খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে তারকাদের শোক
বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বিনোদন অঙ্গনের তারকারা।

খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক শোকবার্তায় দেশের শীর্ষ নায়ক শাকিব খান গভীর সমবেদনা জানান।
খালেদা জিয়ার একটি সাদাকালো ছবি শেয়ার করে শাকিব খান লিখেছেন, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ইন্তেকালে গভীর শোক প্রকাশ করছি। তার রুহের মাগফিরাত কামনা করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই।’
শোক প্রকাশ করে নগরবাউল জেমস ফেসবুকে লেখেন, ‘শোক ও বিনম্র শ্রদ্ধা, বাংলাদেশের তিনবারের নির্বাচিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ইন্তেকালে আমরা গভীর শোক প্রকাশ করছি (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মহান আল্লাহ তায়ালা যেন তাঁকে জান্নাতুল ফিরদাউসের সর্বোচ্চ মাকামে অধিষ্ঠিত করেন—আমিন। শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি আমরা গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।’
মাইলস ব্যান্ডের প্রধান ও বামবা প্রধান হামিন আহমেদ লিখেছেন, ‘একটি যুগের অবসান। চারদিকে ষড়যন্ত্রকারী এবং দুষ্ট লোকে ভরা সেই যুগে মাননীয়া বেগম খালেদা জিয়া সততা, দেশপ্রেম এবং সংকল্পে সবচেয়ে উঁচুতে ছিলেন। গভীর ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধা। আল্লাহ (সুবহানাল্লাহ তায়ালা) তাঁর আত্মাকে জান্নাত নসিব করুন।’
জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসান এক পোস্টে তিনি শোকবার্তা জানানোর পাশাপাশি এই আপসহীন নেত্রীর রাষ্ট্র ও জাতির প্রতি অবদানের কথা স্মরণ করেন।
তিনি বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া বড় দুঃসময়ে বিদায় নিলেন। সামনে নির্বাচন আর গণতন্ত্রের জন্য মানুষ অপেক্ষা করছে। তাঁর উপস্থিতির মূল্যই ছিল অসামান্য। সামরিক-শাসন বিরোধী এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে বেগম জিয়া ছিলেন প্রধান একটি চরিত্র, সাহসে ও নেতৃত্বে উজ্জ্বল। তাঁর সঙ্গে দেশের দীর্ঘ রাজনৈতিক আন্দোলনের একটি অধ্যায় শেষ হলো। তার আত্মা চিরপ্রশান্তি লাভ করুক।’
খালেদা জিয়ার একটি ছবি প্রকাশ করে দেশের অন্যতম নির্মাতা ও সঞ্চালক হানিফ সংকেত লেখেন, ‘সর্বজন শ্রদ্ধেয়, সাবেক তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া আজ ৩০ ডিসেম্বর ভোর ছয়টায় আমাদের ছেড়ে চিরবিদায় নিয়েছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তার এই মৃত্যুতে জাতি হারিয়েছে একজন অভিভাবক। দেশ ও জাতির কল্যাণে তার অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।’
আরও লেখেন, ‘তার এই মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাকে জান্নাতুল ফিরদাউস নসিব করুন। তার শোকাহত পরিবারের সদস্যদের প্রতি জানাচ্ছি গভীর সমবেদনা।’
অভিনেতা আরিফিন শুভ লেখেন, ‘দেশের প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব বেগম খালেদা জিয়ার বিদায়, দীর্ঘ এক রাজনৈতিক অধ্যায়ের সমাপ্তি। আল্লাহ তাঁকে উত্তম মর্যাদা দান করুন।’
এদিকে বিএনপি’র রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত বেবী নাজনীন এক শোকবার্তায় বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার মতো মহান নেত্রীর শূন্যতা বাংলাদেশের মানুষ সবসময় অনুভব করবে। শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে তাঁকে যে কষ্ট দেওয়া হয়েছে, তার প্রতি যে অবিচার করা হয়েছে, এর বিচার মহান আল্লাহ অবশ্যই করবেন। তিনি দেশ এবং মানুষের জন্য যে ত্যাগ স্বীকার করছেন, রাজনীতির ইতিহাসে সেটা নজিরবিহীন।’

বেবী নাজনীন আরও বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুর খবরে আজ বাকরুদ্ধ হয়ে গেছে মানুষ, বাকরুদ্ধ হয়ে গেছে সারা দেশ। মহান আল্লাহ যেন তাকে বেহেস্ত নসিব করেন, জিয়া পরিবারকে এই শোক সইবার শক্তি দান করেন।’
গান গাওয়ার পাশাপাশি একটা সময় বেবী নাজনীন রাজনীতিতেও সক্রিয় হন। বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে তিনি নিজেকে যুক্ত করেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে কাছাকাছি দেখার সুযোগ হয়েছে তার।
বেবী নাজনীন বলেন, ‘বেগম জিয়ার এই অন্তিমযাত্রায় তিনি যেমন মানুষের দোয়া নিয়ে গেছেন, তেমনি দেশের মানুষের জন্য রেখে গেছেন আশীর্বাদ, যা আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণে মানুষের গণতান্ত্রিক শক্তি হয়ে কাজ করবে। তার উত্তরসূরি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সেই শক্তির মাধ্যমেই নতুন এবং সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গঠনে এগিয়ে যাবেন।’
গায়ক মনির খানও বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। দলটির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে অঝোরে কেঁদেছেন এই শিল্পী। শোক প্রকাশ করে সংবাদমাধ্যমকে কাঁদতে কাঁদতে মনির খান বলেন, ‘এমন এক নেত্রীকে আমরা হারিয়েছি, যার মৃত্যুতে আজ সারা বাংলাদেশের মানুষ কাঁদছে। তিনি জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিকসহ সব সংকটে নেতৃত্ব দিয়েছেন।’
মনির খান বলেন, ‘ভিন্ন মত বা ভিন্ন ধর্মের মানুষ—কারো ক্ষেত্রেই তিনি কখনো বৈষম্য করেননি। তিনি সব সময় দেশ ও মানুষের কথাই ভেবেছেন। দেশ ও মানুষের জন্য নিজের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য বিসর্জন দিয়েছেন। কতবার অসুস্থ হয়ে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছেন।
দেশের বাইরে গিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য অনেক চেষ্টা করা হয়েছিল, কিন্তু তিনি কখনো যেতে চাননি। সব সময় দেশের মাটি ও দেশের মানুষের কাছাকাছি থাকতে চেয়েছেন।’
তিনি আরো বলেন, শেষবার তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডন নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তিনি স্পষ্টভাবে বলেছিলেন, তার মৃত্যু যেন দেশের মাটিতেই হয়, জানাজা ও দাফন যেন এই মাটিতেই সম্পন্ন হয়।
আজ আমার মতো সারা দেশের মানুষ বাকরুদ্ধ হয়ে আছে। আল্লাহ তাকে বেহেশত নসিব করুন। তার পরিবারের সদস্য ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে শোক সহ্য করার শক্তি দান করুন। মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে ধৈর্য দান করুন।’
ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিউন। বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী বি এন পি’র চেয়ারপারসন জননেত্রী বেগম খালেদা জিয়া’র বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করি। বাংলাদেশ আপনাকে সব সময় গর্বের সাথেই স্মরণে রাখবে। শ্রদ্ধা
নিজের ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে বেগম জিয়াকে নিয়ে পরীমনি লিখেছেন, ‘তিনি চলে গেলেন..! তিনি সয়ে গেলেন, তিনি রয়ে গেলেন।
তিনি এভাবেই থেকে গেলেন এই মানচিত্রে। বেগম খালেদা জিয়া আপনি জিতে গেলেন আসলে।’
খালেদা জিয়ার একটি সাদাকালো ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে চঞ্চল চৌধুরী লিখেছেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছি। শ্রদ্ধা।’
অপু বিশ্বাস লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার এই চিরবিদায় যেন মহাকালের সাক্ষী হয়ে রইল। একজন মহিয়সী নারীর প্রস্থান যেন যুগে যুগে বাংলাদেশের মানুষের হৃদয় লেখা থাকবে। বিনম্র শ্রদ্ধা।’
জিয়াউল হক অপূর্ব লিখেছেন, ‘মহান আল্লাহ তাঁকে জান্নাত নসিব করুক।’ শোক জানিয়ে সিয়াম আহমেদ লিখেছেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।’
তানজিকা আমিন লিখেছেন, ‘একজন অবিচল নেত্রী, মেয়েদের শিক্ষার প্রসারক (দশম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা বিনা মূল্যে করা হয়েছিল) আপনি চিরশান্তিতে বিশ্রাম নিন।’বাঁধন লিখেছেন, ‘তিনি এক অসাধারণ ও দৃঢ়চিত্ত জীবন যাপন করেছেন। প্রতিকূলতার মধ্যেও তিনি যে মর্যাদার সঙ্গে নিজেকে ধারণ করেছেন, তা স্মরণীয় হয়ে থাকবে। জাতি তাঁকে মর্যাদা, কৃতজ্ঞতা ও গভীর সম্মানের সঙ্গে স্মরণ করবে।’
নির্মাতা আশফাক নিপুণ লিখেছেন, ‘আল্লাহ আপনাকে জান্নাত নসিব করুন। প্রতিপক্ষের হাতে মানবিক মর্যাদা থেকে বঞ্চিত হওয়ার পরও আপনি ছিলেন দৃঢ়তা, সৌন্দর্য ও কখনো হার না মানার প্রতীক। শান্তিতে বিশ্রাম নিন, বেগম খালেদা জিয়া। এই জাতি আপনাকে সব সময় গর্বের সঙ্গে স্মরণ করবে।’
খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে সংগীতশিল্পী পড়শী লিখেছেন, ‘কিছু মানুষ শুধু রাজনীতির গণ্ডিতে নয়, ইতিহাসের অংশ হয়ে থাকেন। আজ ইতিহাসের একটি অধ্যায় থেমে গেল।’
শবনম বুবলী লেখেন, ‘বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তাঁর বিদেহী আত্মা চিরশান্তিতে থাকুক। আমিন।’
নুসরাত ফারিয়া লেখেন, ‘আল্লাহ তাঁকে ক্ষমা করুন এবং জান্নাতুল ফেরদৌস দান করুন।’
গত ২৩ নভেম্বর থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন বেগম খালেদা জিয়া। মঙ্গলবার ভোর ৬টা নাগাদ তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
১৯৪৬ সালের ১৫ আগস্ট দিনাজপুরে জন্মগ্রহণ করা এই নন্দিত নারী ১৯৯১ সালে বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিন মেয়াদে তিনি দেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন।
১৯৬০ সালে সেনাপ্রধান ও পরবর্তীকালে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। ফার্স্টলেডি থেকে শুরু করে বাংলাদেশের রাজনীতির শীর্ষ নেতৃত্বে তার পদচারণা ছিল দীর্ঘ ও ঘটনাবহুল।






