; প্ল্যাটফর্ম – চরকি: পরিচালনা – মোস্তফা সরয়ার ফারুকী:অভিনয় – মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, তিশা, শরাফ আহমেদ জীবন, ডলি জহুর, ডিপজল প্রমুখ।

সমাজের প্রচলিত ধারণার বলয় থেকে সাধারণ মানুষের সাংসারিক জীবন মুক্ত যেমন নয় তেমনি সেলিব্রেটিদের ক্ষেত্রেও তা নয়। তারাও সমাজের প্রচলিত ধারণার মাধ্যমে ভুক্তভোগী হয়ে থাকে। তাদের জীবনের চলমান সাফল্যের মধ্যেও একটা গতিহীনতা এসে যায় ‘লোকে কি বলবে’ জাতীয় ধারণার কারণে। এই চিরায়ত সামাজিক সমস্যার ওপর নির্মিত হয়েছে মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর কাজ ‘সামথিং লাইক অ্যান অটোবায়োগ্রাফি’। জনপ্রিয় ওটিটি প্ল্যাটফর্ম ‘চরকি’-তে মুক্তি পেয়েছে এ অরিজিনাল ফিল্মটি।

নির্মাতা ফারুকী বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়েই ফিল্মটির নাম দিয়েছেন ‘সামথিং লাইক অ্যান অটোবায়োগ্রাফি’। অটোবায়োগ্রাফির সাথে তুলনীয় বিষয়টির মধ্যেই মূলত এ ফিল্মের জিস্ট প্রকাশিত হয়েছে। ফারুকী-তিশা দম্পতির ঘটমান বাস্তবতার সাথেই ফিল্মটি রিলেট হয়ে যায় (গেছে) দর্শকের কাছে।

সেলিব্রেটি কাপলের ক্যারিয়ার যতই সফল হোক না কেন সমাজের টিপ্পনীর প্রচলিত সমস্যা তাদেরকেও ফেস করতে হয়। যার জন্য আমজনতার স্টেরিওটাইপ মেন্টালিটি থেকে তিশার ফ্যানের প্রশ্নটি আসে-‘বিয়ের দশ বছরেও আপনি বাচ্চা নেননি কেন?’ ফ্যান তার জায়গা থেকে প্রশ্নটি করেছে এক্ষেত্রে তার বোঝার ভুল হচ্ছে কোথায় কখন কাকে কি বলতে হবে তার কূল না পাওয়া। আর সেলিব্রেটি কাপল যতই সেন্সিবল, আপ-টু-ডেট হোক না কেন কোথাও না কোথাও তাদের মনে এ প্রশ্ন রেখাপাত করতে পারে এটাই ঘটা স্বাভাবিক। এই কেন্দ্রবিন্দু থেকেই ‘সামথিং লাইক অ্যান অটোবায়োগ্রাফি’ অনেস্ট হয়ে উঠেছে। বাস্তবতার ভেতর থেকেই এটি নির্মিত হয়েছে।

কোনো নির্মাতা যখন অভিনয়ের সাথে যুক্ত থাকে না এবং হঠাৎ অভিনয়টা করে তাকে ঘিরে আগ্রহ তৈরি হওয়াটা স্বাভাবিক হয়ে যায়। ফারুকীর ক্ষেত্রে এ ফিল্মে এটি ঘটেছে এবং দর্শকের আগ্রহের প্রধান কেন্দ্রে ছিল ফারুকী তিশা থাকার পরেও। ফারুকীর ন্যাচারাল অভিনয় দর্শকের জন্যও নতুন অভিজ্ঞতা। তিশার অভিনয় দর্শকের জন্য পুরনো, তার অভিনয় আগের মতোই অসাধারণ কিন্তু ফারুকী বিশেষ সংযোজন এখানে। ডিপজলের চরিত্রটি আগে থেকে প্রকাশ না করার কারণে আকর্ষণীয় হয়েছে।

ফারুকীর পরিচিত ক্যামেরার কাজগুলো এ ফিল্মেও ছিল। ক্লোজ শটের ব্যবহার তাঁর চলচ্চিত্রে যেভাবে ন্যাচারাল অভিনয়ের জন্য তুলে ধরা হত এখানেও তাই ছিল। আয়নার সামনে তিশার ত্রিমাত্রিক প্রতিবিম্বের শটটি যেন তার মনের ভেতর বাহিরের পাশাপাশি সমাজকেও প্রতিবিম্বিত করছিলো।

‘মিনিস্ট্রি অফ লাভ’-এর প্রথম কাজটিই ভালো হয়েছে। ফারুকী-তিশার বাস্তব জুটি পর্দায় দর্শক গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে এ মুহূর্তে এটাই সাফল্য এই টিমের।


লেখক সম্পর্কে বিস্তারিত

বাংলাদেশের চলচ্চিত্র গত শতকে যেভাবে সমৃদ্ধ ছিল সেই সমৃদ্ধির দিকে আবারও যেতে প্রতিদিনই স্বপ্ন দেখি। সেকালের সিনেমা থেকে গ্রহণ বর্জন করে আগামী দিনের চলচ্চিত্রের প্ল্যাটফর্ম গড়ে উঠুক। আমি প্রথমত একজন চলচ্চিত্র দর্শক তারপর সমালোচক হিশেবে প্রতিষ্ঠিত হবার স্বপ্ন দেখি। দেশের সিনেমার সোনালি দিনের উৎকর্ষ জানাতে গবেষণামূলক কাজ করে আগামী প্রজন্মকে দেশের সিনেমাপ্রেমী করার সাধনা করে যেতে চাই।

মন্তব্য করুন