Select Page

‘সুপার হিরো’র মধ্যিখানে ‘অপারেশন অগ্নিপথ’ নিয়ে গণ্ডগোল

‘সুপার হিরো’র মধ্যিখানে ‘অপারেশন অগ্নিপথ’ নিয়ে গণ্ডগোল

শাকিব খান ও শবনম বুবলিকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় আশিকুর রহমান নির্মাণ করছেন ‘সুপার হিরো’ শিরোনামের সিনেমা। তার মাঝে গোল বাঁধিয়েছে আশিকুরের অসমাপ্ত সিনেমা ‌‘অপারেশন অগ্নিপথ’-এর প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান। এ বিষয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বাংলা ট্রিবিউন

সেখানে বলা হয়, শুটিং ফাঁসানো ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ এনে নির্মাতা আশিকুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা করতে যাচ্ছে অস্ট্রেলিয়াভিত্তিক প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান সিনেফেক্ট এন্টারটেইনমেন্ট। এই প্রতিষ্ঠানটি ‘অপারেশন অগ্নিপথ’-এর সহ-প্রযোজক।

অন্যদিকে নির্মাতা আশিকুর পাল্টা অভিযোগ করে বলছেন, শুরু থেকেই তিনি নানা হয়রানি ও সম্মানহানির শিকার হচ্ছেন ঐ প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের অস্বাভাবিক নানা কার্যক্রমে। যার জন্য অস্ট্রেলিয়া পুলিশের কাছে সম্প্রতি একটি অভিযোগও দায়ের করেছেন।

জানা গেছে, প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান সিনেফেক্ট এন্টারটেইনমেন্ট ইতোমধ্যে এ পরিচালকের বিরুদ্ধে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছে। পাশাপাশি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজারের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছে।

সিনেফেক্টের প্রতিনিধি মাহিন আবেদীন জানান, পরিচালক আশিকুর রহমান ২০১৫ সালে ‘অপারেশন অগ্নিপথ’ চলচ্চিত্রটি তৈরির জন্য প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হন। বেশ ঘটা করে ঘোষণা দিলেও, ছবির মূল শুটিংয়ের কাজ শুরু হয় ২০১৬ সালের ১৬ সেপ্টেম্বরে। গত দুই বছরে সিনেমার কাজ প্রায় ৬০ শতাংশের মতো শেষ হয়, বাকি কাজ ঝুলে আছে এখনও।

আরো জানান, অন্য প্রযোজক বাংলাদেশের ভারটেক্স ক্রিয়েশনকে ছবি নির্মাণের প্রয়োজনীয় অর্থ দিতে অপারগ মনে করে, বাকি অর্থের জোগান দিয়ে হলেও সিনেমাটির শুটিং শেষ করার জন্য পরিচালককে আহবান জানানো হয়। কিন্তু ছবির তারকা শিল্পীদের শিডিউল সংক্রান্ত সমস্যা ও বিভিন্ন বাহানা দিয়ে শুটিং করা থেকে বিরত থাকছেন পরিচালক আশিকুর।

তার ভাষায়, ‘‘অথচ শাকিব খানকে নিয়ে পরিচালক ‘সুপারহিরো’ ছবির কাজ শুরু করেছে। একই লোকেশন ও প্রায় একই ইউনিট কলাকুশলী নিয়ে কাজটি চালিয়ে যাচ্ছেন আশিকুর!’’

পরিচালক আশিকুর রহমান বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ায় ‘সুপারহিরো’ ছবির শুটিং করছেন। চলতি বছরের জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে ক্যামেরা চালু হয়েছে এটির।

অস্ট্রেলিয়াস্থ সিনেফেক্ট এন্টারটেইনমেন্টের তোলা অভিযোগ প্রসঙ্গে আশিকুর রহমান বলেন, ‘‘ওরা আসলে ‘অপারেশন অগ্নিপথ’ ছবিটি নিয়ে চিন্তিত নয়। তাদের উদ্দেশ্য শুটিং চলতি ‘সুপারাহিরো’ ছবিটির শুটিং বন্ধ করা। এখানে শুটিং করতে এসে প্রতিনিয়ত হয়রানির মুখোমুখি হচ্ছি আমরা। তারা পুলিশের কাছে নানা মিথ্যা অভিযোগ করেও আমাদের শুটিং বন্ধ করতে পারছে না। কারণ, আমাদের শুটিং প্রক্রিয়া শতভাগ নিয়মের মধ্যেই চলছে। শাকিব খান নিজেও বিষয়টি নিয়ে প্রচুর বিরক্ত।“

অস্ট্রেলিয়ায় ‘সুপারহিরো’র শুটিংয়ে শাকিব খানসিনেফেক্টের অভিযোগ তুলে ধরে আশিকুরের কাছে পাল্টা প্রশ্ন ছিল, তাহলে ‘অপারেশন অগ্নিপথ’ শুটিং শেষ হতে এত সময় লাগার কারণ কী? জবাবে আশিকুর রহমান বলেন, ‘‘দেখুন তারা যা যা বলছে তার প্রত্যেকটি বিষয়ে আমার কাছে তথ্যসহ প্রমাণ আছে। যা আমি আপনাকে মেইলে পাঠানোর পর মিলিয়ে দেখবেন। যে মেইলটি আমি গত বছর ৪ সেপ্টেম্বর সিনেমার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দুই প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানকেও পাঠিয়েছি। সেখানে আমি ‘অপারেশন অগ্নিপথ’ এর এভরি সিঙ্গেল ডিটেল তুলে ধরেছি। এবং আমি স্পষ্টভাবে বলেছি, এরমধ্যে ছবিটির শুটিং শেষ করতে না পারলে ১৫ নভেম্বর ২০১৭ থেকে আমি এই ছবি থেকে অব্যাহতি নেবো। কারণ, শাকিব খানের সিডিউল পাওয়া তো খুব সহজ বিষয় নয়। এর পরেও গত সেপ্টেম্বরে পর পর দুইবার সিডিউল নিয়েও শুটিং করতে পারিনি। কারণ, সিনেফেক্ট শুটিংয়ের দুইদিন আগে বলে টাকা ম্যানেজ করতে পারছে না! এসব কারণেই আমি ছবিটি থেকে অব্যাহতি নেওয়ার সিদ্ধান্ত জানাই। সেই সঙ্গে শুটিং হওয়া সব ফুটেজসহ পুরো হিসাব আমি তাদের বুঝিয়ে দেই। রাগে-অভিমান নিয়ে পুরো বিষয়টি বুঝিয়ে দেওয়ার পরেও আমি তাদের কাছ থেকে কোনও রকমের সাড়া পাইনি।’’

তিনি জানান, ‘অপারেশন অগ্নিপথ’ এর মাত্র ৪০ ভাগ শুটিং সম্পন্ন করতে পেরেছেন। যার পুরোটাই হয়েছে সিডনিতে। বাকি ৬০ ভাগ হওয়ার কথা বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডে। এর জন্য শাকিব খান গেল বছর আগস্ট থেকে সেপ্টেম্বরে একাধিকবার সিডিউল দিলেও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের অর্থনৈতিক অপারগতার কারণে শেষ মুহূর্তে শুটিং বাতিল করেন আশিকুর রহমান।

অস্ট্রেলিয়ান ডিরেক্টরস গিল্ডের সদস্যপদ পাওয়া বাংলাদেশী নির্মাতা আশিকুর রহমান আরও জানান, তাকে নানাভাবে হয়রানি করার কারণে সেখানকার নিউ সাউথ ওয়েলস পুলিশের কাছে সিনেফেক্ট এন্টারটেইনমেন্টের বিরুদ্ধে সম্প্রতি অভিযোগও দাখিল করেছেন।

এদিকে আশিকুর রহমানের মাধ্যমে এ বিষয়ে শাকিব খানের মন্তব্য চাইলে তিনি অস্ট্রেলিয়ায় বসে ‘সুপারহিরো’র ইউনিট থেকে বলেন, ‘আমি বিষয়টি নিয়ে খুবই বিরক্ত। খুবই। কিছু বলতেও ইচ্ছে করছে না।’


Leave a reply