![অনুদান পাওয়ার সাত বছর পর মুক্তি পাচ্ছে ‘আজব কারখানা’](https://i0.wp.com/bmdb.co/wp-content/uploads/2024/06/ajob_karkhana1_bmdb_image.jpg?resize=150%2C150&ssl=1)
রুবেলের আনকমন সিনেমা ‘অকর্মা’
![okorma-rubel-bangla-cinema](https://i0.wp.com/bmdb.co/wp-content/uploads/2016/11/Okorma-Rubel-bangla-cinema.jpg?resize=960%2C720)
একজন নায়কের মেইনস্ট্রিম বাণিজ্যিক সিনেমাও একটা বিশেষ কারণে তার বাকি সিনেমাগুলোর থেকে সম্পূর্ণ আলাদা হতে পারে।মার্শাল আর্টে পারদর্শী শৈল্পিক নিজস্বতার নায়ক রুবেল তার ‘অকর্মা’ সিনেমায় সম্পূর্ণ নতুন একটা ইমেজে হাজির হয়েছিল।নতুনত্বের সে সূত্রটি ছিল লুক পরিবর্তন।গোঁফওয়ালা নায়কের গোঁফহীন ভোলাভালা ক্যারেক্টারাইজেশন একদম আমূল বদলে দিয়েছিল নায়ক রুবেলকে।কাজটি যিনি সম্পূর্ণ দক্ষতার সাথে করেছেন তিনি মাস্টারমেকার শহীদুল ইসলাম খোকন। তাঁর অনেক অর্জনের মধ্যে যাদের অবদান রুবেল তার অন্যতম উপাদান কারণ রুবেলকে নিয়ে তিনি একাধারে কাজ করেছেন।রুবেলও খোকনকে আস্থার প্রতিদান দিয়েছিল।
মেইনস্ট্রিম কমার্শিয়াল সিনেমায় নব্বই দশকে দারুণ একটা প্রতিযোগিতা ছিল।কে কার থেকে ভালো মসলাদার সিনেমা বানাবে এ কালচারটা ছিল।এ প্রতিযোগিতার জন্যই ভালো কাজ তখন অনেক হয়েছে।শহীদুল ইসলাম খোকনের তখন পয়মন্ত অবস্থা।কারণ তিনি তাঁর সময়ের থেকে এগিয়ে আধুনিক ছিলেন।
‘অকর্মা’ নামকরণের ট্যাগলাইন ছিল ‘good for nothing’.অসাধারণ ট্যাগলাইন।খোকন সাহেবের ডিরেকশনের সেন্স এমন তীক্ষ্ণ ছিল যে কোথায় কি দরকার, কতটুকু দরকার সেটার মাপজোক জানতেন।স্টোরি টেলিং এ দুটি পার্ট ছিল।গ্রাম ও শহর।গ্রামের রুবেল ছিল একদম নিপাট সহজ-সরল।বন্ধুদের তুলনায় একেবারে গোবেচারা।দিলদার, সুরুজ বাঙ্গালী রুবেলকে ঘোল খাওয়ায় সবসময় তাতে রুবেল খুশিই থাকে কারণ ভালোমন্দ সে বোঝে না। সামান্য কিছুতেই খুশি হত আবার রাগ করত।মায়ের দুঃখ বুঝতে নিজে পড়ে গিয়ে পায়ে ব্যথা পাওয়ার সাথে তুলনা দিত।সুচরিতা তার মেমসাহেব।তাকে ভালোবেসে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে তাদের বাড়ি গেলে সুচরিতার ভাই কবির খাঁ প্রচণ্ড মারধর করে।পনেরো লাখ টাকার কথা বলে।যদি সে কামাই করে আনতে পারে তবে বিয়ে দেবে।রুবেল প্রতিজ্ঞা করে সেটা করবে।শহরে পাড়ি জমালে সেখানে সে মার্শাল আর্টের গুরুর সুদৃষ্টি পায়।সোহেল রানা-ববিতার নতুন একটি গল্প থাকে সেখানে।রুবেল-সুচরিতার দেখা শহরেই হয়।অামির সিরাজীর হাই কমান্ডে ড্যানি সিডাকের অবাক করা অাগমনের মাধ্যমে অদ্ভুত সুন্দর ক্লাইমেক্সে সিনেমা শেষ হয়।
![](https://i0.wp.com/bmdb.co/wp-content/uploads/2023/08/okarma_poster_bmab_imgae.jpg?resize=800%2C450&ssl=1)
টান টান উত্তেজনা যেখানে মেইনস্ট্রিম কমার্শিয়াল সিনেমার অবধারিত বৈশিষ্ট্য সেটি সিনেমায় অক্ষরে অক্ষরে মেলে।রুবেলের অভিনয় এত ন্যাচারাল ছিল গ্রামীণ প্রেক্ষাপটে যে তুলনা নেই।বিশেষ করে কবির খাঁর কাছে মার খাওয়ার পরে মুখ দিয়ে লালা পড়ার সময় ফুঁপিয়ে কাঁদার মুহূর্তে রুবেলের অভিনয় মাইন্ড ব্লোয়িং।তার অভিনয়দক্ষতার জন্য এ সিনেমা অবশ্যই স্মরণযোগ্য।রুবেলের অভিনয় এ সিনেমায় ইনোসেন্ট+কমেডি+অ্যাকশন এ তিন ক্যাটাগরিতে অসাধারণ হয়ে উঠেছিল।গ্রামে সে যখন বোকা বা সরল তার আচরণে ইনোসেন্ট ক্যাটাগরি ছিল।পথে চলতে গিয়ে এক চাচাকে মাড়িয়ে অাসার সময় চাচা বলে-‘তুই অাদব কায়দা শিখিসনি?’রুবেল বলে-‘চাচা, আদব কী?’চাচা একটা চড় মেরে অাদব শিখতে বলে।রুবেল ভেবে নেয় এটা আদবের অংশ তাই সে চাচাকেও চড় মারে।চাচা চারপাশে তাকিয়ে বলে-‘তুই আমাকে যে আদব দেখালি এটা কাউকে বলিস না।’এ ঘটনাটি ছিল নির্মল কমেডি।শহরের পার্টটি অ্যাকশনের।
অন্যান্য ঘটনাগুলোতে রুবেলকেন্দ্রিক একটা আবহ ছিল।যা কিছু ঘটেছে রুবেলের গল্পকে সার্বিকভাবে প্রেজেন্ট করার জন্যই ঘটেছে।রুবেলের আনকমন লুক তাকে ঐ সময়ে তার অন্য সিনেমাগুলো থেকে তাকে সহজে বেছে নিতে সাহায্য করে ‘অকর্মা’ সিনেমাটি। রুবেলের পুরো ক্যারিয়ারেই এ সিনেমা বিশেষ হয়ে আছে।
কৃতজ্ঞতা : সানু ভাই