![রায়হান রাফী-শাকিব খান জুটির ‘তাণ্ডব’ সম্পর্কে যা জানা গেল](https://i0.wp.com/bmdb.co/wp-content/uploads/2024/06/shakib_khan_raihan_rafi_bmdb_image.jpg?resize=150%2C150&ssl=1)
আমার আসলেই ‘লইজ্জা’ লাগে…
শিরোনামের কথাগুলো নির্মাতা ও অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওনের। বলছিলেন হুমায়ূন আহমেদের গান নিয়ে প্রকাশিত বইয়ে অটোগ্রাফ দেওয়া প্রসঙ্গে। ফেসবুকের এক দীর্ঘ স্ট্যাটাসে মঙ্গলবার নিজের লেখালেখির কথাও জানান তিনি।
আসুন “আমার আসলেই ‘লইজ্জা’ লাগে…” পুরোটাই পড়ে নেওয়া যাক—
আমি যদি ‘হুমায়ূন আহমেদ’ এর বউ না হইয়াই এই বই লিখতাম, তাহলে হয়তো লইজ্জা লাগত না…
আমার চেয়েও বেশি লইজ্জা আমার প্রকাশকের… তিনি অত্যন্ত ভালো মানুষ… মাটির মানুষ… (খাঁটি এটেল মাটি দিয়ে তৈরি)…
১৩ নভেম্বর ২০১৬, হুমায়ূনের জন্মদিনে এই বইখানা বের করবার জন্য যে পরিমাণ সূক্ষ্ম যন্ত্রণা তিনি আমাকে দিয়াছেন, তা ভুলবার নয়… সকাল হইতেই আমার বাসার ড্রয়িং রুমে এসে উপস্থিত…
আমি : কেমন আছেন সেলিম ভাই?
প্রকাশক : না মানে, আমি বইয়ের জন্য তাড়া দিতে আসি নাই, শুধু ধ্রুব’র করা কভারটা দেখাতে আসছি…
আমি : বাহ সুন্দর কভার… কিন্তু ভাই আমি তো লেখক না, চাইলেই লিখে ফেলতে পারি না… তারপরও চেষ্টা করবো… যদি কিছু হয় আপনাকে জানাবো…
প্রকাশক : জি। আমি তাইলে যাই।
আমি : আচ্ছা।
পরদিন একটু বেলা করে ঘুম থেকে উঠে শুনে ড্রয়িং রুমে উনি বসা…
আমি কিঞ্চিত অস্বস্তি নিয়ে গেলাম…
আমি : হায় হায়! এখনো তো এক লাইনও লিখি নাই..!
প্রকাশক : না না। লেখার জন্য তো আসি নাই। হুমায়ূন স্যারের লেখা কয়েকটা গান নিয়ে আসছি। যদি আপনার দরকার হয়…
পরদিন সকালে বাসার মেয়েটা কপালে হাত দিয়ে আস্তে করে ডাকতেই ধরফরিয়ে উঠলাম…
আমি : সেলিম সাহেব কি ড্রয়িং রুমে..?
মেয়ে : জি আপা। আমি বলছি আপনি সারারাত ঘুমান নাই। এখন ঘুমাইতেসেন, উনি বলে কুনো অসুবিধা নাই। আমি আছি।
আমি ড্রয়িং রুমে যেতেই…
প্রকাশক : লেখার জন্য আসি নাই কিন্তু ভাবি… ধ্রুব’র ওইদিনের কভারটা পছন্দ হয় নাই, তাই আরেকটা করায়ে নিয়ে আসছি…
রাতের বেলা হুমায়ূন এর গানগুলো নিয়ে বসলাম… মাথার মধ্যে গানগুলো লেখার পেছনের গল্পগুলো কিলবিল কিলবিল করছে… পরবর্তী কয়েকটা দিন অন্য স-ব কাজ ফেলে বইটা শেষ করলাম…
বইমেলা’র শুরুতে দুই একজন বলল ফেসবুকে বইয়ের ছবি দিতে… দিলাম না… কারণ আমার ‘লইজ্জা’ লাগে…
প্রকাশক আমার প্রধান সহকারী পরিচালক ইব্রাহিমকে বললেন “ভাবি কে অনুরোধ করে মেলায় নিয়ে আসেন। লোকজন অটোগ্রাফসহ বই চায়।”
আমি মেলায় গিয়েও উনার প্যাভিলিয়নে যেতে পারলাম না… কারণ আমার ‘লইজ্জা’ লাগে…
দ্বিতীয়দিন মেলায় গিয়ে সাহস করে কাকলী প্রকাশনীর প্যাভিলিয়নে গেলাম…
প্রকাশক : স্লামালিকুম… (উসখুস করছেন।)
আমি : ওয়ালাইকুম আস সালাম। ভালো আছেন..?
প্রকাশক : জি ভালো। (অস্বস্তি এবং হাসি)
আমি : (পাঁচগুণ অস্বস্তি এবং বোকার হাসি…)
এরই মধ্যে আমাকে উদ্ধার করে নিজের প্যাভিলিয়নে নিয়ে গেলেন অন্বেষা’র শাহাদাত ভাই… আমি উনার ওখানে বসে মনের সুখে কোনো অস্বস্তি ছাড়াই হুমায়ূন আহমেদের বইয়ে অটোগ্রাফ দিতে থাকলাম…
নিজের যে কয়টা বই হাতে আসলো, কিছুই লিখতে পারলাম না… কারণ আমার ‘লইজ্জা’ লাগে…
আড়াই ঘণ্টা মেলায় সময় কাটিয়ে বাসায় ফিরবার ঠিক কয়েক মিনিট আগে জানলাম, অনেকবার আশপাশ দিয়ে ঘুরে গেলেও নিজের প্যাভিলিয়নে আমাকে বসতে বলতে পারেননি প্রকাশক সেলিম ভাই… কারণ উনার ‘লইজ্জা’ লাগে…