Select Page

ব্ল্যাকস্টো/এআইয়ের মাধ্যমে মান্নাকে পর্দায় ফিরিয়ে আনায় শেলীর আপত্তি

ব্ল্যাকস্টো/এআইয়ের মাধ্যমে মান্নাকে পর্দায় ফিরিয়ে আনায় শেলীর আপত্তি

সম্প্রতি মুক্তিপ্রাপ্ত বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনিভিত্তিক সিরিজ ‘ব্ল্যাকস্টোন’–এ খলনায়কের ভূমিকায় মান্নাকে হাজির করেছেন তরুণ নির্মাতা শাহরিয়ার গালিব। মৃত্যুর দেড় যুগ পর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) সহায়তায় ঢাকাই সুপারস্টারকে পর্দায় ফেরানো নিয়ে আপত্তি তুলেছে তার পরিবার।

মান্নার স্ত্রী শেলী মান্না প্রথম আলোকে জানান, পরিবারের অনুমতি ছাড়াই মান্নাকে সিরিজে ব্যবহার করা হয়েছে। তার ভাষ্যে, ‘মান্নার ইমেজকে বিক্রি করা হয়েছে।’

নির্মাতা শাহরিয়ার গালিবের দাবি, তিনি অনুমতি নিতে মান্নার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন।

মান্নার স্ত্রী বলেন, ‘সিরিজটি বানানোর সময় কিংবা বানানোর পরও যোগাযোগ করা হলে সেটা মানা যেত, সেটা তারা করেনি। ট্রেলার প্রকাশের পর বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। আমরা কোনো অনুমতি দিইনি।’

বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনিভিত্তিক সিরিজ ‘ব্ল্যাকস্টোন’–এ খলনায়কের ভূমিকায় প্রয়াত অভিনেতা মান্নাকে হাজির করা হয়েছে

পরিবারের অনুমতি নিয়ে হলিউডের প্রয়াত তারকাদের এআইয়ের মাধ্যমে পর্দায় ফেরানোর নজির রয়েছে। ‘ব্ল্যাকস্টোন’ সিরিজে মান্নাকে ১০ সেকেন্ডের জন্য দেখা গেছে। শাহরিয়ার গালিবের দাবি, কোনো ভিডিওতে ১০ সেকেন্ডের মতো ফুটেজ রাখতে পরিবারের অনুমতি না নিলেও চলে।

তবে একজন তথ্যপ্রযুক্তিবিদ জানান, ভিডিওতে ১০ সেকেন্ডের ফুটেজ ব্যবহার করা যায়। কিন্তু এটি কোনো ভিডিও ফুটেজ নয়, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে মান্নাকে তুলে ধরা হয়েছে। এর ফলে সেই নিয়ম এখানে খাটবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।

আরেক প্রয়াত তারকা সালমান শাহও পরিচালকের ভাবনায় ছিলেন, তবে শেষ পর্যন্ত মান্নাকেই বাছলেন তিনি। পরিচালক শাহরিয়ার গালিবের ভাষ্যে, সিরিজটি অ্যাকশনধর্মী হওয়ায় মান্নাকে উপযোগী মনে হয়েছে তাঁর।

মান্নাকে কীভাবে পর্দায় ফেরানো গেল?–এমন প্রশ্নের জবাবে পরিচালক বললেন, ‘মান্নার মতো দেখতে একজন শিল্পীকে নির্বাচন করি, তাঁর চুলের স্টাইলও মান্নার মতো। তাঁকে দিয়ে অভিনয় করিয়েছি। এরপর সেই ফুটেজে এআই সফটওয়্যারের মাধ্যমে মান্নার মুখায়ব বসানো হয়েছে।’

এতে সময় লেগেছে দুই দিন। এআই প্রযুক্তি খুব ব্যয়বহুল। মান্নার ১০ সেকেন্ডের ক্লিপটি তৈরিতে শুটিং, সম্পাদনাসহ প্রায় ১০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।

মান্নার পরিবারের অনুমতি না নেওয়ায় ১০ সেকেন্ডের বেশি মান্নাকে পর্দায় রাখতে পারেননি বলে জানান পরিচালক। গালিবের ভাষ্যে, ‘কোনো প্রয়াত তারকাকে উৎসর্গ করে ১০ সেকেন্ডের মতো দৈর্ঘ্যের ক্লিপ রাখা যায়। আমরা এই ক্লিপ থেকে কোনো আয় করছি না।’

মহাকাশ থেকে একটা পাওয়ারফুল স্টোন (পাথর) এসে পৃথিবীতে পড়ে। যেখানে পড়ে, সেখানে দৈবভাবে সিরিজটির প্রধান চরিত্রটিও থাকে। সে পাথরটি দেখতে পায় এবং ছুঁয়ে ফেলে। যে কারণে ওই পাথর থেকে একটা শক্তি তার ওপর ভর করে। সে এক ধরনের ম্যাজিক্যাল পাওয়ার পায়। এতে তার দৈনন্দিন জীবনে ব্যাঘাত ঘটে। সে আর আগের মতো স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারে না। ছড়াতে থাকে গল্পের ডালপালা। এগিয়ে যায় কাহিনি।

সিরিজটিকে তিনটি ভাগে ভাগ করেছেন গালিব। এর মধ্যে ১ এপ্রিল ইউটিউবে মুক্তি পেয়েছে প্রথম সিজন। তারপর ১ মে উন্মুক্ত হবে এর দ্বিতীয় সিজন। আর তৃতীয় সিজনের দিন-তারিখ এখনও চূড়ান্ত হয়নি।

ব্ল্যাকবক্স স্টুডিওর ব্যানারে নির্মিত এ সিরিজে অভিনয় করেছেন চট্টগ্রামের স্থানীয় অভিনয়শিল্পীরা। বিভিন্ন চরিত্রে রয়েছেন রাফি, রাজিব, শাহরিয়ার কবির প্রমুখ। প্রযোজনা করেছেন রবিউল করিম।


মন্তব্য করুন