Select Page

‘ঢাকা অ্যাটাক’ প্রযোজকের ক্ষমা প্রার্থনা, চলচ্চিত্র পুরস্কার থেকে ‘বাদ পড়ছেন’ সেই ভারতীয়

‘ঢাকা অ্যাটাক’ প্রযোজকের ক্ষমা প্রার্থনা, চলচ্চিত্র পুরস্কার থেকে ‘বাদ পড়ছেন’ সেই ভারতীয়

বৃহস্পতিবার তথ্য মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে ২০১৭ সালের ‘ঢাকা অ্যাটাক’ চলচ্চিত্রের জন্য ‘সেরা সম্পাদক’ হিসেবে মো. কালামের নাম ঘোষণা করা হয়, যিনি ভারতীয় নাগরিক।কেবল বাংলাদেশি নাগরিকরাই জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের জন্য বিবেচিত হওয়ার নিয়ম থাকলেও পুরস্কারজয়ীদের তালিকায় ভারতীয় নাগরিকের নাম আসায় সমালোচনা শুরু হয়।

এরপর পুরস্কারের আবেদনে ‘ভুল করে’ বাংলাদেশি পরিচয় দিয়ে ভারতীয় নাগরিকের নাম পাঠানোর কথা স্বীকার করে ক্ষমা চেয়ে জুরি বোর্ডকে আলাদাভাবে চিঠি দিয়েছেন ‘ঢাকা অ্যাটাক’-এর প্রযোজক সানী সানোয়ার ও পরিবেশক জাহিদ হাসান অভি।

চিঠিতে অভি লিখেছেন, “প্রযোজক স্বাক্ষরিত প্রত্যয়নে ২০১৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ঢাকা অ্যাটাক’ চলচ্চিত্রটিতে মো. কালাম সম্পাদনার কাজ করেন, যিনি বাংলাদেশি নন। কিন্তু ভুল বশতঃ তার নাম লিপিবদ্ধ হয় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৭ এর আবেদনে। অনিচ্ছাকৃত এই ভুলের জন্যে আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি।”
চলচ্চিত্রটির অন্যান্য ভারতীয় কলাকুশলীর ক্ষেত্রে তাদের সঠিক জাতীয়তা উল্লেখ করা হলেও কেবল সম্পাদনার ক্ষেত্রে ‘অসাবধানতা বশত’ ভুলটি হয়েছে বলে স্বীকার করেন অভি।

চিঠিতে তিনি লিখেছেন, “শুধুমাত্র বাংলাদেশের ঢাকার ঠিকানা তার নামের পাশে থাকার কারণে এই ভুলের সৃষ্টি হয়েছে। আমরা আবারও আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি এবং এ জন্যে সার্বিক সহযোগিতা করবার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।”

কালামের ছবিটি তার ফেসবুক থেকে নেওয়াকালামের ছবিটি তার ফেসবুক থেকে নেওয়া’ঢাকা অ্যাটাক’ সিনেমার প্রযোজক সানী সানোয়ার এখন আছেন ঢাকার বাইরে। শুক্রবার দুপুরে তিনিও জুরি বোর্ডকে ইমেইল করে ভুল স্বীকার করেছেন।

এদিকে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের জুরি বোর্ডের সভাপতি ও তথ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন ও চলচ্চিত্র) মো. মিজান উল আলম শুক্রবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “একজন বিদেশি নাগরিক কোনোক্রমেই জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাবেন না। তাকে অবশ্যই বাদ দেওয়া হবে।

“তাকে বাদ দিয়ে তার জায়গায় নতুন কাউকে নেওয়া হতে পারে আবার সেই জায়গা শূন্যও থাকতে পারে। এটা তথ্য মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করছে।”

চলচ্চিত্রটির প্রযোজক কালামের আসল পরিচয় গোপন করে ‘বাংলাদেশি’ হিসেবে পুরস্কারের জন্য আবেদন করেছিলেন বলে জানান জুরি বোর্ডের সদস্য মুশফিকুর রহমান গুলজার।তিনি বলেন, “আমরা কোনো বিদেশিকে দিইনি। ওখানে ফরমে উল্লেখ থাকে কে কোন দেশের। প্রযোজক তার পরিচয় গোপন করেছে। সে বলেছে, সে বাংলাদেশের নাগরিক। যেহেতু সে বাংলাদেশের ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর ব্যবহার করেছে সেহেতু আমরা ধরে নিয়েছি, সে বাংলাদেশের নাগরিক।

“কিন্তু বাস্তবিক পক্ষে সে বাংলাদেশের নাগরিক না। সে ভারতীয় নাগরিক হয়ে বাংলাদেশের ঠিকানা ব্যবহার করায় আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”

কালামের জায়গায় নতুন কাউকে পুরস্কার দেওয়া হবে নাকি ২০১৭ সালের পুরস্কারে ‘সেরা সম্পাদক’ ক্যাটাগরিই বাতিল করা হবে, তা তথ্য মন্ত্রণালয়ের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান জুরি বোর্ড সভাপতি মিজান উল আলম।

এর আগে ২০১৬ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ‘নিয়তি’ চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ নৃত্য পরিচালক হিসেবে হাবিবের নাম ঘোষণা করা হলেও তিনি সেই চলচ্চিত্রে কাজই করেননি। পরে সমালোচনার মুখে হাবিবকে বাদ দেওয়া হয়েছিল। হাবিবের জায়গায় নতুন আর কাউকে পুরস্কার না দিয়ে সেই ক্যাটাগরিই বাতিল করা হয়েছিল।


মন্তব্য করুন