তিনবার জাতীয় পুরস্কার-জয়ী পপিকে পাঠানো হয় সদস্য পদ বাতিলের চিঠি!
তিন-তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-জয়ী সাদিকা পারভীন পপি বছর খানেক ধরে একদম লাপাত্তা। এর মধ্যে পপির বিয়ে ও দুইবার সন্তান হওয়ার খবরও ছড়িয়েছে। কিন্তু সেসব বিষয়ে বলতে মিডিয়ার সামনে আসেননি ‘চারিদিকে শত্রু’ অভিনেত্রী।
নানান গুঞ্জনের মাঝে শিল্পী সমিতির নির্বাচনের ঠিক দুই দিন আগে বুধবার ভিডিও বার্তা নিয়ে হঠাৎ আগমন পপির। সেই বার্তা আছে অনেক অভিযোগ। তার চেয়ে বড় কথা, অনেক দিন পর পপিকে দেখে খুশি ও স্বস্তি প্রকাশ করেছেন অনুরাগীরা।
নিজের অন্তর্ধান হওয়ার পেছনের কারণ বলতে গিয়ে পপি বলেন, ‘আমার মতো শিল্পী যে তিন তিনবার ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে, এই আমার সদস্য পদ বাতিলের চিঠি দেওয়া হয়েছে। এত দিন ধরে কাজ করার পর এটা একজন শিল্পীর জন্য কতটুকু অপমানের আমি বুঝতে পারি। আমার মতো শিল্পীরা যারা ভিকটিম হয়েছেন, ১৮৪ জন শিল্পী যারা আছেন আমি তাঁদের কষ্টটাও বুঝতে পারি। তাঁরাও আমার কষ্টটা বুঝতে পারেন। এই নোংরামির জন্য, আমার মানসম্মানের ভয় ছিল, আমার জানের ভয় ছিল। সব কিছু মিলে আমি নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছি।’
ভিডিওর প্রথমেই বলেন, ‘শিল্পীবৃন্দ ও আমার যারা সহকর্মী আছেন তাঁদের সকলকে জানাচ্ছি অনেক অনেক শুভেচ্ছা, ভালোবাসা এবং সালাম। আশা করি যে যেখানে আছেন, ভালো আছেন, সুস্থ আছেন। আর এই করোনার মধ্যে সুস্থ থাকাটা জরুরি। সর্বপ্রথম আমাদের শ্রদ্ধেয় বড় ভাই একুশে পদকসহ একাধিক পদকপ্রাপ্ত ও নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের একক পৃষ্ঠপোষক, জনগণের কাছে পরীক্ষিত সৈনিক ইলিয়াস কাঞ্চন, যিনি একজন সফল অভিনেতা-প্রযোজক ও পরিচালক। সঙ্গে আছেন আমার বোন নিপুণ, যার মনটা অনেক বড়। আরো আছেন আমার বন্ধু, আমার কলিগ, আমার হিরো রিয়াজ।’
কাঞ্চন-নিপুণ প্যানেলের প্রতি শুভ কামনা জানিয়ে জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত এই অভিনেত্রী বলেন, ‘ভেবেছিলাম আর কখনোই ক্যামেরার সামনে আসব না। একজন শিল্পী হিসেবে দায়বদ্ধতা থেকে কিছু কথা না বললেই নয়। দীর্ঘ ২৬ বছর এই ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করার চেষ্টা করেছি এবং করেছি। দেশে-বিদেশে বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করার জন্য অনেক কাজ করেছি। তিন তিনবার ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড পেয়েছি। আজকে অনেক কষ্ট নিয়ে কথা বলতে এসেছি। আপনাদের অনেকের প্রশ্ন, আমি কোথায়? আমি আছি, আছি আপনাদের মাঝে। হয়তো ভাগ্যে থাকলে ফিরব আবারও কাজে।’
নিজেকে ভিকটিম দাবি করে জায়েদ খানকে উদ্দেশ্য করে পপি বলেন, ‘বর্তমান সমিতির একটিমাত্র ব্যক্তির কারণে, তার পলিটিকস, তার নোংরামি এবং অনেক রকমের অপকর্মে অসহযোগিতা করার কারণে আমাকে বারবার অপমানিত হতে হয়েছে। শুধু আমি না, রিয়াজ, ফেরদৌস, পূর্ণিমা, আমাদের সকলকে ব্যবহার করা হয়েছে। আমাদের কাঁধে বন্দুক রেখে সে এই চেয়ারটিতে বসেছে এবং বিভিন্ন রকম অপকর্ম করার চেষ্টা করেছে, যেখানে আমি বা আমরা সায় দিইনি। যার কারণে আজকে আমি ভিকটিম। আমাকে বারবার অপমানিত হতে হয়েছে।’
ক্যামেরার সামনে ফেরার আশাবাদ জানিয়ে অভিনেত্রী বলেন, ‘আমার সদস্য পদ বাতিলের চিঠিটি এখনো আছে। আমি নিজেকে সরিয়েছি নিয়েছি আপনাদের কাছ থেকে এই নোংরা পরিবেশ থেকে। যদি পরিবেশ কখনো ভালো হয় তবে ফিরব। এই নোংরা মানুষগুলো যদি সরে যায় তখনই ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করব।’
জায়েদ খানকে ইঙ্গিত করে ভোটারদের উদ্দেশে পপি আরো বলেন, ‘যে ভুলটা আমরা করেছি, এবারের ইলেকশনে আপনারা সেই ভুলটা করবেন না। সঠিক মানুষ পছন্দ করে ভোটটা দেবেন, যেন আমাদের চলচ্চিত্র বাঁচে।’