Select Page

আব্দুল আজিজের কাছে ক্ষমা চাইলো কে?

আব্দুল আজিজের কাছে ক্ষমা চাইলো কে?

প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জাজ মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে চলচ্চিত্র ক্যারিয়ার শুরু করেন বাপ্পী চৌধুরী। এরপর এই প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের বেশ কিছু সিনেমায় অভিনয় করেছেন।কিন্তু ২০১৭ সালে যৌথ প্রযোজনার সিনেমা নিয়ে ঢালিউড শিল্পীদের আন্দোলনের সময় অন্যদের সঙ্গে বাপ্পীও জাজের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন।

সেই সময় জাজ মল্টিমিডিয়ার কর্ণধার আব্দুল আজিজের বিরুদ্ধে স্লোগানও দিয়েছিলেন তিনি। প্রায় দুই বছর পর ভুল স্বীকার করে প্রযোজক আব্দুল আজিজের কাছে ক্ষমা চাইলেন বাপ্পী।

১৮ জানুয়ারি তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক অ্যাকাউন্টে পোস্ট করা একটি স্ট্যাটাসে লেখেন- ‘দেশে সিনেমা নির্মাণ কমে এসেছে প্রায় শূন্যের কোঠায়। প্রযোজকরা এখন ভয়ে ইনভেস্ট করছে না। এফডিসিতে নাকি সিনেমা বানানোর পরিবেশ নেই, সেখানে এখন একে অপরের পিছনে লেগে থাকে এমন মন্তব্য তাদের। অথচ ২০১৭ সালে রোজার ঈদে নবাব ও বস ২ সিনেমা মুক্তির আগে চলচ্চিত্র পরিবার থেকে আন্দোলন শুরু হয়। সেই আন্দোলনে আমিও যোগ দিয়েছিলাম। বলা হয়েছিল, যৌথ প্রযোজনার নামে যৌথ প্রতারণা বন্ধ হলে, আমাদের দেশের শিল্পীদের কাজ বৃদ্ধি পাবে, ঘুরে দাঁড়াবে আমাদের চলচ্চিত্র, সমৃদ্ধ হবে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র। দেশের সিনেমার উন্নয়ন হবে এ কথা ভেবে যোগ দিয়েছিলাম আন্দোলনে, বিপক্ষে দাঁড়িয়েছিলাম যৌথ প্রযোজনার বিরুদ্ধে। এই জন্য যে প্রতিষ্ঠানের হাত ধরে আমি আজ বাপ্পি চৌধুরী যে মানুষটির জন্য আমি আজ নায়ক সেই আজিজ ভাইয়ের সাথে ঝগড়াও করেছি। যে মানুষটা আমার চলচ্চিত্রের সবচেয়ে কাছের ছিল তার থেকে দূরে সরে এলাম। কিন্তু এটা করে কী পেলাম? সিনেমার অবস্থা কী উন্নত হয়েছে? সিনেমা নির্মাণ কী বেড়েছে? নতুন বছর শুরু হলো আমদানি করা বিদেশি ছবি মুক্তি দিয়ে। যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত ছবি হলেও তো আমাদের দেশের অনেক কলাকুশলী ও নায়ক নায়িকা কাজের সুযোগ পেতো। কিন্তু এখন তো আমদানি করে নিয়মিত ছবি মুক্তি দেয়া হচ্ছে। যে ছবিগুলোতে আমাদের কেউ কাজের সুযোগ পাচ্ছে না। হিতে তো বিপরীতই হলো। অথচ দেশের সিনেমার উন্নয়ন হোক এটা আজিজ ভাই সবসময় চেয়েছেন। সিনেমা ডিজিটালাইজেশনের পথ বদলে দিয়েছেন। সরি আজিজ ভাই আপনাকে ভুল বুঝার জন্য। again I m sorry..’

বাপ্পীর ভুল বোঝা প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে দেশ রূপান্তরকে আব্দুল আজিজ বলেন, ‘শুধু বাপ্পী নয়, রিয়াজ, ফেরদৌস, পপিসহ আরও অনেকে আমাকে তাদের ভুল বোঝার কথা বলেছেন। পারসোনালি সরি বলেছেন। আমিও তাদের বলেছি এসব আমি মনে রাখতে  চাই না। আমিও তাদের ক্ষমা করে দিয়েছি।’

তবে ক্ষমা চাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন ফেরদৌস ও রিয়াজ।

দেশ রূপান্তরকে ফেরদৌস বলেন, ‘না না কখনোই আমি সরি বলিনি। আমি কারও কাছে সরি বলিনি। সরি বলার প্রশ্নই উঠে না। আর আমি কখনোই যৌথ প্রযোজনার বিরুদ্ধে আন্দোলন করিনি। সে সময় আমি কথা বলেছি যৌথ প্রযোজনায় যে অনিয়ম হয় তার বিরুদ্ধে। অনিয়মের বিরুদ্ধে আমার অবস্থান ছিল।’

ফেরদৌস আরও বলেন, ‘আব্দুল আজিজ বলেছেন আমরা ভুল বুঝতে পেরেছি। ভুল বোঝার এখানে কোনো কারণ নেই। তখনকার অবস্থান থেকে আমি সরে আসিনি। আমি তখনো চেয়েছি নিয়ম মেনে যৌথ প্রযোজনার ছবি নির্মিত হোক। এখনো চাই নিয়ম মেনে ছবি নির্মিত হোক। কেউ যেন টাউটারি, বাটপারি করে ছবি নির্মাণ করতে না পারে সেই বিষয়ে তখন কথা বলেছি। আমার অবস্থান এখনো একই আছে।’

আব্দুল আজিজের প্রসঙ্গ টেনে ফেরদৌস বলেন, ‘আব্দুল আজিজ আমার ভালো বন্ধু। তাদের সঙ্গে আমি দুটি ছবিও করেছি। তিনি ভালো ভালো ছবি বানান । সেটাকে আমি সাপোর্ট করি। সে যদি কখনো ভণ্ডামি করে তখন সেটা সাপোর্ট করব না।’

যৌথ নীতিমালা প্রসঙ্গে ফেরদৌস বলেন, ‘সরকার যৌথ প্রযোজনার যে নিয়ম করবেন সেই নিয়মেই সবাইকে ছবি বানাতে হবে। এটা তো আর আজিজের জন্য একা না। একা সবার জন্যই প্রযোজ্য। দিন শেষে আমি চাই, নিয়ম মেনে ছবি হোক।’

এদিকে রিয়াজ বলেন, ‘ভুল বোঝা বা ভুল স্বীকারের প্রশ্নই ওঠে না। সরি বলারও কিছু নেই। আমরা যৌথ প্রযোজনার অনিয়মের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি। আন্দোলনের প্রেক্ষিতে সরকার নতুন নীতিমালা করেছে। এতে ভুল বোঝার প্রসঙ্গ আসছে কেন?’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ভুল স্বীকার করেছি, এমন কথা যদি আব্দুল আজিজ বলে থাকেন তাহলে ভুল বলেছেন। আমরা কখনোই তাকে গিয়ে বলিনি যে আমরা ভুল করেছিলাম।’

২০১৭ সালের ১৮ জুন যৌথ প্রযোজনার নামে ‘প্রতারণা’ বন্ধের দাবি জানিয়ে ১৮ সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত ‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিবার’এর ব্যানারে- মাঠে নামেন বাংলাদেশের অভিনয়শিল্পী, পরিচালক, প্রযোজক ও কলাকুশলীরা। নেতৃত্বে ছিলেন বর্তমান সংসদ সদস্য চিত্রনায়ক ফারুক।


Leave a reply