২০২১: বিএমডিবির জন্য উল্লেখযোগ্য বছর
বাংলা মুভি ডেটাবেজ তথা বিএমডিবির যাত্রা ২০১৩ সালে। বাংলা চলচ্চিত্রের ক্ষয়িষ্ণু সময়ে চলচ্চিত্র কেন্দ্রিক তথ্যের ডিজিটাল আর্কাইভ হিসেবে দিন দিন সমৃদ্ধ হওয়ার কঠিন লক্ষ্য আমাদের। প্রতিদিন একটু একটু আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। তা হয়তো ৬০ বছরের বাংলা চলচ্চিত্রের তুলনায় অল্প গতিতেই, কিন্তু নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও আমরা এখনো আছি। থাকবো।
২০২১ সালের সিনেমা, নাটক নিয়ে আমরা ইতিমধ্যে সালতামামি প্রকাশ করেছি। আমাদের ক্ষুদ্র সামর্থ্যের মধ্যে তা হয়তো খুব মানসম্পন্ন নয়। কিন্তু আপনার তুলনা করার বা আমাদের ভুল ধরিয়ে দেওয়ার একটা সুযোগ তো হলো বটে!
সেই সালতামামির বাইরে বিএমডিবির একটা সালতামামি হয়ে যায় দু-এক কথায়। কী বলেন!
২০১৩ সালে আমরা যে কয়েকজন এক বন্ধু এই প্রজেক্টের সঙ্গে ছিলাম, এখন আমরা ততটা নেই। খুবই সময়োচিত পদক্ষেপ হিসেবে এ সিদ্ধান্তগুলো নেওয়া। কিন্তু ভালোবাসার কমতি নেই কারো। ফলে আমাদের সেচ্ছাশ্রমী ছোট টিমটি অবিচল। এর মধ্যে ২০২০ ও ২০২১ সাল আমাদের জন্য ছিল বেশি সংকটাপন্ন। এক দিকে ঢাকাই ইন্ডাস্ট্রির মরণদশা, অন্যদিকে আমাদের একাধিক সদস্যের দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতার কারণে ডেটাবেজের আপডেট কখনো কখনো শূন্যের কাছাকাছি ছিল দিনের পর দিন। আবার কখনো পেশাগত জটিলতা ছিল!
এ সব কারণে ২০২১ সালে আমাদের ‘ভিজিটর সংখ্যা’ একদমই কমে যায়। কিন্তু বছরের শেষ নাগাদ খানিকটা হলেও দিশা আমরা দেখছি, যে কারণে আমরা এখন আর হতাশ নই। মনে হচ্ছে, কিছু একটা হবে। বাংলা চলচ্চিত্র ঘুরে দাঁড়াবে। ঘুরে দাঁড়াবে বিএমডিবিও। এই মুহূর্তে আমাদের পাঠক সংখ্যা এক বছর আগের চেয়ে দশগুনের চেয়ে বেশি। অর্থাৎ, সিনেমা হলে দর্শক না থাকলেও সিনেমা নিয়ে জানতে বা বলতে আগ্রহী কম নন। তাদের জন্য ছবি নির্মাণ হলে অবশ্যই আসবেন, সে কথা জানান দিচ্ছেন! পাঠকের ইতিবাচক সাড়ায় অরগানিকভাবে ফেসবুকে আমাদের রিচও বেড়েছে। আশা করি ভবিষ্যতেও আপনারা আমাদের পাশে থাকবেন।
আমরা বরাবরই আমাদের কাজ নিয়ে প্রচারবিমুখ। কারণ সীমিত সামর্থ্য। কিন্তু আমরা এটাও বিশ্বাস করেছি, আপনার চেষ্টা ও নিষ্টা থাকলে যাদের প্রয়োজন বা যারা আমাদের কাজকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন তারা ঠিকই খুঁজে নেবেন। পাঠকদের কাছ থেকে এমন অনেক উদাহরণ আমরা পেয়েছি। এই বছরই যখন আমরা নানা দুর্বিপাকে সময় কাটাচ্ছি তখন দেশের দুটি শীর্ষস্থানীয় সংবাদ মাধ্যম আমাদের কাভারেজ দিয়েছে। তারা আমাদের খুঁজে নিয়ে, দিনের পর দিন কথা বলে দুটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
গত ২ আগস্ট দেশের প্রধানতম সংবাদপত্র প্রথম আলোর বিনোদন পাতার লিড স্টোরি ছিল ‘ওদের আছে আইএমডিবি, আমাদের বিএমডিবি’। আমাদের ধারণা ছিল, ছোট্ট একটা কাভারেজ হয়তো দেবেন তারা। কিন্তু তারা আমাদের গুরুত্ব বুঝতে পেরেছেন বলে আন্তরিক ধন্যবাদ।
এর কয়েক সপ্তাহ পর আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে যমুনা টেলিভিশন। শীর্ষ স্থানীয় সংবাদভিত্তিক চ্যানেলটি তাদের শোবিজ টুনাইট অনুষ্ঠান ১৯ সেপ্টেম্বর দীর্ঘ একটি প্রতিবেদন প্রচার করে। যা ছিল আমাদের জন্য সম্মানের।
বর্তমানে বিএমডিবিতে দুই হাজারের বেশি চলচ্চিত্রের ডেটা রয়েছে। যার মধ্যে তিন শতাধিক এন্ট্রি এসেছে চলতি বছরে। এ ছাড়া কয়েকশ’ চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির তথ্য যোগ হয়েছে। এ ছাড়া আমরা (সংকলিত) প্রতিবেদন, ব্লগ ও রিভিউ মিলিয়ে ছয়শটির মতো আর্টিকেল প্রকাশ করেছি। আমাদের প্রত্যাশা, এ সংখ্যা নতুন বছরে দ্বিগুণ হবে। সাক্ষাৎকার, ভিন্নধর্মী ফিচারসহ ব্রেকিং নিউজ দিতে পারবো সামনে। বর্তমানে ডেটাবেজকে কারিগরিভাবে সমৃদ্ধ একটি ওয়েবসাইটে রূপান্তরে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি। আশা করি তাতেও আমরা সফল হবো।
ভালো থাকুন সবাই। বাংলা সিনেমার সঙ্গে থাকুন। বিএমডিবির সঙ্গে থাকুন। নতুন বছরের শুভেচ্ছা।