সোহান-গুলজারের বিরুদ্ধে মিঞা আলাউদ্দিনের ১০ কোটি টাকার মানহানি মামলা
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সহ-সভাপতি সোহানুর রহমান সোহান ও মহাসচিব মুশফিকুর রহমান গুলজারের বিরুদ্ধে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত নং-১১ ঢাকায় ১০ কোটি টাকার মানহানির মামলা করেছেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মিঞা আলাউদ্দিন (মামলা নং-২৩/১৫, ধারা ৫০০/৫০১/১০৯)।
মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. আমিনুল হক অভিযোগ দেখে ফৌজদারি কার্যবিধির ২০০ ধারায় বাদীর জবানবন্দি রেকর্ড করে বাদীপক্ষের নালিশি অভিযোগ ও দাখিলি কাগজাদি পর্যালোচনা করে বাদীর অভিযোগ বিচার বিভাগীয় তদন্ত হওয়া প্রয়োজন বলে আদালতের কাছে প্রতীয়মান হওয়ায় পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মামলার নথিপত্র বিজ্ঞ সিএমএম বরাবরে প্রেরণের নির্দেশ প্রদান করেন। এ বিষয়ে বিবাদী সোহানুর রহমান সোহান ও মুশফিকুর রহমান গুলজারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে দুজনেই বলেন, আমরা মামলার কোন নোটিশ পাইনি। পাওয়ার পর আইনগতভাবে যেটা করা প্রয়োজন সেটা করবো।
এদিকে আদালতে দাখিলকৃত অভিযোগে বাদী মিঞা আলাউদ্দিনের পক্ষে তার আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবদুল্লাহ আল মামুন ভূইয়া বলেন, বাদী মিঞা আলাউদ্দিন নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানার সাথী সিনেমা হলের মালিক। তিনি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির একজন সদস্য এবং এ সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বাংলাদেশের চলচ্চিত্র প্রদর্শকদের উন্নয়ন ও স্বার্থ সংরক্ষণে কাজ করছেন। তাছাড়া তিনি সমাজে একজন সম্মানিত ব্যক্তি। আসামিরা চলচ্চিত্র ঐক্যজোটের সদস্য। ১নং আসামি পরিচালক সমিতির সহ-সভাপতি এবং ২নং আসামি একই সমিতির মহাসচিব। তারা দীর্ঘদিন যাবৎ বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির ক্ষতির চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন।
অভিযোগে বলা হয়, কিছুদিন আগে সরকারি আইন-কানুন ও নিয়মনীতি অনুসরণ করে বাংলাদেশের ২/১টি প্রেক্ষাগৃহে হিন্দি ছবি প্রদর্শনকে কেন্দ্র করে আসামিরা বাদীর সমিতির ওপর ক্ষিপ্ত হয় এবং সমিতির সব সদস্যকে ঢালাওভাবে দায়ী করে বিভিন্ন ধরনের মানহানিকর, অপমানজনক, জনমনে বিভ্রান্তিকর ও জনসমক্ষে হেয় প্রতিপন্নকারী বক্তব্য, বিবৃতি প্রকাশ ও প্রচার করে আসছেন। গত ১৭ই জানুয়ারি ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনী মিলনায়তনে চলচ্চিত্র ঐক্যজোটের ব্যানারে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আপত্তিকর মন্তব্য করেন।
লিখিত বিবৃতিতে বাদীকে উদ্দেশ্য করে তারা বলেন, ‘হাতেগোনা দুই তিনজন দেশপ্রেমহীন বেনিয়া, স্বার্থন্বেষী ব্যক্তি আমাদের চলচ্চিত্রই নয়, ভাষা, সাহিত্য, শিল্প সংস্কৃতিকে ধ্বংসের চক্রান্তই করছে না, তারা আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে ধ্বংস করার চক্রান্ত করছে। অভিযোগে আরও বলা হয়, প্রদর্শকদের অনেকেই প্রযোজক কর্তৃক মনোনীত প্রতিনিধিকে ঘুষ দিয়ে কিনে ফেলেন। এছাড়া ভিডিও পাইরেসি হয় প্রেক্ষাগৃহ থেকে। প্রদর্শকরা আমাদের চলচ্চিত্রকে রক্তচোষা হায়েনার মতো চুষে খেয়ে ফেলেছে ইত্যাদি উক্তি করা হয়।
অভিযোগে বলা হয়, বাদীর ব্যক্তিগত ও সামাজিক মর্যাদা, সুনাম, খ্যাতি ও পারিপার্শ্বিক অবস্থা ইত্যাদি বিবেচনা করে আসামিরা ১০ কোটি টাকা ক্ষতি করেছেন। ফলে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির কার্যনির্বাহী পরিষদ তাদের ২৬/১/২০১৫ তারিখের সভায় আসামিদের বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ ও ক্ষোভ প্রকাশ করে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়েরের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
সূত্র: মানবজমিন